কৃষকদের হয়ে মুখ খুললেন কংগ্রেস সহ সভাপতি। —ফাইল চিত্র।
কৃষক খাটিয়া নিলে ‘চোর’, বিজয় মাল্য কোটি কোটি টাকা নিয়ে পালালে হন ‘বাকিদার’।
প্রথম দিনের ধাক্কার পর ঘুরে দাঁড়ালেন রাহুল গাঁধী।
প্রায় এক মাসের যাত্রার দ্বিতীয় দিনে আজও হয়েছে ‘খাট-সভা’। কিন্তু আজ আগেভাগে সকলকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল, সভা শেষের পর কেউ খাটিয়া নিয়ে পালাবেন না। খোলা মাঠে না করে চারদিক ঘিরে রাখা হয়েছিল পর্দা দিয়ে। প্রবেশ ও বেরোনোর পথ রাখা হয়েছিল নির্দিষ্ট করে। ব্যবস্থা হয়েছিল পাহারাদারের, যাতে কোনও মতেই দ্বিতীয় দিনে আর খাটিয়া লুঠের মতো ঘটনা না ঘটতে পারে।
গোটা ঘটনার নতুন মোড় দিতে রাহুল নিজেও আজ ঘটনার অভিমুখ নরেন্দ্র মোদী সরকারের দিকে ঘুরিয়ে দিতে চান। গত দু’দিনে যে-নরেন্দ্র মোদী তাঁর আক্রমণের লক্ষ্যে থেকে এসেছেন। বিজয় মাল্যর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বিঁধেছেন মোদীকেই। বোঝাতে চেয়েছেন, গরিব কৃষকদের উপেক্ষা করছেন প্রধানমন্ত্রী। যাবতীয় ছাড় শুধু বড় বড় শিল্পপতিদেরই। শুধু পথ চলতে সাংবাদিকদেরই নন, টুইট করেও একই কথা জানিয়েছেন। ঘটা করে আজকের খাট-সভার ছবিও পোস্ট করেছেন টুইটে।
কংগ্রেস সূত্রের মতে, প্রথম দিনেই যে ভাবে খাটিয়া লুঠ হয়েছে, তা অনেকেই শুভ লক্ষণ বলে মানেন না। কিন্তু কালকের এই ঘটনার পরেই রাহুল গাঁধীর কাছ থেকে স্পষ্ট নির্দেশ এসেছে, প্রতিটি খাট-সভার আগে স্থানীয় মানুষদের পাখি পরানোর মতো বলে দিতে হবে, যাতে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। এতে তাঁর সফরের আসল লক্ষ্যই হারিয়ে যাচ্ছে। তিনি যা বলছেন, সেটিই প্রচারের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে হবে। তার পরেই আজ থেকে নেওয়া হয় কড়া সতর্কতা।
রাহুল আজ নিজের যাত্রাপথে বিভিন্ন হাসপাতালে যান। যান কৃষকের ঘরেও। সেখানে বসে খোঁজখবর নেন কৃষকদের সমস্যার। তার পরেই প্রধানমন্ত্রীকে তোপ দেগে বলতে থাকেন, ইউপিএ আমলে কৃষকদের ৭০ হাজার কোটি টাকার ঋণ মাফ করা হয়েছিল। নরেন্দ্র মোদীও সেটি করতে পারেন। কিন্তু লোকসভা ভোটের আগে তিনি কৃষকদের সমস্যার সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিলেও ক্ষমতায় আসার পর কৃষকদের তিনি ভুলে গিয়েছেন। শুধুমাত্র সুট-বুটের সরকার চালাচ্ছেন। বড় বড় শিল্পপতিদের ছাড় দিচ্ছেন।
বিজেপি নেতারা বুঝতে পারছেন, সাংগঠনিক ভাবে উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেস দুবর্ল হলেও যে ভাবে রাহুল ধীরে ধীরে আক্রমণাত্মক হচ্ছেন, তার পর তাঁকে গুরুত্ব না দিয়ে উপায় নেই। কিন্তু রাহুল যে কৃষকদের ঋণ-মাফের টোপ দিচ্ছেন, তাতে আখেরে ক্ষতি হবে আম কৃষকেরই। কারণ, কৃষি ঋণ মাফ রাহুলের পক্ষ থেকে ভাল রাজনীতি হতে পারে, কিন্তু কোনও ভাবে এটি ভাল অর্থনীতি নয়। কৃষকদের সাবলম্বী করা মোদী সরকারের লক্ষ্য। তাঁরা নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে ঋণ নেবেন এবং তা পরিশোধ করবেন, সেটিই ভাল অর্থনীতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy