Advertisement
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Rahul Gandhi

কর্মীরাই সিংহ, রাহুলের বার্তায় স্বস্তি অধীরদের

রাহুল গান্ধীর বার্তা, ‘‘কংগ্রেস কর্মীরাই পশুরাজ সিংহ! তাঁরা যে লড়াই লড়ছেন, তাকে কুর্নিশ জানাই। কর্মীদের রক্ষা করাই দল হিসেবে আমাদের প্রধান দায়িত্ব।’’

Rahul Gandhi.

রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।

সন্দীপন চক্রবর্তী
পটনা শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২৩ ০৯:৩৩
Share: Save:

তাঁরা লড়ছেন ‘ভারত জোড়ো’র আদর্শ নিয়ে। আরএসএস-বিজেপির নীতি ‘ভারত তোড়ো’। দু’পক্ষের মতাদর্শগত লড়াই বোঝাতে এই কথা বলেই থাকেন তিনি। এ বারও বললেন। সেই সঙ্গেই দলের জন্য রাহুল গান্ধীর বার্তা, ‘‘কংগ্রেস কর্মীরাই পশুরাজ সিংহ! তাঁরা যে লড়াই লড়ছেন, তাকে কুর্নিশ জানাই। কর্মীদের রক্ষা করাই দল হিসেবে আমাদের প্রধান দায়িত্ব।’’

কংগ্রেস কর্মীদের গুরুত্ব দেওয়ার কথা রাহুল আজ পটনায় দাঁড়িয়ে বললেন। তবে বার্তা গেল গোটা দেশেই। কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, রাজ্যে রাজ্যে কর্মীদের লড়াই এবং তাঁদের মনোভাবকে অগ্রাহ্য করে দল যে কিছু করবে না, সেই নীতিই উঠে এসেছে রাহুলের এই বক্তব্যে।

বাংলায় এখন পঞ্চায়েত নির্বাচন। কয়েক দিন আগেই কংগ্রেস প্রার্থীদের প্রতীকের ফর্ম শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ছিনিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠায় মুর্শিদাবাদের বড়ঞায় রাতভর দলের কর্মীদের নিয়ে ধর্নায় বসেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনি বলছেন, ‘‘রাহুল সব সময়ে ‘পার্টিম্যান’। দলের কর্মীদের গুরুত্ব দেন। এটাই তো আমাদের কাজ। যাদের হাতে অত্যাচারিত হচ্ছেন কর্মীরা, সেই অত্যাচারীর সঙ্গে দলের নেতাদের সমঝোতা তাঁরা দেখতে চান না।’’ রাজ্যে তৃণমূল-বিরোধিতার পথ থেকে তাঁরা সরছেন না বলে আগেই জানিয়েছেন প্রদেশ নেতৃত্ব। রাহুলের কথার সূত্র ধরে অধীর ফের দাবি করেছেন, ‘‘তৃণমূল এখন সর্বভারতীয় থেকে আঞ্চলিক দল হয়ে গিয়ে জাতীয় স্তরে গুরুত্ব বাড়াতে চাইছে, কংগ্রেসের পাশে থাকছে। যাতে রাজ্যে কংগ্রেস বা বিরোধীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। কিন্তু এর মধ্যে আমরা নেই!’’

পটনার বৈঠকে এ দিন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসের প্রতি ‘নরম’ মনোভাবই দেখিয়েছেন। রাজ্যে কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে যতই অসন্তোষ থাক, বৈঠকে সেই প্রসঙ্গ তোলেননি। মধ্যাহ্নভোজের সময়ে ঘুরে ঘুরে তদারকি করেছেন, রাহুলের প্লেটে আরও খাবার দিতে বলেছেন। বৈঠকের পরেও রাহুল এবং সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির নাম করে সম্বোধন করেছেন।

পঞ্চায়েতের বাজারে বিজেপি প্রচার শুরু করেছে, বাংলায় লড়াই হচ্ছে আর পটনায় কংগ্রেস এবং সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব মমতার সঙ্গে এক টেবিলে বসছেন। তার মানে সিপিএম, কংগ্রেস আসলে তৃণমূলেরই দোসর। বাংলায় প্রকৃত বিরোধী বিজেপিই। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী পটনার বৈঠককে ‘দুর্নীতিগ্রস্তদের পারিবারিক মিলন উৎসব’ বলে কটাক্ষ করেছেন। ইয়েচুরি অবশ্য পাল্টা বলছেন, ‘‘বিজেপির জানা উচিত, এই বৈঠকটা ওদের হারানোর লক্ষ্যেই ডাকা হয়েছিল! ওদের তাই গায়ে লাগছে। ঠিক হয়েছিল, ২০২৪ সালের ভোট নিয়ে আলোচনা হবে। রাজ্যের অন্য প্রসঙ্গ এই আসরে আমরা কেউই তুলিনি।’’

বিরোধী শিবিরের মহা-বৈঠক শুরুর আগে এ দিন পটনার সদাকত আশ্রমে বিহার প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে দলের কর্মিসভায় বক্তৃতা করেছেন রাহুল। সেখানেই কর্মীদের রক্ষা করার বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি তাঁর দাবি, ‘‘কর্নাটকে ঘুরে ঘুরে বিজেপি নেতারা বড় বড় ভাষণ দিয়েছিলেন। ফল কী হয়েছিল, সবাই দেখেছেন। এখানে বলে যাচ্ছি, তেলঙ্গানা, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়েও বিজেপি দাঁড়াতে পারবে না!’’ রাহুলের সঙ্গেই ছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল। প্রদেশ দফতর চত্বরে অম্বেডকরের মূর্তির উদ্বোধনও করেছেন রাহুল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rahul Gandhi Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE