আগামী বছর রাজ্য বিধানসভা ভোটের আগে কেরলে দলের সংগঠন নিয়ে এমনিতেই ক্ষুব্ধ রাহুল গান্ধী। তিরুঅনন্তপুরমের কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরের সাম্প্রতিক মন্তব্যে দলের বেহাল দশা আরও প্রকট হয়েছে। এই অবস্থায় শুক্রবার দিল্লির ইন্দিরা ভবনে কেরলের কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে এক বৈঠকে দলের সব স্তরের নেতা-কর্মীকে রীতিমতো কড়া বার্তা দিলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা। তাঁর উপস্থিতিতেই রাজ্যস্তরের নেতাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, দলীয় লাইনের বাইরে গিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সিদ্ধান্ত না মানলে কড়া ব্যবস্থারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
লোকসভা ভোটে কেরলে কংগ্রেস ভাল ফল করলেও বিধানসভা ভোটের সাফল্য নিয়ে দলের অন্দরেই সংশয় তৈরি হয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটেও কেরলে কংগ্রেস ভাল করেছিল। কিন্তু দু’বছর পরে বিধানসভা ভোটে সিপিএমের নেতৃত্বাধীন জোটের কাছে হারতে হয় কংগ্রেসের জোটকে। পরপর দু’বার রাজ্যে সরকার গড়ে কেরলে সে বার দীর্ঘদিনের রীতি ভেঙেছিল সিপিএম। তবে এ বারে সিপিএম জোট নানা দিক থেকে চাপে রয়েছে। পাশাপাশি রাজ্যে আরএসএস-এর শক্তিও তুলনামূলক বেড়েছে। এই অবস্থায় কেরলের বাম সরকারকে হারিয়ে ক্ষমতায় ফিরতে মরিয়া কংগ্রেস। কিন্তু দলের অন্তর্কলহ তাদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
শুক্রবার দিল্লির কেরলের প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসেন রাহুল গান্ধী, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে, ওয়েনাড়ের সাংসদ প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা, এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল, এআইসিসি-র তরফে কেরলের ভারপ্রাপ্ত দীপা দাশমুন্সি-সহ শীর্ষ কংগ্রেস নেতারা। এই বৈঠকে হাজির ছিলেন তিরুঅনন্তপুরমের সাংসদ শশী তারুরও। ক’দিন আগেই রাজ্যের বাম সরকারের প্রশংসা করে তাঁর একটি নিবন্ধ ঘিরে তীব্র অস্বস্তিতে পড়েছে কংগ্রেস। ওই বৈঠকে শশীর সামনেই কেরলের কংগ্রেস নেতাদের সাবধান করে দিয়ে বলা হয়, তাঁরা যেন দলীয় লাইনের বাইরে গিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য না করেন। রাজনৈতিক কৌশল রচনার ক্ষেত্রেও দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশ মেনেই এগোতে বলা হয়েছে।
রাহুল পরে বলেন, ‘‘আমরা জানি, মানুষ বদল চাইছেন। সে কারণে আমাদের দলের কৌশল রচনা বা পদক্ষেপের ক্ষেত্রে খুবই সতর্ক থাকতে হবে। আমরা এমন কিছু করব না, যা দলের নীতির বিরুদ্ধে যেতে পারে।’’ দীপা বলেন, ‘‘কোনও ভাবেই কেরলের সাধারণ মানুষকে অসম্মান করতে পারি না। কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব এই বিষয়টি অতি স্পষ্ট ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন। এই নির্দেশ কেউ অমান্য করলে কড়া ব্যবস্থানেওয়া হবে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)