(বাঁ দিক থেকে) রাহুল গান্ধী, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী এবং নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র। ছবি: পিটিআই।
প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা বারাণসী থেকে ভোটে লড়লে ২ থেকে ৩ লক্ষ ভোটে নরেন্দ্র মোদীকে হারাতেন বলে দাবি করলেন রাহুল গান্ধী। গান্ধী পরিবারের বিরুদ্ধে ‘পরিবারবাদ’ নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর লাগাতার নিশানার জবাবেও পাল্টা আক্রমণে গেলেন তিনি। মোদী সরকারের নতুন মন্ত্রিসভায় ২০ জন নেতা-মন্ত্রীর ছেলেকে মন্ত্রী করার দিকে আঙুল তুলে রাহুলের কটাক্ষ, ‘‘কথায় ও কাজে ফারাকের নামই নরেন্দ্র মোদী!’’
লোকসভা ভোটে রায়বরেলীতে রাহুল গান্ধীর জয় ও অমেঠীতে স্মৃতি ইরানিকে হারিয়ে কংগ্রেসের কিশোরীলাল শর্মার জয়ের জন্য দুই লোকসভা কেন্দ্রের মানুষকে ধন্যবাদ জানাতে মঙ্গলবার রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা রায়বরেলী গিয়েছিলেন। বুধবার রাহুল কেরলের ওয়েনাড়ের মানুষকেও ধন্যবাদ জানাতে যাবেন।
রায়বরেলী ও ওয়েনাড়— দুই লোকসভা কেন্দ্র থেকে জেতার পরে রাহুল কোনটি নিজের হাতে রাখবেন, আর কোনটি ছেড়ে দেবেন, তা এখনও স্পষ্ট করেননি। এর মধ্যে রাহুল যে আসন থেকে ইস্তফা দেবেন, সেখানকার উপনির্বাচনে প্রিয়ঙ্কাকে প্রার্থী করা হতে পারে বলে কংগ্রেস শিবিরে জল্পনা চলছে। এই জল্পনা উস্কে দিয়ে রাহুল রায়বরেলীতে তাঁর জয়ের কৃতিত্ব প্রিয়ঙ্কাকে দিয়ে বলেছেন, ‘‘দিনে মাত্র দু’ঘণ্টা ঘুমিয়ে আমার বোন রায়বরেলীতে পরিশ্রম করেছে।’’ এর পরে প্রিয়ঙ্কাকে জড়িয়ে ধরে গালে চুমু খেয়ে রাহুল ইঙ্গিতপূর্ণ হাসি দিয়ে বলেন, ‘‘আমার একটা আইডিয়া আছে। সেটা আপনাদের পরে বলব।’’ রায়বরেলী নিজের হাতে রাখতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়ে রাহুল বলেন, ‘‘শীঘ্রই উন্নয়ন, ঐক্য ও মহব্বতের সঙ্কল্প নিয়ে আলোচনা করতে ফের এখানে আসব।’’
লোকসভা ভোটের ফল নিয়ে রাহুল বলেন, অমেঠী, রায়বরেলী-সহ উত্তরপ্রদেশ দেশকে রাস্তা দেখিয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এখন সংবিধান তুলে মাথায় ঠুকতে হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের মানুষই মোদীকে এ কাজে বাধ্য করেছেন। অযোধ্যাতেও বিজেপি হেরেছে। কারণ রামমন্দিরের অনুষ্ঠানে অম্বানী-আদানি, বলিউড, ক্রিকেটাররা হাজির থাকলেও গরিব, অনগ্রসরদের সেখানে ডাকা হয়নি। আদিবাসী মহিলা রাষ্ট্রপতিকেও ডাকা হয়নি। রাহুল বলেন, ‘‘বারাণসীতে নরেন্দ্র মোদী কোনও ক্রমে বেঁচে গিয়েছেন।’’ বারাণসীতে এ বার মোদীর জয়ের ব্যবধান পাঁচ লক্ষ থেকে কমে দেড় লক্ষ হয়েছে। রাহুল বলেন, ‘‘আমার বোন প্রিয়ঙ্কা লড়লে ২ থেকে ৩ লক্ষ ভোটে মোদীকে হারতে হত।’’ মোদী নিজে অবশ্য ১৮ তারিখ বারাণসী যাচ্ছেন।
লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভাল ফলে উদ্বুদ্ধ রাহুল মোদীকে পরিবারবাদ নিয়েও পাল্টা আক্রমণ করেছেন। এত দিন মোদী কংগ্রেসের ‘পরিবারবাদ’ নিয়ে আক্রমণ করলেও রাহুল মুখ খুলতেন না। আজ রাহুল মোদী সরকারের নতুন মন্ত্রিসভায় পীযূষ গয়াল, জে পি নড্ডা থেকে এইচ ডি কুমারস্বামী, শান্তনু ঠাকুরের মতো ২০ জনের নাম তুলে ধরেছেন, যাঁরা কোনও না কোনও রাজনৈতিক নেতার পুত্র বা কন্যা। একে ‘এনডিএ মন্ত্রিসভা’র বদলে, ‘এনডিএ পরিবারসভা’ আখ্যা দিয়ে রাহুল বলেন, ‘‘প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে লড়াই, সেবা ও বলিদানের ঐতিহ্যকে ‘পরিবারবাদ’ বলা লোকেরা এখন ‘সরকারি পরিবার’কে ক্ষমতার দলিল বিলি করছে। কথায় ও কাজে এই ফারাককেই নরেন্দ্র মোদী বলে!’’
রাহুল এর আগে মোদীর পরিবারবাদ নিয়ে আক্রমণের উত্তর না দিলেও ভোটের সময় লালুপ্রসাদ বলেছিলেন, মোদীর নিজের পরিবার না থাকলে কার কী করার আছে! তার জবাবে মোদী বলেছিলেন, দেশের ১৪০ কোটি মানুষই তাঁর পরিবার। বিজেপি নেতা-কর্মীরা নেট-দুনিয়ায় নিজের নামের পাশে ‘মোদীর পরিবার’ লিখছিলেন। আজ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশের মানুষের ভোটে এনডিএ তৃতীয় বার ক্ষমতায় ফিরে রেকর্ড করেছে। সবাই যে এক পরিবার, সেই বার্তা পৌঁছে গিয়েছে। এ বার সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ‘মোদীর পরিবার’ সরানো যেতে পারে। আজ প্রধানমন্ত্রীর দফতরের ‘এক্স’ হ্যান্ডলের ‘কভার’ ছবি বদলে নরেন্দ্র মোদীর সংবিধানে মাথা ঠেকিয়ে প্রণামের ছবি দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের কটাক্ষ, ‘‘দেশের সংবিধান রক্ষাকেই রাহুল গান্ধী লোকসভা ভোটের নির্ণায়ক প্রশ্ন হিসেবে তুলে ধরেছিলেন। এ তারই প্রত্যক্ষ প্রভাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy