—ফাইল চিত্র।
‘পিএম কেয়ার্স’ তহবিলে গচ্ছিত অর্থ হস্তান্তর করা যাবে না। মঙ্গলবার তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের সেই রায় সামনে আসতেই কংগ্রেস এবং রাহুল গাঁধীকে তীব্র আক্রমণ করতে নেমে পড়লেন বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা। তাঁদের দাবি, কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে দেশবাসী যা উপার্জন করেছেন, এত দিন নিজেদের জায়গির ভেবে এসেছে গাঁধী পরিবার। নিজেদের পাপ ধুতে এখন ‘পিএম কেয়ার্স’-কে কালিমালিপ্ত করতে উঠেপড়ে লেগেছে কংগ্রেস। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রথম দিন থেকে রাহুল গাঁধী দেশকে দুর্বল করে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা।
এ দিন সুপ্রিম কোর্টের রায় সামনে আসতেই দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রথম দিন থেকে রাহুল গাঁধী দেশকে দুর্বল করে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। করোনার বিরুদ্ধে যাঁরা সামনে থেকে লড়াই করছেন, সেই সমস্ত চিকিৎসক, নার্স, সাফাইকর্মী, পুলিশকর্মীদের সম্মান জানাতে তালি বাজাতে বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তা নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করেন রাহুল গাঁধী। প্রধানমন্ত্রীর কথায় করোনাকে হারাতে গোটা দেশ প্রদীপ জ্বালালে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। প্রথম দিন থেকে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই দুর্বল করে দিতে চেয়েছেন।’’
রবিশঙ্কর প্রসাদ আরও বলেন, ‘‘বৈধ কাগজপত্র হোক বা বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে আসা অনুদান, পিএম কেয়ার্স তহবিলে সবক্ষেত্রেই স্বচ্ছতা রয়েছে। আমাদের সরকারের বিরুদ্ধে একটাও দুর্নীতির অভিযোগ নেই। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এখনও পর্যন্ত পিএম কেয়ার্স ফান্ড থেকে ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে, এর মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা খরচ করে ৫০ হাজার ভেন্টিলেটর কেনা হয়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য খরচ করা হয়েছে ১ হাজার কোটি টাকা। ১০০ কোটি টাকা গিয়েছে টিকার কাজে।’’
আরও পড়ুন: ‘পিএম কেয়ার্স’-এর অর্থ জাতীয় ত্রাণ তহবিলে হস্তান্তর করা যাবে না: সুপ্রিম কোর্ট
সুপ্রিম কোর্টের রায় সামনে আসার পর এ দিন রাহুল গাঁধীকে এক হাত নেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডাও। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘‘রাহুল গাঁধী এবং তাঁর ভাড়া করা সমাজকর্মীরা মিলে পিএম কেয়ার্স তহবিল নিয়ে সরকারকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তাঁদের সেই প্রচেষ্টা ধাক্কা খেল। এতেই বোঝা যায়, কংগ্রেস এবং তাদের সহযোগীরা যতরকম অভিসন্ধিই করুন না কেন, শেষমেশ সত্যিটা সামনে আসবেই।
The verdict by Supreme Court on PM CARES is a resounding blow to the nefarious designs of Rahul Gandhi & his band of ‘rent a cause’ activists. It shows that the truth shines despite the ill intent and malicious efforts of the Congress party and its associates.
— Jagat Prakash Nadda (@JPNadda) August 18, 2020
নড্ডার টুইট।
সনিয়া গাঁধী নেতৃত্বাধীন রাজীব গাঁধী ফাউন্ডেশন চিনের থেকে অনুদান নিয়েছে বলে এর আগেও অভিযোগ করেছিলেন রবিশঙ্কর প্রসাদ। এ দিন ফের সেই প্রসঙ্গ খুঁচিয়ে তোলেন তিনি। রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘‘আগেও বলেছি, এটা নরেন্দ্র মোদীর সরকার। আমরা সঠিক পদ্ধতি মেনে কাজ করি। পিএম কেয়ার্স আসলে সাধারণ মানুষের তহবিল। নিয়মিত এর খরচের হিসেবনিকেশ করা হয়। পিএম কেয়ার্স ওয়েবসাইটেই সেই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য রয়েছে। চাইলে সকলেই দেখতে পারেন। রাজীব গাঁধী ফাউন্ডেশনের ক্ষেত্রে বাজেটের সময়ই যেমন স্থির হয়ে যেত একটি মাত্র পরিবারের হাতে থাকা ওই সংস্থায় কত টাকা যাবে, পিএম কেয়ার্স তহবিলের ক্ষেত্রে তেমনটা হয় না। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল থেকে রাজীব গাঁধী ফাউন্ডেশনে যেমন টাকা যেত, তেমনটা হয় না এখানে।’’
আরও পড়ুন: কলকাতার জন্য আরও ৫০টি ই-বাস কিনছে রাজ্য, ৫ মন্ত্রী-আমলার জন্য ই-কার
‘পিএম কেয়ার্স’ তহবিলের অর্থ হস্তান্তরের আবেদন খারিজ করলেও, কোভিড পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য জাতীয় ত্রাণ তহবিলই যথেষ্ট বলে এ দিন জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। কিন্তু রবিশঙ্কর প্রসাদের যুক্তি, ‘‘পিএম কেয়ার্স তহবিলের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। কিন্তু বলে রাখি, ১৯৪৮ সালে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিল গড়া হয়। সেটি মূলত ভারতে আসা শরণার্থীদের জন্যই গড়া হয়েছিল। বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষেত্রেও সেখান থেকে টাকা যেত। কিন্তু পিএম কেয়ার্স শুধুমাত্র কোভিড-১৯ ভাইরাসের মোকাবিলার জন্য গড়ে তোলা হয়েছে।’’
নোভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপে দেশে অতিমারি দেখা দিলে এ বছর মার্চে প্রাইম মিনিস্টার্স সিটিজেন অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যান্ড রিলিফ ইন ইমার্জেন্সি সিচুয়েশন্স বা ‘পিএম কেয়ার্স’ তহবিল গঠন করে নরেন্দ্র মোদী সরকার। মূলত করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্যই এই তহবিল গড়া হয়। কিন্তু যে কোনও ধরনের বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য দেশে জাতীয় ত্রাণ তহবিল (এনডিআরএফ)থাকা সত্ত্বেও নতুন করে একটি তহবিল গড়া হল কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এ নিয়ে আরটিআই দাখিল করেও লাভ হয়নি। ‘পিএম কেয়ার্স’ নিয়ে কোনও তথ্যই দিতে রাজি হয়নি প্রধানমন্ত্রীর দফতর। সম্প্রতি বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছয়। ‘পিএম কেয়ার্স’ তহবিল থেকে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিলে অর্থ হস্তান্তরের আর্জি জমা পড়ে সেখানে। কিন্তু এ দিন আদালত তা খারিজ করে দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy