সদ্য গত কালই তামিলনাড়ুর প্রধান বিরোধী দল এডিএমকে-র সঙ্গে জোটের কথা ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা অমিত শাহ। আর আজই দক্ষিণী এই রাজ্যের বিজেপি সভাপতি বদল হল। কে আন্নামালাইয়ের জায়গায় এ বার তামিলনাড়ুর নতুন বিজেপি সভাপতি হচ্ছেন নয়নার নাগেন্দ্রন। তিন বারের বিধায়ক নাগেন্দ্রন আগে এডিএমকে-তেই ছিলেন। পরে দলবদল করেন। নতুন বিজেপি সভাপতি নির্বাচনের দিনেই আবার রাজ্যে এই নতুন জোটকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা শাসক ডিএমকে-র প্রধান এম কে স্ট্যালিন।
আগামী বছর দ্রাবিড়ভূমে বিধানসভা নির্বাচন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি, এখন থেকেই সেই নির্বাচনকে পাখির চোখ করতে চাইছে কেন্দ্রের শাসকদল। বিধানসভা ভোটে বিজেপিকে এত দিন পর্যন্ত বিপুল ভাবে প্রত্যাখ্যান করে এসেছেন তামিলনাড়ুর মানুষ। তাই এডিএমকে-র হাত ধরেই এ বার দক্ষিণী এই রাজ্যে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে বিজেপি।
তবে এডিএমকে-রই একটি সূত্র জানাচ্ছে, জোট হলে বিজেপি সভাপতি পদ থেকে আন্নামালাইয়ের প্রস্থান এক রকম নিশ্চিতই ছিল। কারণ প্রথম থেকেই এই জোটের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। একই সঙ্গে এডিএমকে-র প্রাক্তন নেত্রী তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা-সহ দলের বহু নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে নানা অপমানজনক কথাবার্তাও অতীতে বলেছেন আন্নামালাই। তাই জোট ঘোষণার ঠিক পরের দিনই রাজ্যে বিজেপি সভাপতি বদল করা হল বলে মত বিশ্লেষকদের।
যদিও জোট হলেও তামিলনাড়ুতে বিজেপি একটি আসনও পাবে না বলে মত মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিনের। এমনিতেই লোকসভার আসন বণ্টন নিয়ে সম্প্রতি কেন্দ্রের শাসক দলের সঙ্গে তরজায় জড়িয়েছেন তিনি। কয়েক দিন আগে তামিলনাড়ু সফরে এসে তাঁকে তথা তাঁর দলকে নিশানা করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। এই আবহে আজ স্ট্যালিন বিজেপি-এডিএমকে-র এই জোটকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত জোট’ বলে বিঁধেছেন। তাঁর বক্তব্য, এডিএমকে নেতাদের নিশানা করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাদের দিয়ে সম্প্রতি কয়েকটি তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল কেন্দ্রের শাসক দল। তাতে ভয় পেয়েই গোটা এডিএমকে কেন্দ্রের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে বলে অভিমত স্ট্যালিনের। তামিলনাড়ুর সাধারণ মানুষ এই জোটকে প্রথম থেকেই প্রত্যাখ্যান করবেন বলে জানিয়েছেন স্ট্যালিন। তিনি বলেছেন, ‘‘যারা মাত্র দু’টো অভিযান চালিয়ে এডিএমকে-কে ভয় পাওয়াতে চেয়েছিল, তারাই এখন পুরো তামিলনাড়ুকে বন্ধক রাখতে চাইছে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)