সনিয়া-মনমোহনের একশো দিনের কাজের প্রকল্পে সাফল্যের কৃতিত্ব দাবি করে গত কাল সরব হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। স্বাভাবিক ভাবেই তা নিয়ে আপত্তি তুলেছেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী।
ইউপিএ জমানার এই প্রকল্পের রূপ বদলে ফেলে বিজেপিই গত দেড় বছরে সেই সাফল্য এনেছে— জেটলির এই দাবি উড়িয়ে রাহুল সরাসরি আক্রমণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। রাহুলের মতে, ‘‘মোদীর এই দাবি থেকেই স্পষ্ট যে ওঁর রাজনৈতিক জ্ঞান কত উজ্জ্বল।’’ রাহুলের পাশাপাশি কেন্দ্রকে বিঁধেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহও। তাঁর অভিযোগ, একশো দিনের কাজের প্রকল্পের প্রাণশক্তিটাই নষ্ট করে দিয়েছে বিজেপি সরকার।
একশো দিনের কাজের প্রকল্পের দশ বছর উপলক্ষে গত কাল বিজ্ঞান ভবনে এক অনুষ্ঠানে জেটলি জানান, ইউপিএ আমলের এই প্রকল্পের বদল ঘটিয়ে তার বরাদ্দ বাড়িয়ে আর্থিক বৃদ্ধির হার ঊর্ধ্বমুখী করার কথা ভাবা হচ্ছে। অথচ নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পরে এই প্রকল্পে বাজেট বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মোদী সমালোচনার সুরে বলেছিলেন, এই প্রকল্প বন্ধ করার জন্য অনেকেই সরব। কিন্তু তা না করে প্রকল্পটি বাঁচিয়ে রেখে মানুষকে বোঝানো দরকার, কংগ্রেস এ ক্ষেত্রে কতটা ব্যর্থ। ক্ষমতায় থাকার ১৯ মাস পরে অবশ্য জেটলিরা এখন প্রকল্পে বরাদ্দ বৃদ্ধি করে নিজেদের সাফল্য প্রমাণে সচেষ্ট।
আর এই অবস্থান বদলকে কটাক্ষ করে রাহুলের টুইট, ‘‘এই প্রকল্পকে কংগ্রসের ‘ব্যর্থতার বিরাট নজির’ হিসেবে তুলে এখন আবার তাকেই জাতীয় গর্বের বিষয় বলে ঢাক পেটানো হচ্ছে। এটা মোদীর রাজনৈতিক জ্ঞানের উজ্জ্বল উদাহরণ।’’
এই প্রকল্পের দশম বর্ষপূর্তিতে অন্ধ্রপ্রদেশের বান্দলাপল্লি গ্রামে একটি সভায় হাজির ছিলেন রাহুল গাঁধী এবং মনমোহন সিংহ। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্প হিসেবে ‘একশো দিনের কাজ’ কতটা সম্ভাবনাময়, তা গোড়ায় বোঝেননি মোদী। উল্টে একে কংগ্রেসের অপশাসনের জীবন্ত নজির বলেছিলেন উনি।’’ মনমোহনের দাবি, এই প্রকল্পে রাজ্যগুলিকে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত করা হয়েছে। ২০১৪-১৫ সালেই রাজ্যগুলির বকেয়া অন্তত ৬ হাজার কোটি টাকা। এতে প্রকল্পের প্রাণশক্তি নষ্ট হচ্ছে বলে মনে করেন মনমোহন।
তা হলে এখন উল্টো পথে হেঁটে জেটলি কেন বরাদ্দ ৩৪ হাজার কোটি থেকে বাড়িয়ে ৩৭ হাজার কোটি করার কথা বলছেন? কংগ্রেসের কয়েক জন নেতার মতে, ‘‘পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখেই বিজেপি সরকারের এই অবস্থান বদল। আর তাই এই প্রকল্প ঘিরে সাফল্যের ঢাক পেটানো।’’ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, দিল্লি এবং বিহারে বিধানসভা ভোটে ভরাডুবির পরে বাকি পাঁচ রাজ্যেও যাতে এক পরিণতি না হয়, সেই লক্ষ্যেই মোদী সরকারের এই পদক্ষেপ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy