Advertisement
০৪ অক্টোবর ২০২৪
HAL Tejas vs JF-17

পাক-চিনের জেএফ-১৭ বনাম ভারতীয় তেজস কি এ বার মুখোমুখি লড়াইয়ে? এশিয়ার অন্য যুদ্ধক্ষেত্রে

হালকা যুদ্ধবিমান উৎকর্ষের মাপকাঠিতে তেজসের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলনায় আসে চিনা জেএফ-১৭। এ বার মধ্য় এশিয়ার দুই দেশের যুদ্ধে মুখোমুখি দেখা যেতে পারে তাদের।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪ ২০:৪৫
Share: Save:

দুই যুদ্ধবিমানের তুলনা চলছে বেশ কয়েক বছর ধরেই। এ বার সরাসরি আকাশযুদ্ধে মুখোমুখি হতে পারে পাকিস্তানে তৈরি চিনা যুদ্ধবিমান জেএফ-১৭ এবং ভারতীয় তেজস। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত মধ্য এশিয়ার দুই দেশ, আজ়ারবাইজান এবং আর্মেনিয়ার সংঘাতে।

আর্মেনিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে আজ়ারবাইজান সম্প্রতি পাকিস্তান থেকে জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান কিনেছে। তার ‘জবাব’ দিতে আর্মেনিয়া সরকার তেসজ কেনার জন্য নয়াদিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বলে ‘দ্য প্রিন্ট’-এ প্রকাশিত একটি খবরে জানানো হয়েছে। বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলের দখল নিয়ে ২০২২ সাল থেকে নতুন করে লড়াই শুরু হয়েছে মুসলিম দেশ আজ়ারবাইজান এবং খ্রিস্টান গরিষ্ঠ আর্মেনিয়ার মধ্যে। সেই যুদ্ধেই এ বার ‘ডগ ফাইটে’ নামতে পারে জেএফ-১৭ এবং তেজস।

হালকা যুদ্ধবিমান উৎকর্ষের মাপকাঠিতে তেজসের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলনায় আসে চিনা জেএফ-১৭। বেঙ্গালুরুর রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘হিন্দুস্থান অ্যারোনটিক্যালস লিমিটেড’ (হ্যাল)-এর তৈরি তেজস মার্ক-১ ভারতীয় সেনা ব্যবহার করে। এই যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়ে সম্প্রতি প্রস্তাব এসেছে মালয়েশিয়া থেকে। ‘অ্যাক্টিভ ইলেকট্রনিক্যালি স্ক্যান্‌ড অ্যারো রেডার’ (এএসইএ), মিড এয়ার ফুয়েলিং এবং ‘অস্ত্র’ ক্ষেপণাস্ত্রে সজ্জিত তেজসের নয়া সংস্করণ মার্ক-২ প্রযুক্তিগত উৎকর্ষে এগিয়ে জেএফ-১৭-র তুলনায় এগিয়ে বলে একাধিক আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ সংস্থার রিপোর্টে উল্লিখিত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলের দখল নিয়ে ২০২০ সালে দু’দেশের যুদ্ধে প্রায় সাড়ে ছ’হাজার মানুষ নিহত হয়েছিলেন। সে সময় মস্কোর মধ্যস্থতায় সংঘর্ষ বিরতি হয়েছিল। কিন্তু এ বার ইউক্রেন সমস্যায় ব্যতিব্যস্ত ভ্লাদিমির পুতিনের পক্ষে সেই ভূমিকা নেওয়া সম্ভব হয়নি। গত দু’বছরে পাকিস্তান এবং চিনের মদতে নাগোরনো-কারাবাখের অধিকাংশ এলাকাই দখল করেছে আজ়ারবাইজান। বস্তুত, ৪,৪০০ বর্গকিলোমিটারের নাগোরনো-কারাবাখের অধিকার নিয়ে আর্মেনিয়া-আজাবাইজান মতবিরোধের সূচনা ১৯৮৮ সালে। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর সদ্যস্বাধীন দুই দেশের মতবিরোধ গড়ায় সামরিক সঙ্ঘাতে। সোভিয়েত জমানায় আজারবাইজানের অন্তর্ভুক্ত এই অঞ্চলের প্রায় দেড় লক্ষ বাসিন্দার অধিকাংশই আর্মেনীয় খ্রিস্টান। তাঁরা মুসলিম রাষ্ট্র আজ়াবাইজানের অধীনে থাকতে নারাজ।

১৯৯৪ সালের লড়াইয়ের পর থেকে তা আর্মেনিয়ার মদতে পুষ্ট মিলিশিয়া গোষ্ঠী ‘আর্টসাক ডিফেন্স আর্মি’ দখলে ছিল। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ওই অঞ্চল দখল করতে অভিযান শুরু করেছিল আজারবাইজান ফৌজ। প্রাথমিক ভাবে তাদের সঙ্গে সেখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ আর্মেনীয় বাসিন্দাদের মিলিশিয়া বাহিনী ‘আর্টসাক ডিফেন্স আর্মি’র সংঘর্ষ বাধে। এর পর যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে আর্মেনিয়া ফৌজও। কিন্তু সে দেড় মাসের যুদ্ধে নাগোরনো-কারাবাখের বিস্তীর্ণ অংশ দখল করে নিয়েছিল আজারবাইজান সেনা। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধেও তাদেরই পাল্লা ভারী। তেজস কি পারবে তার মোড় ঘোরাতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE