হংসরাজ আহির। ছবি: সংগৃহীত।
পশ্চিমবঙ্গে ৮৭টি অনগ্রসর সম্প্রদায়কে কেন্দ্রীয় ওবিসি তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ করেছিল রাজ্য সরকার। এ নিয়ে সমস্ত তথ্য চেয়ে রাজ্য সরকারকে নোটিস জারি করল জাতীয় অনগ্রসর শ্রেণি কমিশন। কমিশনের অভিযোগ, যে সমস্ত হিন্দু সম্প্রদায় অন্য ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছে, তাদের কুলুজি বা বংশবৃত্তান্ত সংক্রান্ত নথি জমা দিতে পারেনি রাজ্য সরকার।
চলতি বছরের গোড়াতেই কমিশনের চেয়ারম্যান, বিজেপি নেতা হংসরাজ আহির পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে অভিযোগ তুলেছিলেন, রাজ্যের ওবিসি তালিকায় মুসলিম সম্প্রদায়ই সংখ্যাগরিষ্ঠ। ফলে মুসলিমরাই ওবিসি সংরক্ষণের যাবতীয় সুবিধা তুলে নিয়ে যাচ্ছেন বলে তাঁর দাবি ছিল। আহির বলেছিলেন, রাজ্য সরকার রাজ্যের ১৭৯টি ওবিসি সম্প্রদায়ের তালিকা দিয়েছে। তার মধ্যে ১১৮টি মুসলিম, ৬১টি হিন্দু। রাজ্যের শাসক দলের পাল্টা যুক্তি হল, বিজেপি মেরুকরণের রাজনীতি করতে চায় বলে বিষয়টা এই ভাবে প্রচার করছে। সম্প্রদায়ের সংখ্যা আর জনসংখ্যা এক নয়। সম্প্রদায় বেশি মানেই যে জনসংখ্যার জোর বেশি, সেটা মনে করে নেওয়ার কোনও কারণ নেই।
এখন জাতীয় অনগ্রসর শ্রেণি কমিশন সূত্রে জানানো হচ্ছে, রাজ্য সরকার যে ৮৭টি সম্প্রদায়কে কেন্দ্রীয় ওবিসি তালিকাভুক্ত করতে চাইছে, তার মধ্যে ৭৮টি মুসলিম সম্প্রদায়, ৯টি হিন্দু সম্প্রদায়। গত ১৬ অক্টোবর রাজ্য সরকারকে নোটিস পাঠিয়ে জানানো হয়েছে, আগামী ৩ নভেম্বর কমিশনে শুনানির সময় সমস্ত প্রয়োজনীয় নথি জমা করতে হবে। কমিশনের বক্তব্য, সমস্ত হিন্দু সম্প্রদায় অতীতে ধর্মান্তরিত হয়েছে, তাদের কুলুজি দিতে পারেনি রাজ্য সরকার।
এ দিকে তৃণমূল রাজ্যে ইতিমধ্যেই দাবি করেছে যে, সিংহভাগ মুসলিম সম্প্রদায়কে ওবিসি তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। সেই সূত্রেই বিজেপি মুসলিম তোষণের অভিযোগ তুলছে। আহিরের প্রশ্ন ছিল, ওবিসি-দের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ কী ভাবে মুসলিম হতে পারেন? তৃণমূল সূত্রের ব্যাখ্যা, ওবিসি-র তালিকায় মুসলিম সম্প্রদায়ের ভিড় বেশি বলে এমন নয় যে, মোট ওবিসি-দের জনসংখ্যাতেও মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। এমন হতেই পারে, হিন্দু ওবিসি সম্প্রদায়ের সংখ্যা কম হলেও তাদের জনসংখ্যা অনেক বেশি। যদি অনগ্রসর মুসলিমদের সংখ্যা বেশি হয়, তা হলে তাদের ওবিসি-র তালিকায় আনতে হবে। সেখানে ধর্মের রং দেখলে চলবে না। তৃণমূল শিবিরের অভিযোগ, জাতগণনা হলেও বিজেপি তা নিয়ে এ ভাবেই মেরুকরণের রাজনীতি করবে। এই কারণেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুম্বইয়ে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে জাতগণনার দাবিতে শামিল হতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy