পশ্চিমবঙ্গ-সহ তিন রাজ্যে রাজ্যসভার ভোট ঘোষণার এক সপ্তাহের মধ্যে পিছিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন। কেন? সেই রহস্য নিয়ে চার দিন ধরে জল্পনা রাজধানীতে।
প্রকাশ্যে না হলেও ভোট পিছনোর জন্য ঘরোয়া ভাবে বিজেপিকেই দুষছে বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, গুজরাতে সনিয়া গাঁধীর রাজনৈতিক সচিব অহমেদ পটেলকে হারানোর ছক কষছে বিজেপি। কংগ্রেস থেকে শঙ্করসিন বাঘেলার সঙ্গে দলের আরও জনা কুড়ি বিধায়ক ভাঙিয়ে আনার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। বাঘেলাকে রাজ্যসভার টিকিট দিয়ে গুজরাতের তৃতীয় আসনটিও ছিনিয়ে নিতে চাইছে বিজেপি। সেটি করতে সময় লাগবে আরও। বিরোধীদের অভিযোগ, সে জন্যই রাজ্যসভার ভোট পিছনো হল।
রাজ্যসভার বিদায়ী সাংসদদের মেয়াদ অগস্ট মাসে শেষ হলেও নির্বাচন কমিশন ভোট দু’মাস এগিয়ে এনেছিল। কমিশন অবশ্য গোড়াতেই স্পষ্ট করে দিয়েছে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আর জুনের গোড়ায় ইভিএম নিয়ে হ্যাকাথনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ সব কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে রাজ্যসভা ভোট পরে হবে। কিন্তু বিরোধীদের বক্তব্য, এই দু’টি কারণ আগে কমিশনের অজানা ছিল, এমন তো নয়। আর ভোট মাত্র তিনটি রাজ্যের দশটি আসনে। পশ্চিমবঙ্গে যে ছ’টি আসন খালি হচ্ছে, তার মধ্যে পাঁচটিতে তৃণমূল অনায়াসে জিতে আসবে। প্রার্থীদের নামও ঘোষণা করে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ষষ্ঠ আসনের জন্য সিপিএম, কংগ্রেস, তৃণমূলে তৎপরতা তুঙ্গে ছিল। কিন্তু হঠাৎ ভোট স্থগিত করে দিল কমিশন।
অনেক দিন ধরেই শঙ্করসিন বাঘেলা কংগ্রেসে অসন্তুষ্ট। সম্প্রতি অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পরে বিজেপিতে তাঁর যোগ দেওয়া নিয়েও জল্পনা তুঙ্গে ওঠে। মাত্রা বাড়ে বাঘেলা যখন টুইটারে রাহুল গাঁধীকে ‘আনফলো’ করে ছুটিতে বিদেশে চলে যান। কংগ্রেসের কাছে এখন যত বিধায়ক রয়েছে, তাতে অহমেদ পটেলকে অনায়াসে জিতিয়ে আনা সম্ভব। এ ছাড়া, গুজরাতে স্মৃতি ইরানি ও দিলীপ পান্ড্যর আসন দু’টি খালি হচ্ছে। বিজেপি নিজেদের জোরে দুটি আসন জিততে পারবে। তবে তৃতীয়টি জিততে হলে বাঘেলার মতো কাউকে কংগ্রেসের বিধায়ক ভাঙিয়ে আনতে হবে। বাঘেলা শিবিরের মতে, তাদের সমর্থনে কংগ্রেসের ২০-২৫ জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে।
বাঘেলা বিজেপিতে এলে এক ঢিলে দুই পাখি মারতে পারবেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ। গুজরাতে দল একটি বাড়তি রাজ্যসভা আসন পেতে পারে। আর এ বছরের শেষে রাজ্যের বিধানসভা ভোটের আগে কংগ্রেসকে দুর্বল করা সম্ভব। গুজরাতের বিজেপি নেতারা ঘরোয়া ভাবে মেনে নিচ্ছেন, বাঘেলাকে দলে টানতে আলোচনা শুরু হয়েছে। এমনকী বিজেপি জিতলে বাঘেলার ছেলেকেও রাজ্যের মন্ত্রী করার কথা ভাবা হচ্ছে। কিন্তু অমিত শাহকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘বাঘেলার সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়নি। সংবাদ মাধ্যম থেকে জানতে পারছি, তিনি কংগ্রেসে খুশি নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy