Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
পঞ্জাব

সরকারের আশ্বাসে সুর নরম বাবার, অন্ত্যেষ্টি কিশোরীর

ক্ষতিপূরণ ফেরানোর জেদ বা উপমুখ্যমন্ত্রী সুখবীর সিংহ বাদলের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি। শেষমেশ ধোপে টিকল না কোনওটাই। মেয়ের মৃতদেহ আটকে রেখে চার দিন বিক্ষোভের পর অবশেষে সরকারের সঙ্গে সমঝোতার পথে হাঁটল মোগার নিহত কিশোরীর পরিবার। ঘটনার চার দিন পর রবিবার কিশোরীর দেহ সৎকার করল তার বাবা। মুখ্যমন্ত্রী দোষীদের শাস্তির আশ্বাস দেওয়ার পর সরকারি ক্ষতিপূরণও নিতে রাজি হয়েছেন তিনি। রবিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ নিজের গ্রামে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় ওই কিশোরীর।

সংবাদ সংস্থা
মোগা শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৫ ০৪:২৭
Share: Save:

ক্ষতিপূরণ ফেরানোর জেদ বা উপমুখ্যমন্ত্রী সুখবীর সিংহ বাদলের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি। শেষমেশ ধোপে টিকল না কোনওটাই। মেয়ের মৃতদেহ আটকে রেখে চার দিন বিক্ষোভের পর অবশেষে সরকারের সঙ্গে সমঝোতার পথে হাঁটল মোগার নিহত কিশোরীর পরিবার। ঘটনার চার দিন পর রবিবার কিশোরীর দেহ সৎকার করল তার বাবা। মুখ্যমন্ত্রী দোষীদের শাস্তির আশ্বাস দেওয়ার পর সরকারি ক্ষতিপূরণও নিতে রাজি হয়েছেন তিনি। রবিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ নিজের গ্রামে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় ওই কিশোরীর।

লাগাতার বিক্ষোভ এবং সমালোচনার মুখে আজ ভাবমুর্তি বাঁচাতে তৎপর হন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিংহ বাদল। মোগার ঘটনাকে ‘যন্ত্রণাদায়ক’ বলে ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘‘এই ঘটনাটি কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা যায় না। এ ভাবে মেয়েটির মৃত্যুতে আমি অত্যন্ত ব্যথিত’’। এ দিন সন্ধ্যায় মৃতের বাবার সঙ্গে দেখা করে আধ ঘণ্টা কাটান তিনি। তাঁর মিডিয়া উপদেষ্টা আশ্বাস দিয়েছেন, ‘‘ব্যক্তিগত ভাবে বিষয়টির উপর নজর রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী। মৃতের পরিবার যথার্থ ন্যায় বিচার পাবে।’’

সরকারের তরফে এই প্রতিশ্রুতি মেলার পরেই খানিকটা নরম হয়েছিল নিহতের পরিবার। রবিবার সকালেই মেয়ের দেহ ময়নাতদন্ত এবং সৎকারে রাজি হয়ে যান নিহত কিশোরীর বাবা সুখদেব সিংহ। হঠাৎ কেন এই মত বদল? সুখদেবের কথায়, ‘‘রাজ্য সরকার আমার দাবি পূরণ করার আশ্বাস দিয়েছে। আমার মেয়ের খুনিদের শাস্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।’’ তাঁর বক্তব্য, সরকার কত ক্ষতিপূরণ দেবে তা জানা নেই। তবে যা দেবে, তাই তাঁরা নিতে রাজি। তিনি এও বলেছেন, ‘‘সরকার বা অন্য কোনও অফিসার আমাদের সমঝোতার জন্য কোনও চাপ দেয়নি।...এ বার সব বিক্ষোভ বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। আমার মেয়ে তো মারাই গিয়েছে। আমার স্ত্রীও যদি এ বার মারা যান তবে আমার জীবনে আর কী থাকবে। আমি এ বার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে চাই।’’

চাপের মুখে কালই পঞ্জাবের রাস্তা থেকে অরবিট এভিয়েশনের সমস্ত বাস তুলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী সুখবীর সিংহ বাদল। যিনি নিজেও এই সংস্থার অন্যতম মালিক। এই সংস্থারই একটি বাস থেকে বৃহস্পতিবার শ্লীলতাহানির পর ছুড়ে ফেলা হয় বছর চোদ্দোর এক দলিত কিশোরীকে। মৃত্যু হয় কিশোরীর। তার মা হাসপাতালে ভর্তি। সংশ্লিষ্ট বাস সংস্থাটির সঙ্গে উপমুখ্যমন্ত্রীর যোগ থাকায় শুরু থেকেই বিরোধী দলগুলির আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে সরকারকে। মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি তুলেছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের অভিযোগ, বাদল পরিবার ক্ষমতায় আসার পরেই পঞ্জাবে রমরম করে বেড়েছে তাদের ব্যবসা। পঞ্জাব সরকারকে বরখাস্ত করতে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন জানিয়েছে আম আদমি পার্টিও। সুখবীর সিংহ বাদল-সহ সংস্থাটির অন্য মালিকদের বিরুদ্ধে আদালতেও যেতে চেয়েছিলেন মেয়েটির বাবা। তবে তার আগেই গত চার দিনের কঠোর অবস্থান থেকে অনেকটাই সরে এল মৃতের পরিবার।

গত বৃহস্পতিবারই মোগার ঘটনা নিয়ে পঞ্জাব সরকারের রিপোর্ট তলব করেছিল কেন্দ্র। তা হাতে পেলে যথাযথ পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিল নয়াদিল্লি। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরণ রিজিজু আজ বলেছেন, ‘‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রিপোর্ট চেয়েছে। তা হাতে না আসা ইস্তক কোনও কথা বলা যাবে না। আমাদের বিশ্বাস পঞ্জাব সরকার ঠিক পথেই এগোবে। যদি রিপোর্ট পাওয়ার পর কেন্দ্র কোনও গরমিল পায়, তবে নিশ্চয় ব্যবস্থা নেবে।’’

এ দিকে, রবিবার প্রকাশিত একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ঘটনার কিছু ক্ষণ আগেও বেপরোয়া ভাবে বাস চালাচ্ছিল চালক। মোগা-কোটকাপুরা হাইওয়ের উপর দিয়ে প্রচণ্ড গতিতে যাওয়ার সময় হঠাৎ ডান দিকে বাঁক নেয়। একচুলের জন্য একটি ট্র্যাক্টরের সঙ্গে ধাক্কা এড়ায় এটি। এর পরেই বাসটি দাঁড়ালে তাতে ওঠে খালাসি অমর রাম। অভিযোগ, সে এবং কন্ডাক্টর-সহ আরও তিন জন ওই কিশোরীর শ্লীলতাহানি করে চলন্ত বাস থেকে তাকে ছুড়ে ফেলে দেয়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE