গোয়া যাওয়ার পথে দ্বাদশ শ্রেণির ভজনপ্রীত ও সিমরমজিৎ। ছবি: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
পড়ুয়াদের কাছে শিক্ষক বলেছিলেন, রাজ্যের মেধাতালিকায় যাঁর নাম উঠবে, তার জীবনের যে কোনও একটি ইচ্ছে পূরণ করবেন তিনি। ফল প্রকাশ হলে দেখা যায় স্কুলের কয়েক জনের নাম উঠেছে মেধাতালিকায়। অতঃপর, মনের ইচ্ছের কথা শিক্ষককে জানানো হল। পূরণও হল স্বপ্ন। পঞ্জাবের সরকারি স্কুলের দুই মেধাবী ছাত্রী ঘুরে এল গোয়া। জীবনে এই প্রথম বার, বিমানে চড়ে!
পঞ্চাবের ফিরোজপুরের শহিদ গুরুদাস রাম মেমোরিয়াল সরকারি সিনিয়র সেকেন্ডারি গার্লস স্কুলের প্রিন্সিপাল রাকেশ শর্মা। তিনিই ছাত্রীদের বিমানযাত্রার সমস্ত খরচ বহন করেছেন নিজের পকেট থেকে। তিনি জানান, স্কুলের দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা বাকি রাজ্যের তুলনায় পিছিয়ে পড়ছিল। গত ১২ বছর ধরে রাজ্যের মেধাতালিকায় নাম ওঠেনি স্কুলের কোনও পড়ুয়ার। এই অবস্থা বদলাতে চেয়েছিলেন রাকেশ। ছাত্রীদের উদ্বুদ্ধ করতে তাই তিনি বলেন, যে ভাল ফল করবে তার জীবনের ইচ্ছে পূরণ করবেন তিনি। সরকারি স্কুলটির পড়ুয়ারা বিমান আকাশ উড়তে দেখেছে। কিন্তু চড়া হয়ে ওঠেনি। তাই শিক্ষকের কাছে বিমানযাত্রার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিল তারা। রাকেশ রাজি হয়েছিলেন সানন্দে।
রাকেশ বলছেন, ‘‘আমি একদিন প্রার্থনার সময় ঘোষণা করি যে, দশম ও দ্বাদশে যে ছাত্রীরা রাজ্যের মেধাতালিকায় থাকবে, তাদের যে কোনও জায়গায় বিমানে যাওয়ার খরচ আমি দেব।’’ স্কুলের বেশির ভাগ ছাত্রীই নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসে। তাই বিমান দেখলেও তাতে চড়ার সামর্থ হয়নি কারও। রাকেশ বলেন, ‘‘ভগবানের আশীর্বাদে আমাদের স্কুলের চার পড়ুয়া দশম ও দ্বাদশ শ্রেণিতে রাজ্যে স্থান পেয়েছে। এ বার আমি আমার প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে বাধ্য। তাই গত বছর নভেম্বরে দ্বাদশ শ্রেণির ভজনপ্রীত কউর, সিমরমজিৎ কউরকে গোয়া পাঠিয়েছিলাম বিমানে।’’ এ বার পালা দশম শ্রেণির। স্কুলে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, জানুয়ারির শেষ নাগাদ অমৃতসর থেকে দিল্লি উড়ে যাবে দশম শ্রেণির দুই কৃতী। সেখানে রাষ্ট্রপতি ভবন, লালকেল্লা-সহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক জায়গা ঘুরিয়ে দেখানো হবে তাদের।
প্রিন্সিপালের এই কাজে স্কুলে রাতারাতি পরিবেশ বদলে গিয়েছে। আগামী বছরের জন্য ইতিমধ্যেই দশম ও দ্বাদশ মিলিয়ে ২২ জন নাম নথিভুক্ত করে ফেলেছে। সবাই চায় পরীক্ষায় তাক লাগানো ফল করে বিমানযাত্রায় যেতে।
নিজের টোটকায় এমন কাজ হচ্ছে দেখে উৎফুল্ল রাকেশ। তাঁর দাবি, ২০১৯-এ যখন তিনি স্কুলে যোগ দিয়েছিলেন তখন জেলায় ৫৬টি স্কুলের মধ্যে ৪৮তম স্থানে ছিল স্কুলটি। এখন ফিরোজপুর জেলায় প্রথম স্থান অধিকার করে আছে রাকেশের স্কুল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy