People in Joshimath recalls the two horrible nights when land subsidence started dgtl
Joshimath land subsidence
উঠোনে হঠাৎ ফাটল, চোখের সামনে ধসে গেল বাড়ি! জানুয়ারির দুই রাত ভুলতে পারছে না জোশীমঠ
জোশীমঠে গত কয়েক দিনে যা হয়েছে, ভুলতে পারছেন না স্থানীয়রা। এক রাতের মধ্যে তাঁদের সাজানো সংসার, ঘরবাড়ি সব তছনছ হয়ে গিয়েছে। ভিটেমাটি ছেড়ে মুহূর্তে বেরিয়ে আসতে হয়েছে সকলকে।
সংবাদ সংস্থা
দেহরাদূনশেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৩ ১৩:৪৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
আতঙ্কের প্রহর গুনছে উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠ। কিছু দিন আগে পর্যন্ত যা ছিল পাহাড়ের কোলে সাজানো-গোছানো শহর, এখন সেখানেই মৃত্যুর হাতছানি। এলোমেলো হয়ে গিয়েছে সম্পূর্ণ জনপদ।
০২২০
জোশীমঠে গত কয়েক দিনে যা হয়েছে, ভুলতে পারছেন না স্থানীয়রা। এক রাতের মধ্যে তাঁদের সাজানো সংসার, ঘরবাড়ি সব তছনছ হয়ে গিয়েছে। ভিটেমাটি ছেড়ে মুহূর্তে বেরিয়ে আসতে হয়েছে সকলকে।
০৩২০
জোশীমঠে ধসের কারণে যাঁদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, জিনিসপত্র গুছিয়ে আনার ন্যূনতম সময়টুকুও পাননি তাঁরা। কেউ কেউ চোখের সামনে নিরুপায় হয়ে বাড়ি ভেঙে পড়তে দেখেছেন।
০৪২০
সংবাদ সংস্থা নবভারত টাইমসের প্রতিনিধিকে জোশীমঠে ভিটেহারা ঋষি দেবী জানিয়েছেন, কী ভাবে চোখের নিমেষে সব শেষ হয়ে গিয়েছে। বলতে বলতে কান্নায় বুজে এসেছে তাঁর গলা।
০৫২০
জোশীমঠের সিংহদ্বার এলাকার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আপাতত ঠাঁই হয়েছে ভিটেহারাদের। স্কুলবাড়িতে জবুথবু হয়ে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা। ঋষি দেবী জানিয়েছেন, কিছু দিন আগেও সব ঠিকঠাক ছিল। বিপদের আঁচ করেননি কেউ।
০৬২০
গত ২ জানুয়ারি রাতে প্রথম তাঁদের বাড়ির উঠোনে ফাটল দেখা যায়। ক্রমে তা চওড়া হতে থাকে। এক সময় ভয়ে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হন তাঁরা। জিনিসপত্র গুছিয়ে সঙ্গে নেওয়ার সময়ও পাননি। চোখের সামনে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে গোটা বাড়ি।
০৭২০
জোশীমঠের বিপর্যয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই সিংহদ্বার এলাকা। রাস্তা থেকে শুরু করে বাড়ি, প্রায় সর্বত্র ফাটল দেখা দিয়েছে এই এলাকায়। মাঠের মাঝখানে চিড় ধরেছে, ফেটে গিয়েছে ক্ষেত।
০৮২০
জোশীমঠের সর্বত্র এখন কেবল আতঙ্কের ছায়া। ২ এবং ৩ জানুয়ারি— নতুন বছরের এই দুই রাত ভুলতে পারছেন না বাসিন্দারা কেউ।
০৯২০
মূলত এই দুই রাতেই বিপর্যয়ের সূত্রপাত। হঠাৎ ফাটল দেখা দেওয়া, সে ফাটল ক্রমে চওড়া হতে শুরু করা এবং অবশেষে বাড়ি ভেঙে পড়া— সব কিছুর সাক্ষী এই ২ এবং ৩ জানুয়ারি।
১০২০
সিংহদ্বার এলাকার একটি বহু পুরনো মন্দিরও ভেঙে পড়েছে সম্প্রতি। ছোট থেকে যে মাটিতে দেখছেন, যার কোলে হেসেখেলে বেড়ে ওঠা, আচমকা এই ভোলবদলে অচেনা হয়ে গিয়েছে তা।
১১২০
বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামি জোশীমঠের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সশরীরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। কিন্তু সিংহদ্বার এলাকায় তিনি আসেননি।
১২২০
১৯৭০ সাল থেকেই জোশীমঠের জমিতে ভূমিধস শুরু হয়েছে। মাঝেমধ্যে পাহাড়ের বেশ কিছু অংশ ভেঙে পড়তে দেখা গিয়েছে। কিন্তু ২০২১ সালে ধসের পরিমাণ বাড়তে থাকে।
১৩২০
গত কয়েক দিনে জোশীমঠের অন্তত ৭০০ বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা রাকেশ লালের কথায়, ‘‘২ তারিখ রাত ২টো নাগাদ মৃদু আওয়াজে আমাদের সকলের ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। ভয়ে আমরা সকলে বাড়ি থেকে রাস্তায় বেরিয়ে আসি।’’
১৪২০
তিনি আরও বলেন, ‘‘তার পর আমরা দেখতে পাই, বাড়ির দেওয়ালে ফাটল ধরেছে। এলাকার প্রায় প্রত্যেক বাড়িতেই দেওয়াল ফেটে গিয়েছিল সেই রাতে। দু’একটি বাড়ি কেবল অক্ষত ছিল।
১৫২০
জোশীমঠের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে ইতিমধ্যে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নিরাপদ দূরত্বে। ৫ এবং ৬ জানুয়ারি বিশেষজ্ঞদের একটি দল শহরের আনাচকানাচে ঘুরে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছেন।
১৬২০
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, যে সব বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে, অবিলম্বে সেগুলি ভেঙে দেওয়া দরকার। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ফাঁকা করা দরকার যত দ্রুত সম্ভব।
১৭২০
বস্তুত, জোশীমঠ শহর তৈরি হয়েছে ধসে যাওয়া পাহাড়ের ধ্বংসস্তূপের উপর। তাই এখানকার মাটি নড়বড়ে। তার উপর নিষেধাজ্ঞা এবং যাবতীয় সতর্কতা উড়িয়ে গত কয়েক বছরে দেদার নির্মাণকাজ চলেছে জোশীমঠে।
১৮২০
একের পর এক বাড়িঘর, হোটেল তৈরি করা হয়েছে। জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের সম্প্রসারণ এবং জাতীয় সড়ক প্রশস্তকরণের মতো কাজ হয়েছে প্রশাসনের তৎপরতাতেই। অনেকে বলছেন, সেই কারণেই জোশীমঠের জমি বসে যেতে শুরু করেছে।
১৯২০
জোশীমঠের পরিস্থিতি নিয়ে রবিবারই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসছে প্রধানমন্ত্রীর অফিস (পিএমও)। বৈঠক ডাকা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর প্রধান সচিব পিকে মিশ্রের নেতৃত্বে।
২০২০
বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন ক্যাবিনেট সেক্রেটারি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা। থাকবেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের আধিকারিকরাও। জোশীমঠের ভবিষ্যৎ কী, সেখানে সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হওয়া উচিত, তা নিয়ে আলোচনা হবে এই বৈঠকে।