সামনের বছর পঞ্জাবে বিধানসভা ভোট। তার আগে ‘উড়তা পঞ্জাব’ ছবি নিয়ে সেন্সর বোর্ডের হইচইয়ে সামনে চলে এসেছে পঞ্জাবে মাদক চক্রের রমরমার কথা। যা নিয়ে চলছে জোর রাজনীতি। বম্বে হাইকোর্ট আজ ‘উড়তা পঞ্জাব’কে একটি কাট-সহ ছাড় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বলেছে, ছবির সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। আদালত যা-ই বলুক, অকালি-বিজেপি সরকারের জমানায় পঞ্জাবে মাদক চক্রের রমরমাকে হাতিয়ার করে মাঠে নেমে পড়েছেন রাহুল গাঁধী।
মাদক চক্রে মদত দেওয়ার জন্য আজ অকালি দলের শীর্ষনেতাদের দিকেই আঙুল তুলেছেন রাহুল। জালন্ধরে গিয়ে অকালি-সরকারের বিরুদ্ধে ধর্নায় বসে তিনি বলেছেন, ‘‘উড়তা পঞ্জাব নিষিদ্ধ করার চেষ্টা হচ্ছে। কারণ ওরা সত্যিটা মানতে নারাজ। মাদক ব্যবসা থেকে অকালি দল ও তাদের নেতারা মুনাফা কুড়োচ্ছে। তরুণ প্রজন্মকে লুঠে টাকা-বাড়ি বানাচ্ছে।’’ এর পরে রাহুলের প্রতিশ্রুতি, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে এই মাদক ব্যবসা বন্ধ করা হবে এক মাসের মধ্যে। যেমন ভাবে তিনি ভাট্টা পারসৌলে গিয়ে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে লড়েছেন, তেমনই পঞ্জাবে মাদকের বিরুদ্ধে লড়বেন।
কংগ্রেসের আক্রমণের মুখে ইন্দিরা গাঁধীর হত্যার পর শিখ-নিধনকে আজ ফের ঢাল করছে অকালি ও বিজেপি। পিছিয়ে নেই আম আদমি পার্টিও। ভোটের দিকে তাকিয়ে গত কাল দলের পোড়খাওয়া নেতা কমল নাথকে রাজ্যের দায়িত্ব দিয়েছেন সনিয়া। অরবিন্দ কেজরীবাল থেকে অকালি দলের নেতা, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিংহ বাদল অভিযোগ তুলেছেন, কমল নাথ ১৯৮৪-র শিখ নিধনে জড়িত ছিলেন। তাঁকে পঞ্জাবের দায়িত্ব দিয়ে শিখদের ক্ষতেই নুন ছড়াল কংগ্রেস।
স্পর্শকাতর বিষয় হলেও কংগ্রেস চাপের মুখে পিছু হটতে নারাজ। আজ কংগ্রেসের তরফে আনন্দ শর্মা জানান, কমল নাথ শিখ-নিধনে জড়িত নন। এনডিএ-সরকার নিযুক্ত নানাবতী কমিশনই তাঁকে সব অভিযোগ থেকে রেহাই দেয়। এখন তাঁকে পঞ্জাবের দায়িত্ব দেওয়ার পরেই মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। কমল নাথ নিজেও বলেন, ‘‘বিজেপি ও অকালি গত ৩২ বছরে অভিযোগ তোলেনি। আম আদমি পার্টির তো তখনও জন্মই হয়নি। কেউ কেউ নানাবতী কমিশনে অভিযোগ করেন, তা ধোপে টেকেনি।’’ তবে পঞ্জাবে অকালি দলের একাংশের সঙ্গে মাদক চক্রের যোগাযোগের অভিযোগে বিজেপি নেতৃত্বও কিছুটা অস্বস্তিতে।
অরুণ জেটলি পঞ্জাব থেকে লোকসভা ভোটে লড়তে গিয়েও এই সমস্যার মুখে পড়েন। কিন্তু বিজেপির চাপ হল, অকালি দল তাদের প্রাচীনতম শরিক। কংগ্রেসের মোকাবিলায় তাই বিজেপি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে আপকে, যাতে বিরোধী ভোট ভাগাভাগি করে ক্ষমতা ধরে রাখা যায়।
এই কৌশল অনুযায়ী কেজরীবালের দাবিমতো ১৯৮৪-র শিখ-নিধনের পুরনো ৭৫টি মামলা নতুন করে তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। মোদী সরকারের তৈরি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) এর তদন্ত করবে। দিল্লি পুলিশ শিখ-নিধন কাণ্ডের যে ২৪১টি মামলার তদন্ত করেছিল, তার মধ্যে ৭৫টি মামলার তদন্ত হবে। নানাবতী কমিশন মাত্র চারটি মামলার নতুন করে তদন্তের সুপারিশ করে।
এ বার পঞ্জাবের ভোটের আগে নতুন করে শিখ-নিধন কাণ্ড খুঁচিয়ে তুলতে আরও ৭৫টি মামলা খোলায় কেজরীবাল ও বিজেপি-অকালি, দুই শিবিরই তাঁর কৃতিত্ব নিতে মাঠে নেমে পড়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy