নরেন্দ্র মোদী। ছবি: এক্স।
মোদী বলেন, ‘‘বালকবুদ্ধিকে সদ্বুদ্ধি দিক।’’ নাম না করে রাহুলকেই খোঁচা দিয়ে নিজের বক্তৃতা শেষ করলেন মোদী।
ভাষণ থামিয়ে হাথরসের ঘটনায় শোকপ্রকাশ করলেন মোদী। সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিলেন তিনি। জানালেন, প্রশাসন উদ্ধারকাজ করছে। সে সময় বিরোধীরা চিৎকার করে বলেন, ‘‘মণিপুর নিয়েও কিছু বলুন।’’
মোদী বলেন, ‘‘ভারতের বৈচিত্রে আঘাত করা হচ্ছে। এতে শুধু আমার চিন্তা নয়, দেশের জনতারও চিন্তা হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টও উদ্বিগ্ন। তারা বলছে, গোড়াতেই রুখতে হবে এ সব। দেশবাসীকে এই ধরনের শক্তির থেকে সতর্ক হতে হবে।’’
মোদী বলেন, ‘‘জি২০ সম্মেলনে যত বার গিয়েছি, ভারতের ডিজিটাল ব্যাবস্থা নিয়ে সকলে প্রশ্ন করেছেন। বিস্মিত হয়েছেন।’’
মোদী বলেন, ‘‘স্বাধীনতার এত বছর পর প্রতি ঘরে জল পৌঁছনোর চেষ্টা চলছে। সেনাকে আত্মনির্ভর করা হচ্ছে। এটাই সঙ্কল্প। এটা সবুজ যুগ। তাই দুনিয়া যে বিশ্ব উষ্ণায়নের সঙ্গে লড়ছে, ভারতও সেই লড়াইয়ে প্রতিশ্রুতিব্ধ। আধুনিক পরিকাঠামো তৈরি করতে হবে।’’
নিট দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুললেন মোদী। জানালেন, যুবসমাজের ভবিষ্যৎ নিয়ে যাঁরা খেলা করেছেন, তাঁদের ছাড়া হবে না। লাগাতার গ্রেফতারি চলছে। কড়া আইন আনা হয়েছে। প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
মোদী বলেন, ‘‘কংগ্রেস কার জন্য সেনাকে দুর্বল করছে? ইন্দিরাজি এক পদ এক অবসর ভাতা ব্যবস্থা বন্ধ করেছিলেন। কংগ্রেস পরে আর তা জারি করতে দেয়নি। এনডিএ এক পদ এক অবসর ভাতা চালু করেছে।’’
মোদী বলেন, ‘‘আমাদের সেনা আধুনিক হচ্ছে। জবাব দিচ্ছে। আত্মনির্ভর ভারতে সেনাকে আত্মনির্ভর করার জন্য পদক্ষেপ করা হবে। যুবসমাজের উপর ভরসা রাখতে হবে। সেনাকে কমজোরি করেছে কংগ্রেস। নেহরুজির আমলে দুর্বল ছিল সেনা। নিজেরা কিছু করেনি। আমরা যখন চেষ্টা করেছি, ওরা ষড়যন্ত্র করেছে। ফাইটার জেট যাতে এয়ারপোর্টে পৌঁছতে না পারে, তাই ষড়যন্ত্র করে। বালকবুদ্ধি দেখুন, সেনাকে ঠাট্টা করা হত। ’’
মোদী বলেন, ‘‘দেশে হিন্দুদের গালি দেওয়া এখন ফ্যাশন হয়েছে। ঈশ্বরের সব রূপ দর্শনের জন্য হয়। নিজের স্বার্থে তার প্রদর্শন ঠিক নয়। যার দর্শন হয়, তার প্রদর্শন হয় না। দেবতাদের অপমান ১৪০ কোটি ভারতবাসীকে দুঃখ দিয়েছে। নিজের রাজনীতির জন্য এ রকম খেলা। দেশ কী ভাবে ক্ষমা করবে? সংসদের কাণ্ড দেখে হিন্দুদের ভাবতে হবে, এটা কি কোনও প্রয়োগের প্রস্তুতি!’’
বিরোধীরা স্লোগান তোলেন, ‘ঝুট বোলে কাউয়া কাটে’! প্রধানমন্ত্রী যখন ভাষণ দিচ্ছেন, তখন এই স্লোগান দেন বিরোধীরা।
মোদী বলেন, ‘‘সোমবার সংসদে যা হয়েছে, ভাবা যায়নি। হিন্দুরা সহনশীল। তাই ভারতের বিরাটতা আজও রয়েছে। হিন্দুদের মিথ্যা অপবাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। বলা হয়েছে, হিন্দু হিংসাত্মক। এ রকম আপানারা? দেশের হিন্দুদের সঙ্গে এ রকম?’’
মোদী বলেন, ‘‘জগজীবন রামকে অধিকার দেয়নি কংগ্রেস। এই নিয়ে একটি বইয়ে ইন্দিরার বক্তব্য রয়েছে। সীতারাম কেশরী, চৌধরি চরণ সিংহের সঙ্গেও পাপ হয়েছে। সেই পাপ লেগেছে কংগ্রেসের। নেহরুজি চিঠি দিয়ে সংরক্ষণের বিরোধিতা করেছিলেন। বহু বছর ঠান্ডা ঘরে ছিল প্রস্তাব।’’
মোদী বলেন, ‘‘জরুরি অবস্থার ৫০ বছর। বাবাসাহেব অম্বেডকরের উপেক্ষা করা হয়েছে। নেহরুজি তাঁর রাজনৈতিক জীবন শেষ করার জন্য শক্তি প্রয়োগ করেছিলেন। প্রথমে তাঁকে হারানো হয়েছিল জোর করে। পরে তাঁর পরাজয়ের উদ্যাপন করা হয়। একটি চিঠিতে তা লেখা হয়েছে।’’
মোদী বলেন, ‘‘ সোমবার সংসদে মিথ্যা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, এমএসপি দেওয়া হয়নি। এটা সংবিধান, সংসদের গরিমার অবমাননা। সোমবার যা হয়েছে, তা গুরুত্ব দিয়ে না দেখলে লোকতন্ত্রকে রক্ষা করা যাবে না। বালকবুদ্ধি বলে এড়িয়ে যাওয়া যাবে না।’’ নেপথ্যে স্লোগান দিচ্ছেন বিরোধীরা, ‘‘আমরা ন্যায় চাই।’’
মোদী বলেন, ‘‘দেশ কংগ্রেসকে বলে দিয়েছে, তোমার দ্বারা হবে না। ১ জুলাই লোকে দেখছিল, অ্যাকাউন্টে সাড়ে ৮ হাজার টাকা এসেছে কি না! কারণ, কংগ্রেস প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দেশের মা-বোনদের টাকা দেবে তারা। এই মা-বোনদের অভিশাপে শেষ হবে কংগ্রেস। ইভিএম, সংবিধান, সংরক্ষণ নিয়ে মিথ্যা বলে কংগ্রেস। তার আগে রাফাল, এলআইসি নিয়ে মিথ্যা বলেছে কংগ্রেস।’’
মোদী বলেন, ‘‘সিএএ নিয়েও অরাজকতা তৈরি হচ্ছে। দেশে দেখেছে। সহানুভূতি তৈরির জন্য চক্রান্ত হচ্ছে। দেশ সত্যিটা জানে। হাজার কোটি টাকা দুর্নীতিকাণ্ডে জামিনে মুক্ত। ওবিসিদের চোর বলে সাজা পেয়েছে।’’ সংসদে তখনও ‘মণিপুর, মণিপুর’ ধ্বনি দিচ্ছেন বিরোধীরা।
মোদী বলেন, ‘‘দেশ বিকাশের রাস্তা বেছেছে। বিকশিত ভারত চায়। এই সময় দেশএর দুর্ভাগ্য যে, ছয় দশক ধরে রাজ করা কংগ্রেস অরাজকতা তৈরি করছে। দক্ষিণে গিয়ে উত্তরের বিরুদ্ধে বলে। উত্তরে গিয়ে পশ্চিমের বিরুদ্ধে, মহাপুরুষের বিরুদ্ধে বলে। ভাষার ভিত্তিতে বিভাজন করতে চেয়েছে। কংগ্রেস প্রকাশ্যে এক জাতির বিরুদ্ধে অন্য জাতিকে লড়াই করানোর চেষ্টা করছে। দেশের অর্থনৈতিক অবনতির জন্য ছক কষছে। অরাজকতা তৈরি এদের উদ্দেশ্য।’’
মোদীর কটাক্ষ, কংগ্রেস যে দলের সঙ্গে জোট বাঁধে, তাদেরও ভোট কমে যায়। যেখানে কংগ্রেস প্রধান দল ছিল, সেখানে তার স্ট্রাইক রেট ২৬ শতাংশ। কিন্তু যেখানে কারও সঙ্গী (জুনিয়র পার্টনার) হয়েছিল, সে সব রাজ্যে ওদের স্ট্রাইক রেট ৫০ শতাংশ। গুজরাত, ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশে নিজেদের দমে লড়েছে। ৬৪টির মধ্যে দু’টিতে জিতেছে তিন রাজ্যে। অর্থাৎ কংগ্রেস এখন ‘পরজীবী’ হয়েছে। জোটসঙ্গীদের কাঁধে চড়ে এই আসন পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী যখন ঠাট্টার ছলে এ সব বলছেন, তখনও বিরোধীরা পিছনে স্লোগান দিচ্ছেন, ‘মণিপুর, মণিপুর’।
মোদী বলেন, ‘‘কংগ্রেস নেতারা যা বলছেন, তাতে শোলে ছবিকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে। ১৩টি রাজ্যে একটিও আসন পায়নি কংগ্রেস। তাতে কী, হিরো তো আছে! ’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy