সম্প্রতি কলকাতার একটি বিদ্যালয়ে আয়োজিত শাস্ত্রীয় সঙ্গীত সম্মেলনের উদ্বোধনী মুহূর্তে সরোদে প্রথমে রাগ ললিত, পরে আভোরি হংসধ্বনি ও রাগ সরস্বতী বাজিয়ে শোনান উস্তাদ আমজাদ আলি খানের পুত্র আমান আলি বঙ্গশ। তাঁর সঙ্গেই আলাপ জমল বেশ খানিকটা সময়। ছোট ভাইয়ের কাছে কী শেখেন, কেন বিয়ে করেননি, মার্গসঙ্গীতের ঘরের খবর নিয়ে অকপট আমান।
প্রশ্ন: এই যে আজও প্রায় সব সময় বাবার নাম ছুঁয়ে আপনার নাম উচ্চারণ, কোন চোখে দেখেন আপনি? আশীর্বাদ না অভিশাপ?
আমান: আশীর্বাদই হবে। কারণ, এত বড় বড় সঙ্গীতকার রয়েছেন। আমিও রেওয়াজ করে, কঠোর পরিশ্রম করেই এই জায়গায় এসেছি। কিন্তু আমান একজন উস্তাদের সন্তান হওয়ায় পাদপ্রদীপের আলো আমার সহজে জুটেছে। আমজাদ আলি খানের পুত্র না হলে, আজকের এই জায়গায় পৌঁছোতেই আরও ৪০/৫০ বছর লেগে যেত। সুনামকে আপনি কী ভাবে কাজে লাগাবেন, সেটাই দেখার। সুযোগ থাকাটা কোনও দোষের নয়। কিন্তু সেই সুযোগের অপব্যবহার করাটাই অপরাধ। আপনি যে বাড়িতে জন্মেছেন, সেই বাড়ির সম্মান রক্ষা করাটাও আপনার কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। তাই ছোট-বড় সবার কাছে এই বিশ্বাসের জায়গাটা অর্জন করা জরুরি যে, আপনি কঠোর পরিশ্রম করেই কাঙ্ক্ষিত জায়গা পেয়েছেন, শুধু সুযোগের সদ্ব্যবহার করে নয়। জনপ্রিয়তা অতি সামান্য বিষয়, কিন্তু যেটাকে গুরুত্ব দেওয়া দরকার, তা হল ইতিহাস। সচিন তেন্ডুলকর বা বিরাট কোহলির মতো জনপ্রিয়তা হয়তো অনেকেই পাননি, কিন্তু সঞ্জয় মঞ্জরেকর বা রাহুল দ্রাবিড়ের মতো অনেক ক্রিকেটারই ইতিহাসের পাতায় পাকা জায়গা করে নিয়েছেন নিজের কাজ দেখিয়ে। কাজ করে যেতে হবে। আপনার গুরুর কাছ থেকে যে তালিম আপনি পেয়েছেন, তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই আপনার আশু কর্তব্য। জনপ্রিয় আপনি না-ও হতে পারেন, সেখানে ভগবানের হাত থাকে। কিন্তু আপনাকে কাজ এমন ভাবে করতে হবে, যাতে আপনার গুরু আপনার ভূমিকায় গর্ববোধ করেন।

বাবা, ভাই এবং ভাইপোদের সঙ্গে আমান আলি বঙ্গশ। ছবি: সংগৃহীত।
প্রশ্ন: ঘরানাকে আপনি এক প্রকারের সীমাবদ্ধতা মনে করেন। কেন?
আমান: আপনি তবলার ক্ষেত্রে দেখুন, পাঁচটা ঘরানা রয়েছে, প্রত্যেক তবলিয়া যে কোনও ঘরানার বন্দিশ বাজাতে পারেন। কারণ তালবাদ্যের ক্ষেত্রে সেই অগ্রগতি ঘটে গিয়েছে, যেটা সরোদ, সেতারের ক্ষেত্রে আজও ঘটেনি। তাই আমরা অন্য ঘরানার বন্দিশ বাজানো জরুরি মনে করলেও বাজাতে পারি না। ঘরানা হবে সরোদ, সেতার— তা না হয়ে গুরুর শেখানোর পদ্ধতিতেই তা আলাদা রূপ ধারণ করে, হয়ে যায় পৃথক ঘরানা। যেমন উস্তাদ ওয়াজির আলি খাঁ সাহেবের থেকে তালিম নিয়েছেন আমার ঠাকুরদা হাফিজ আলি খাঁ এবং ‘বাবা’ আলাউদ্দিন খান। এক জন চলে গিছেন গ্বালিয়র (বঙ্গশ), অন্য জন মাইহার গিয়ে মাইহার ঘরানার জন্ম দিয়েছেন। গুরুরা সে যুগে কোনও এক শহরে বা নিজের ঘরে বসেই তালিম দিতেন, সেখান থেকেই তৈরি হত ঘরানা। কিন্তু শহর তো কখনও ঘরানা হয়ে উঠতে পারে না! আমার বিশ্বাস, গুরুরাও এ কথা বলবেন যে, সমালোচনা না করে সবাইকে শোনা উচিত, সবার থেকে শেখা উচিত। সঙ্গীতের এই আদানপ্রদানে ছোটর থেকেও বড়রা শিখতে পারে— এটা আমারও বিশ্বাস। বাল গণেশ, বালক গোপালকে যারা চিনতে পেরেছিলেন, তাঁরা তখনই তাঁদের পা ছুঁয়েছেন। তাঁদের বড় হওয়ার জন্য অপেক্ষা করেননি। রশিদ খানের গায়কিকে তারিফ করেছিলেন ভীমসেন যোশী, কৌশিকী চক্রবর্তীর গান শুনে যেমন আমার বাবা বা পণ্ডিত রবিশঙ্কর প্রশংসা করেছিলেন। ছোটকে যাঁরা উৎসাহ দিয়ে, প্রশংসা দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যান, তাঁরাই বড় হতে পারেন। ছোটকে দাবিয়ে রেখে কেউ বড় হতে পারেন না।
প্রশ্ন: আপনি শেখেন আয়ানের কাছ থেকে ?
আমন: আমি আয়ানের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি, শিখিও। ভগবানের একটা রূপ নয়, বহু মানুষের মধ্যেই ঈশ্বরের উপস্থিতি। ও আমার ভাইয়ের চেয়েও বড়, ভালবাসার বন্ধু। আমি যখন ওর দিকে তাকাই, কখনও ওর মধ্যে মাকে খুঁজে পাই, কখনও বাবাকে। বাবা-মায়েরই যোগ্য অংশ।
প্রশ্ন: ওঁর আর আপনার মধ্যে পার্থক্য কোন জায়গায়?
আমান: প্রথম পার্থক্য, ও আমার চেয়ে দু’বছরের ছোট। আর দ্বিতীয়ত, ও বিবাহিত, দুই সন্তানের পিতা। আর আমি বিয়েই করিনি।

প্রশ্ন: কেন করলেন না?
আমান: মেয়েদের জিজ্ঞাসা করুন। করতে তো চাই-ই। এক সময় সব কিছু চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কিছু ঘটনার প্রেক্ষিতে সব থমকে যায়। এখন আসলে সম্পর্ক ভেঙে আইনি জটিলতার যে নমুনা দেখা যায় চারপাশে, তাতেই ভয় করে। এখন এটা আমার বাবা-মায়ের দায়িত্ব। একা তো মরব না, বিয়ে করবও। কিন্তু ভগবান যখন বিয়েতে সায় দেবেন, তখন সব ঠিক আপনা-আপনিই হয়ে যাবে।
প্রশ্ন: ভাল শিল্পী হতে চাইলে সবার আগে ভাল মানুষ হতে হবে, এ কথা আপনি অনেক বার বলেছেন। আপনার ভাবনায় ভাল মানুষের সংজ্ঞা কী?
আমান: যে কারও ক্ষতি করে না, কাউকে দুঃখ দেয় না, মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখে এবং মানুষকে ক্ষমা করে। আজ আমার সামনে যারা ভাল কথা বলে, তারা পিছনে কী বলে, তা আমি জানি। কিন্তু আমি মনে করি, এটা তাদের খামতি, আমার নয়। আমার শক্তি এখানেই যে, আমি সব জেনেও তাদের সঙ্গে হেসেই কথা বলি। কখনও ভাববেন না যে, কেউ শুধু আপনার জন্যেই খারাপ কিছু করছে। আসলে সে নিজে খারাপ, তাই সে খারাপ কাজ করছে। আপনাকে মানতে হবে যে, কেউ যদি আপনাকে খারাপ কথা বলে, তবে সে আপনাকেই খারাপ কথা বলে না, তার আচরণ থেকে জানান দেয়, সে কোন খানদান থেকে এসেছে।
প্রশ্ন: আপনার বাবা বলেন, প্রত্যেক শিশুর কাছে তার মা হচ্ছেন প্রথম গুরু। এই জন্যেই কি আপনি গুরুর নাম নেওয়ার সময় বাবা-মা, উভয়ের নাম নেন?
আমান: অনেক শিশুর মা-ই তাঁর সন্তানকে খুব কষ্ট দিয়েছেন, তাঁরা কখনওই গুরু হওয়ার যোগ্য নন। ভাল মায়েরাই শিশুর গুরু হতে পারেন, যিনি নিজের শরীর থেকে সন্তানের জন্ম দেন এবং সমস্ত প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে তাঁর সন্তানকে রক্ষা করেন। সন্তানকে মানুষ করে তোলেন। সেই সন্তানও বড় হয়ে, মানুষ হয়ে মা-বাবার প্রতি দায়িত্ব পালন করে। রামায়ণ, মহাভারত বা যে কোনও পুরাণে দেখুন, একই বার্তা সর্বত্র— বাবা-মায়ের সেবা যে করবে, সে-ই ঈশ্বরের আশীর্বাদ পাবে।

প্রশ্ন: আপনার মায়ের কথা বলুন…
আমান: আমাদের জীবনে মায়ের অবদান অপরিসীম। বাবা-মায়ের যখন বিয়ে হয়, তখন বাবার সামাজিক অবস্থা ভাল ছিল না। সেই সময় মা পুরো দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে, অসৎ সঙ্গ থেকে বাবাকে রক্ষা করেন। আমার বাবা একজন সিদ্ধপুরুষ। কখনও মাকে আমি তাঁর চেয়ে মহান প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করব না। কিন্তু মা সেই সিদ্ধপুরুষের প্রতি দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করেছেন। ঈশ্বর যখন দেখেন তাঁর কাছের মানুষ কষ্টে আছেন কখনও কখনও দূত পাঠান। আমার মা সেই দেবদূত, আমাদের পরিবারের জন্য।
প্রশ্ন: রাগ শুভলক্ষ্মী। আপনার বাবা আমজাদ আলি খান আপনার মায়ের এক জন্মদিনে এই রাগ সৃষ্টি করে উপহার দিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রীকে। আপনিও কি মায়ের জন্য কখনও এমন উপহার তৈরি করবেন?
আমান: না। আমি তার যোগ্য নই। আমি যা-ই করি, আমার মা তা নিয়ে গর্ববোধ করেন। কিন্তু আমার বাবা যা করতে পারেন, আমি তা করতে পারি না। আমি অন্তর থেকে তাঁর খুব প্রিয় সন্তান হতে চাই, যাতে তিনি সব সময় আমাকে নিয়ে গর্ববোধ করতে পারেন।

প্রশ্ন: জন্মদিনে মোমবাতি নেবানো আপনার বাবার না-পসন্দ। কী ভাবে পালন করা হয় বাড়িতে আপনার জন্মদিন?
আমান: এ সব আমারও পছন্দ নয়। এগুলো পাশ্চাত্যের ভাবনাচিন্তা, যা বাজারের হাত ধরে ভ্যালেন্টাইন্স ডে বা ফাদার্স ডে-র মতো জনপ্রিয় হয়েছে। মোমবাতি নেবানো মানে আপনি মৃত্যুর কাউন্টডাউন করছেন। দিন গুনতে বসে জীবনের আরও একটা বছর কমে গেল, তাই মোমবাতি নিভিয়ে দেওয়া, যে আগুনে আপনাকে জীবনের উপান্তে চড়তে হবে তাকে নিবিয়ে দেওয়া— এ কেমন আনন্দ উদ্যাপন! পুরনো দিনের মানুষেরা জন্মদিনে ক্ষীর খাওয়াতেন, আমিও সেই রীতিতেই বিশ্বাসী।
প্রশ্ন: কলকাতার শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের শ্রোতাদের সম্পর্কে কী বলবেন?
আমান: অন্তর থেকেই কলকাতার শ্রোতারা অত্যন্ত আবেগী এবং স্পর্শকাতর মানুষ। আপনি তাঁদের সম্মান জানালে, তাঁরাও আপনাকে সম্মান দেবেন। তাঁদের সঙ্গে অসভ্যতা করলে তাঁরা তা কখনওই বরদাস্ত করবেন না। কারণ তাঁরা মাথা দিয়ে সিদ্ধান্ত নেন না, নেন অন্তর দিয়ে, আবেগ দিয়ে। সব মিলিয়ে কলকাতার শ্রোতারা আমার অত্যন্ত ভালবাসার। তাঁরা যদি এক বার বুঝে যান যে, আপনি সাধনার সঠিক পথে আছেন, তবে তাঁরা আপনাকে সর্বান্তকরণে সমর্থন করবেন, পাশে থাকবেন।
প্রশ্ন: আপনি তো দেশে-বিদেশে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত পরিবেশন করছেন। শ্রোতাদের কেমন পরিবর্তন নজরে আসছে?
আমান: শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের শ্রোতারা এখন অনেক শৃঙ্খলাবদ্ধ। একটা সময় ছিল, যখন কিছু শ্রোতা পিছন থেকে বলতেন, “দাদা কী করছেন ? মন দিয়ে বাজান একটু।” সেই তালে তাল দিয়ে কিছু শ্রোতা চিৎকার করতেন। এগুলো ঠিক নয়। কারণ, শিল্পীদের সব দিন সমান যায় না। খেলাতেও বিরাট কোহলি একদিন ২ রান করলেন, আবার কোনও দিন শূন্যতে আউট হয়ে গেলেন। তার মানে কি তিনি খারাপ ক্রিকেটার? তা তো নয়! ওই দিনটা ওঁর জন্যে ছিল না। একটা ম্যাচ বা একটা অনুষ্ঠান দিয়ে কাউকে বিচার করা খুব ভুল সিদ্ধান্ত। তাঁর কাজের ধারাবাহিকতাকে যাচাই করা উচিত । কিন্তু আজ শ্রোতারা অনেক শিক্ষিত। অনেক টাকাও বিনিয়োগ হচ্ছে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে— সব মিলিয়ে বেশ উন্নতিই হচ্ছে ।
আরও পড়ুন:
প্রশ্ন: গৌড় সারং আর শুদ্ধ সারং— নাম আলাদা, পেশ করার সময়ও আলাদা। কিন্তু দুটো রাগের রূপ একই রকম। তবে আলাদা কোন জায়গায়?
আমান: যেমন রাগ দরবারি আর পাশাপাশি রাগ জৌনপুরি, স র গ ম একই। কী ভাবে বাজাচ্ছেন, তা দিয়েই আলাদা হয়ে যায়। এগুলো আসলে তালিমের রাগ। যেমন ভীমপলশ্রী, বাগেশ্রী, সাহানা, কাফি— একই স্বর সব রাগের মধ্যে। মেঘ আর মল্লার রাগ যেমন, সুর একই। কিন্ত কী ভাবে রাগের শুদ্ধতা বজায় রেখে বাজাচ্ছেন, তার ওপর এর রূপ নির্ভর করে। মন তো যা খুশি করতে চাইতেই পারে, কিন্তু রাগ তার অনুমতি দেয় না। এখানেই তালিমের গুরুত্ব, ইউটিউব এখানে আধিপত্য খাটাতে পারবে না। ইউটিউব তোমাকে কৌশলগত দিক থেকে সেরা বানিয়ে দিতেই পারে, কিন্তু ব্যাকরণ শেখাতে পারবে না। সেখানে তালিমই একমাত্র রাস্তা। সেখানে তোমায় সেই মহান গুরুর ওপরেই ভরসা রাখতে হবে যিনি তোমাকে আলো দেখাতে পারবেন।
প্রশ্ন: আজকাল অনুষ্ঠানে প্রায়ই দেখা যায়, শিল্পী একটি ছোট ধুন বা দ্রুত বাজিয়ে শুরু করছেন। এই চমকটা কি এই ইউটিউব বা রিলের প্রজন্মের প্রভাব বলে মনে করেন?
আমান: সময় বদলাবে, প্রজন্ম বদলাবে, পছন্দও বদলাবে। খেয়াল করে দেখুন, একটা সময় ছিল, যখন বড় বড় ওস্তাদ তিন মিনিটেই নিজেদের সমস্ত মুনশিয়ানা প্রকাশ করতেন, যেটা তিন ঘণ্টাতেও আজ অনেকে প্রকাশ করতে পারেন না। কারণ, তিন মিনিটের বেশি সময় রেকর্ড করার প্রযুক্তিই তখন আসেনি। কিন্তু পঞ্চাশ বা ষাটের দশকে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে আলাপ, জোড়, ঝালার গুরুত্ব এবং কদর বাড়ল। সঙ্গীতের মাধ্যমে মেডিটেশনের পথ তৈরি হল। আসলে এমন কোনও বই নেই, যেখানে লেখা আছে সঙ্গীতকে কী ভাবে পেশ করতে হবে। মন আর পরিস্থিতি যাতে সায় দেবে, শিল্পী সে ভাবেই বাজাবেন। যেন তা শ্রোতার ভাল লাগে, এটিই শেষ কথা। আমরা নিয়মের বেড়াজালে আটকে গিয়ে অনেক সময় নিজেদের সৃষ্টিশীলতার কথাটাকেই ভুলে যাই। ফলে ওই শিল্পীর যেখানে বৈশিষ্ট্য, যেখানে মুনশিয়ানা— সেটাই আড়াল হয়ে যায়।