যোগ-সূত্র: লখনউয়ে যোগাসনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
মোদীর যোগাসন আর কৃষকের শবাসন।
আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের তৃতীয় বছরে এই টক্করই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গোটা দেশে বিক্ষিপ্ত ভাবে কৃষকদের শবাসন সে ভাবে পাল্টা আন্দোলন হিসেবে দানা বাঁধতে পারল না। আর লখনউয়ে যোগের মূল অনুষ্ঠানটিতে অনেকটাই জল ঢেলে দিল বৃষ্টি। তবু বৃষ্টি মাথায় নিয়ে নরেন্দ্র মোদী কচিকাঁচাদের সঙ্গে কয়েকটি আসন করলেন। মাঝপথে উঠে শেখালেনও তাদের।
লখনউ থেকে দিল্লি, লন্ডন থেকে চিনের প্রাচীর, সিয়াচেন থেকে অরুণাচল— সবই আজ ছুঁয়েছে মোদীর যোগ দিবস। উল্টো দিকে জনা কুড়ি কৃষক শবাসন করেন চৌধুরি চরণ সিংহের সমাধিস্থল দিল্লির ‘কিষাণ ঘাট’-এ। এই প্রথম কোনও প্রতিবাদ সভা হল সেখানে। উত্তরপ্রদেশে বরাবাঁকি-ফৈজাবাদ সড়কে শবাসন করেও কিছু ক্ষণ যান চলাচল আটকে রাখেন কৃষকেরা। মধ্যপ্রদেশের মন্দসৌরে কৃষক-মৃত্যুর প্রতিবাদে সেখানে শবাসন করে কংগ্রেস। কিন্তু তাতে মোদীকে কোনও বড় ধাক্কা দেওয়া যায়নি। কৃষক নেতা শিবকুমার শর্মার বক্তব্য, এটি প্রতীকী লড়াই। সরকারের টনক না নড়লে আরও বড় আন্দোলন হবে।
মোদী এ দিকে সব মন্ত্রী-নেতা, বিভিন্ন দেশের দূতাবাসকে পর্যন্ত আজ যোগে নামিয়ে দিয়েছেন। গুজরাতে অমিত শাহকে যোগাসন করিয়ে তাঁর ঘাম ছুটিয়েছেন যোগগুরু রামদেব। বলেছেন, ‘‘আমি খুশি, অমিত শাহ ওজন কমিয়েছেন, আর তাঁর রাজনৈতিক ওজন বেড়েছে।’’ দিল্লিতে বেঙ্কাইয়া নায়ডুর সঙ্গে আসন করতে আসেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল এবং মোদীর মনোনীত রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী রামনাথ কোবিন্দ। বিদায়ী রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ও রাষ্ট্রপতি ভবনে ঢালাও যোগের আয়োজন করেছিলেন।
আর লখনউয়ে মূল অনুষ্ঠানে সকলকে যোগের সুফল ব্যাখ্যা করে মোদী বলেছেন, ‘‘যোগ হল খাবারে নুনের মতো। নুন সস্তা আর সহজলভ্য। কিন্তু না থাকলে খাবার হয় স্বাদহীন। শরীরেও প্রভাব ফেলে। নুনের উপযোগিতা কেউ অস্বীকার করতে পারেন না। যোগও তেমনই।’’ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, অনেক দেশই ভারতের ঐতিহ্য, ভাষা, সংস্কৃতি জানে না। কিন্তু তারা এখন যোগ দিয়ে ভারতকে চিনছে। যোগ শিক্ষকের চাহিদাও বাড়ছে।
কংগ্রেস অবশ্য মোদীকে বিঁধতে জওহরলাল নেহরু এবং লালবাহাদুর শাস্ত্রীর যোগের ছবি দিয়ে বলেছে, ‘যোগ আসলে সাধনা, প্রচারের সাধন নয়।’ বিরোধীদের এ-ও অভিযোগ, মোদী নিজে আজ বেশি আসন করেননি। টিভিতেও তাঁকে বেশি দেখানো হয়নি।
অথচ বৃষ্টিতে ভিজে আসন করতে হয়েছে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং অশীতিপর রাজ্যপাল রাম নাইককে। ২০ জন ছাত্র-ছাত্রী ভিজে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, কৃষক বিক্ষোভের মতো এ সব দিকেও নজর নেই মোদীর। তিনি ব্যস্ত আত্মপ্রচারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy