কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।
এক সময়ে যে হাতে পাথর ঘুরত, কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের পরে সেই হাত কম্পিউটার চালাতে ব্যস্ত বলে আজ জম্মুতে দাঁড়িয়ে দাবি করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর দাবি, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই উন্নয়নের রাস্তায় হাঁটতে শুরু করেছে উপত্যকা।
দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসেই ২০১৯ সালে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। তার পরে প্রায় চার বছর কেটে গিয়েছে। বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের আগের ও পরের পরিস্থিতির মধ্যে ইতিবাচক পার্থক্য লক্ষ্য করা গিয়েছে বলে আজ জম্মুতে দাঁড়িয়ে দাবি করেন শাহ। তাঁর কথায়, ‘‘পরিস্থিতির অভূতপূর্ব উন্নতি হওয়ায় গোটা দেশ থেকে প্রায় দু’কোটি পর্যটক গত বছরে জম্মু-কাশ্মীর ভ্রমণে গিয়েছেন। ফলে স্থানীয় মানুষের আয়ের সুযোগ বেড়েছে। যে যুবকেরা একসময়ে পাথর ছোড়ায় ব্যস্ত থাকতেন, তাঁরা এখন কম্পিউটার চালাচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, দেশ ও দেশের বাইরে কাশ্মীরের যুবকদের কাজের বাজার ক্রমশ বাড়ছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে স্থানীয় যুব সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান করেন তিনি।
আজ জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুবার্ষিকী। আজ জম্মুতে শ্যামাপ্রসাদের মূর্তিতে মালা দিয়ে দু’দিনের জম্মু-কাশ্মীর সফর শুরু করেন অমিত শাহ। সেখানে একটি জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে শাহ স্বাধীনতার পর থেকে উপত্যকায় জঙ্গি হামলায় যে ৪২ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন সে জন্য গান্ধী-মুফতি ও আবদুল্লা পরিবারকেই দায়ী করেন। কাশ্মীরের ক্ষমতা ওই তিন পরিবারের মধ্যে কুক্ষিগত রাখার প্রচেষ্টায় উপত্যকায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি— এই অভিযোগে সরব হন শাহ। তিনি বলেন, ‘‘গান্ধী, আবদুল্লা ও মুফতি পরিবার গত সত্তর বছর ধরে ক্ষমতা ধরে রাখার লক্ষ্যে পঞ্চায়েত ভোট করতে দেয়নি। যাতে নিচুতলা থেকে নতুন নেতৃত্ব উঠে এসে তাঁদের মৌরসীপাট্টায় ধাক্কা না দেন।’’ তাঁর দাবি, নরেন্দ্র মোদী ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হয়েই জম্মু-কাশ্মীরে পঞ্চায়েত নির্বাচন করিয়েছিলেন। শাহ ওই দাবি করলেও, বিরোধীদের পাল্টা বক্তব্য, ২০১৯ সালে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের সঙ্গেই জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা ছিনিয়ে নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করে কেন্দ্র। সে সময়ে অমিত শাহ সংসদে দাঁড়িয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, উপত্যকায় শান্তি ফিরলেই ভোট করে ফের রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এখন অমিত শাহ যখন উপত্যকায় শান্তি ফেরার বিষয়ে জনসভায় দাবি করছেন, তখন কেন উপত্যকায় ভোট করানো হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে উপত্যকায় শুরু হচ্ছে অমরনাথ যাত্রা। সূত্রের মতে, দু’দিনের সফরে ওই যাত্রার নিরাপত্তার দিকগুলি খতিয়ে দেখার কথা রয়েছে শাহের। সূত্রের মতে, গত কাল পরিস্থিতি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বালতাল এলাকায় যাওয়ার কথা রয়েছে শাহের। সূত্রের মতে, যাত্রী সুরক্ষার বিষয়টি বাস্তবে কতটা রূপায়িত হয়েছে তাই খতিয়ে দেখতে বালতাল যেতে পারেন শাহ। সেখান থেকে দিল্লি ফিরে এসে মণিপুর নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে বসার কথা রয়েছে শাহের। আজ রাতে শ্রীনগরে উপত্যকার নিরাপত্তা পর্যালোচনা করতে বৈঠক করেন শাহ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy