Advertisement
E-Paper

সভাপতি: জবাব আটকে মোদী ও ভাগবত সাক্ষাতে

দুই শীর্ষ নেতার বৈঠক হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় ছিল ক’দিন ধরেই। একটি সূত্রের মতে, মোদীর সঙ্গে ভাগবত যাতে বৈঠক না করেন, তার জন্য সওয়াল করেছিল আরএসএসের একাংশ।

(বাঁ দিকে) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

অনমিত্র সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৫ ০৬:৫৯
Share
Save

জে পি নড্ডার পরে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি কে হবেন, তা নিয়ে মতানৈক্য অব্যাহত আরএসএস ও বিজেপির। এই আবহে সব ঠিক থাকলে, আগামী ৩০ মার্চ নাগপুরে আরএসএসের একটি অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবতও। বিজেপি সূত্রের মতে, আশা করা হচ্ছে, ওই বৈঠকের পরেই পরবর্তী বিজেপি সভাপতির নাম নিয়ে সমাধানসূত্রে পৌঁছবে দুই শিবির।

দুই শীর্ষ নেতার বৈঠক হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় ছিল ক’দিন ধরেই। একটি সূত্রের মতে, মোদীর সঙ্গে ভাগবত যাতে বৈঠক না করেন, তার জন্য সওয়াল করেছিল আরএসএসের একাংশ। আজ মহারাষ্ট্রের বিজেপি সভাপতি চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে জানিয়েছেন, ৩০ মার্চ নাগপুরে পদে থাকা কোনও প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার হেডগেওয়ারের স্মৃতিমন্দিরে উপস্থিত থাকবেন। থাকবেন মোহন ভাগবতও।

সম্ভাব্য ওই বৈঠকের আগে হঠাৎই দিল্লির রাজনৈতিক অলিন্দে বিজেপি সভাপতি হিসাবে একাধিক নতুন নাম উঠে এসেছে। আগামী বছর তামিলনাড়ুতে নির্বাচন। তাই গোড়া থেকেই দক্ষিণের কোনও নেতাকে বিজেপি সভাপতি করার কথা ভাবা হচ্ছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে, বিশেষ করে বিজেপিতে দক্ষিণের সব থেকে চর্চিত মুখ হলেন নির্মলা সীতারামন। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা তামিলনাড়ুর বাসিন্দা, উপরন্তু তিনি মহিলা।

আজ পর্যন্ত কোনও মহিলা বিজেপি সভাপতি হননি। নির্মলাকে সভাপতি করা হলে দক্ষিণ ভারতকে গুরুত্ব দেওয়ার বার্তার পাশাপাশি মহিলা স্বশক্তিকরণের প্রশ্নে সার্বিক ভাবে অর্ধেক আকাশের কাছেও পৌঁছনো যাবে। তবে সমস্যা হল, অর্থমন্ত্রী হিসাবে নির্মলা খুব সফল না হলেও, তিনি কার্যকারী। সে ক্ষেত্রে তাঁর জায়গায় কে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। বিজেপির সংবিধান অনুযায়ী সাংগঠনিক দিক থেকে ১৮টি রাজ্যে সভাপতি নির্বাচন হলে কেন্দ্রীয় সভাপতির নির্বাচন সম্ভব। এখন পর্যন্ত সভাপতি নির্বাচন হয়েছে ১৩টি রাজ্যে। ফলে সপ্তাহান্তের বৈঠকে নাম চূড়ান্ত হলেও, তা ঘোষণা হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে।

দৌড়ে রয়েছেন আর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব। কিন্তু ভূপেন্দ্র প্রশ্নে আরএসএসের মূল আপত্তির জায়গা হল, তিনি অমিত শাহ ঘনিষ্ঠ। গোড়া থেকেই মোদী-শাহের ঘনিষ্ঠ কাউকে সভাপতি করতে আপত্তি আছে আরএসএসের। তাই গোড়ায় মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহের নামে সহমত জানালেও, সূত্রের মতে, পরে পিছিয়ে আসেন সঙ্ঘ নেতৃত্ব। শিবরাজ নিজে আরএসএস ঘনিষ্ঠ। কিন্তু মধ্যপ্রদেশ ছেড়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার পর থেকে তিনি মোদী-শাহের সঙ্গে দ্রুত ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছেন। যা ভাল ভাবে নেয়নি আরএসএস।

গতকাল এসপি নেতা অখিলেশ যাদব দাবি করেন, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ দিল্লিতে কারও (জে পি নড্ডার) বদলি হিসাবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন। যোগী আরএসএস ঘনিষ্ঠ। হিন্দুত্বের মুখও। তেমনই নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের কাছের লোক তিনি, এমন প্রচারও নেই। বরং দুই নেতার সঙ্গে অম্লমধুর সম্পর্ক যোগীর। ফলে তিনি বিজেপি সভাপতি হলে কট্টর হিন্দুত্ববাদের পথে যেমন এগোতে পারবে বিজেপি, তেমনই শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে গিয়ে অবস্থান নেওয়ার সাহস দেখাতে পারবেন।

আর দু’বছরের মাথায় উত্তরপ্রদেশ নির্বাচন। টানা তিন বার দলকে উত্তরপ্রদেশে জয়ের মুখ দেখালে, ২০২৯ সালের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে যোগ্য দাবিদার যে যোগীই হবেন, তা নিয়ে
বিজেপিতে কারও সন্দেহ নেই। ফলে সভাপতি পদের জন্য যোগী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে পিছিয়ে আসবেন, এমনটি মনে করছেন না রাজনীতিকেরা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mohan Bhagwat PM Narendra Modi BJP RSS

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}