বুধবার লোকসভায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর ‘আচরণ’ নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন স্পিকার ওম বিড়লা। আজ কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধী জোটের সাংসদরা স্পিকারের কাছে পাল্টা অভিযোগ তুললেন, সংসদের কাজকর্ম নিয়ম মেনে চালানো হচ্ছে না।
কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের অভিযোগ, লোকসভায় স্পিকার রাহুল গান্ধীকে তাঁর আচরণ ঠিক করতে বলছেন। কিন্তু কারণ বলছেন না। অথচ বাইরে বিজেপি প্রচার করেছে, রাহুল লোকসভায় তাঁর বোন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার গাল টিপেছিলেন বলে স্পিকার তাঁকে ভর্ৎসনা করেছেন। এর জবাবে আজ কংগ্রেস মুখপাত্রেরা বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বকে কটাক্ষ করেছেন এই বলে যে, যাঁরা নিজেদের বৈবাহিক সম্পর্ক রক্ষা করেন না, তাঁরা কী ভাবে পারিবারিক সম্পর্কের মাধুর্য বুঝবেন!
লোকসভার এই দ্বন্দ্ব প্রকট হয়েছে রাজ্যসভাতেও। কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক জয়রাম রমেশ বুধবারই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ এনেছিলেন। নালিশ ছিল, ইউপিএ জমানায় কংগ্রেস সভাপতি প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল নিয়ন্ত্রণ করতেন, এই অভিযোগ তুলে সনিয়া গান্ধীকে মিথ্যে দোষারোপ করেছেন শাহ। বৃহস্পতিবার সকালেই রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় তা পত্রপাঠ খারিজ করে দেন। শুধু তা-ই নয়। কংগ্রেস সভাপতি ত্রাণ তহবিল পরিচালন পরিষদে ছিলেন বলে শাহের পেশ করা তত্ত্ব তুলে ধরেছেন। স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস নিয়ে বিরোধীদের বিঁধেছেন। রাজ্যসভার এথিক্স কমিটিকে এ বিষয়ে মানদণ্ড ঠিক করতে বলেছেন। কংগ্রেসের পাল্টা অভিযোগ, রাজ্যসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঢোকার সময় এনডিএ সাংসদরা উঠে দাঁড়িয়ে চেয়ারম্যানকেই অপমান করেছেন। লোকসভায় স্পিকারকেও একই ভাবে খাটো করা হয়।
গতকাল বিজেপি রাহুল-প্রিয়ঙ্কার ভিডিয়ো নিয়ে প্রচার করে, রাহুল লোকসভার মধ্যে বোন প্রিয়ঙ্কার গাল টিপেছেন বলে স্পিকারকে সঠিক আচরণ মনে করিয়ে দিতে হয়েছে। আজ স্পিকারের সঙ্গে বৈঠকে এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ। প্রিয়ঙ্কার স্বামী রবার্ট বঢরার মন্তব্য, ‘‘রাহুল, প্রিয়ঙ্কার সম্পর্ক এত মিষ্টি। আমরা পরিবারের লোকেদের সম্মান, স্নেহ দিতে শিখেছি, বিজেপির মতো সম্পর্ক ভাঙি না।’’ কংগ্রেস মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনতে বলেন, ‘‘যিনি নিজের পরিবার ছেড়ে পালিয়েছিলেন, তিনি পরিবারের ভালবাসা কী বুঝবেন! কিন্তু ওম
বিড়লা লোকসভার স্পিকার, তিনি হাতের পুতুল নন।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)