Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
National news

নাম,ধর্ম বদলাতে বলে হেনস্থা দম্পতিকে, হস্তক্ষেপ সুষমার

পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য সস্প্রতি লখনউয়ের পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে গিয়ে তাঁদের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তা আগে কখনও হয়নি বলে জানিয়েছেন তনভি।

পাসপোর্ট দফতরে হেনস্থার শিকার দম্পতি।

পাসপোর্ট দফতরে হেনস্থার শিকার দম্পতি।

সংবাদ সংস্থা
লখনউ শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৮ ১২:৪৯
Share: Save:

ভিন ধর্মে বিয়ে। অতএব নাম এবং ধর্ম বদলাতে হবে। নইলে পাসপোর্ট রিনিউ করা যাবে না। পাসপোর্ট রিনিউ করতে আসা এক দম্পতিকে কার্যত এভাবেই হেনস্থা করছিলেন লখনউয়ের এক পাসপোর্ট আধিকারিক। এই নীতি পুলিশগিরি নিয়েই তোলপাড় হল লখনউ পাসপোর্ট অফিস থেকে বিদেশ মন্ত্রক।

বিষয়টি টুইট করে তনভি সিদ্দিকি নামে ওই মহিলা বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে জানানোর পরেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। তড়িঘড়ি পাসপোর্ট ‘রিনিউ’ করে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এর পরেও প্রশ্ন, তবে কি সরকারি আধিকারিকদের একাংশ নিজেদের নীতিপুলিশের জায়গায় বসাচ্ছেন? নইলে ভিনধর্মে বিয়ের জন্য সকলের সামনে কেন তাঁদের অপমান করা হল?

তনভি এবং আনাস সিদ্দিকির দাম্পত্য জীবন প্রায় ১২ বছরের। তাদের সাত বছরের এক কন্যা রয়েছে। পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য সস্প্রতি লখনউয়ের পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে গিয়ে তাঁদের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তা আগে কখনও হয়নি বলে জানিয়েছেন তনভি। তাঁর কথায়, ‘‘এক জন মুসলিমকে বিয়ের পরে ধর্ম ও নাম না পাল্টালে পাসপোর্ট দেওয়া সম্ভব নয় বলে আমাকে জানানো হয়েছিল। বলা হয়, পাসপোর্ট পেতে হলে সরকারি নথিতে নাম বদলাতে হবে।’’ পাসপোর্ট আধিকারিকের আচরণ নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘ওই অধিকারিক কটাক্ষ করে উচ্চস্বরে কথা বলায় আশেপাশের মানুষ আমাদের দিকে তাকাচ্ছিলেন। এত দিনের বিবাহিত জীবনে এরকম অপমানের মুখে আগে আর পড়িনি।’’ তনভির স্বামী আনাসের অভিযোগ, স্ত্রী নাম না পাল্টানোয় তাঁকে ধর্ম পাল্টানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন ওই পাসপোর্ট আধিকারিক। তাঁকে বলা হয়েছিল, হিন্দুধর্মের নিয়ম মেনে ‘ফেরা’ নিয়ে তনভিকে বিয়ে করতে। আনাসের কথায়, ‘‘ওই আধিকারিক বলেছিলেন, দু’জনের মধ্যে এক জনকে ধর্ম পাল্টাতেই হবে। নইলে পাসপোর্ট রিনিউ করা হবে না।’’

আরও পড়ুন: ‘স্বামী আমার কাছে রাম’, বলছেন প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী

আরও পড়ুন: ছররা বন্দুক নয়, কাশ্মীরে মেপে পা ফেলতে চাইছে কেন্দ্র

কিন্ত প্রশ্ন উঠছে, যে দেশের ব্যক্তি স্বাধীনতা স্বীকৃত অধিকার, মেনে চলা হয় ধর্ম নিরপেক্ষতার আদর্শ, সেই দেশে ভিনধর্মে বিয়ের জন্য কেন এক দম্পতিকে হেনস্থার মুখে পড়তে হবে? তা-ও আবার সরকারি দফতরে। বিষয়টি নিয়ে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে টুইট করেন তনভি। তাঁর প্রশ্ন,‘‘বিয়ের পর নাম পাল্টাব কিনা, সেটা তো আমার নিজের ব্যাপার। কেন পাসপোর্ট অফিস বিষয়টি নিয়ে নাক গলাবে?’’

টুইটের পরেই লখনউয়ের পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করে মন্ত্রক। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত পাসপোর্ট অফিসারকে বদলি করা হয়েছে। বিকাশ মিশ্র নামের অভিযুক্ত পাসপোর্ট অফিসারের দাবি, তিনি ওই দম্পতির সঙ্গে খারাপ আচরণ করেননি। তবে তনভি এবং তাঁর স্বামী নিজেদের নাম ও জন্ম তারিখ আড়ালের চেষ্টা করায়, তিনি পাসপোর্ট আটকে রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Tanvi Seth passport office Sushma Swaraj Lucknow
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE