—প্রতীকী ছবি।
মুসলিম ছাড়া, যাদের পক্ষ থেকে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির সবথেকে বেশি বিরোধিতা হওয়ার সম্ভাবনা ছিল, সেই জনজাতি সমাজকে ওই আইনের বাইরে রাখার প্রস্তাব দেওয়া হল। আজ সংসদীয় আইন মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ওই প্রস্তাব দেন কমিটির চেয়ারম্যান সুশীল মোদী।
সূত্রের মতে, বিহার বিজেপির ওই নেতা উত্তর-পূর্ব এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলের জনজাতি সমাজকে আপাতত অভিন্ন দেওয়ানি বিধির আওতার বাইরে রাখার পরামর্শ দেন। রাজনীতির অনেকের মতে, এ নিয়ে যাবতীয় বিতর্ক হিন্দু-মুসলিমের মধ্যেই যাতে সীমাবদ্ধ থাকে সে লক্ষ্যেই ওই কৌশল নেওয়া হয়েছে। যা ভোটের বাক্সে ফায়দা দেবে বিজেপিকে। প্রসঙ্গত, উত্তর-পূর্বের তিনটি রাজ্য — মেঘালয়, নাগাল্যান্ড এবং মিজোরামের তিন বিজেপি-বান্ধব মুখ্যমন্ত্রীই এই বিধির বিরোধিতা করে বিবৃতি দিয়েছেন।
২০১৮ সালে আইন কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে আলোচনায় বসেছিল কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। এর আগের আইন কমিশন এই মুহূর্তে ওই আইনের কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই বলে জানিয়েছিল। তা সত্ত্বেও বতর্মান আইন কমিশন কেন এ বিষয়ে জনগণের মতামত নিচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস ও ডিএমকের মতো বিরোধী দলের নেতারা। এ বিষয়ে দলের বক্তব্য আলাদা করে কমিটি চেয়ারম্যান সুশীল মোদীর কাছে জমা দেন কংগ্রেস সাংসদ বিবেক তন্খা ও ডিএমকে সাংসদ পি উইলসন। সূত্রের মতে, কংগ্রেসের আর এক সাংসদ মণিকম টেগোর কেন এই সময়ে ওই বিল আনা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই সরকার ওই বিল আনতে চলেছে। সূত্রের খবর, বিলের পক্ষে সওয়াল করলেও, কেন লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে তা আনা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত। শাসক শিবিরের পক্ষে দাঁড়িয়ে ওই বিলের সমর্থনে আজ সরব হন বিএসপি সাংসদ মালুক নগর। তিনি উল্টে বিরোধীদের বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করার সমালোচনা করেন। সূত্রের মতে, বৈঠকে বিলের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে বিজেপির মহেশ জেঠমালানি বলেন, সংবিধান পরিষদের আলোচনায় অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে অপরিহার্য বলা হয়েছিল।
সূত্রের মতে, যে-হেতু জনজাতিদের সাংস্কৃতিক জীবন অনেকাটাই আলাদা, তাই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হলে উত্তর-পূর্ব সহ গোটা দেশের জনজাতিদের ক্ষেত্রে তা কী ভাবে প্রভাব ফেলবে সে বিষয়ে বৈঠকে জানতে চান কংগ্রেস, বিআরএস, ডিএমকের সাংসদেরা। সূত্রের মতে, সে সময়েই চেয়ারম্যান সুশীল মোদী জানান, আপতত অভিন্ন দেওয়ানি বিধির আওতা থেকে জনজাতিদের বাদ দিয়ে আলোচনা করা হোক।
রাজনীতির অনেকের মতে, গোড়া থেকেই জনজাতি সমাজ এর বিরুদ্ধে ছিল। সরকার যদি তাঁদের আইনের পরিধির বাইরে রেখে এগোয়, জনজাতি সমাজের আপত্তির জায়গা থাকবে না। এর ফলে বিতর্ক হিন্দু-মুসলিম সমাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। যাতে ফায়দা হবে শাসক শিবিরের। কিন্তু গোটা দেশের জন্য এক নিয়ম চালু করার লক্ষ্যেই সওয়াল করেছেন নরেন্দ্র মোদী। এখন জনজাতি সমাজ যদি ওই আইনের বাইরে থেকে যায়, তা গোটা দেশের জন্য অভিন্ন আইন কী ভাবে হবে, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy