দুর্নীতি বিরোধী নতুন বিল রাজ্যসভাতেও পাশ হয়ে গেল। —ফাইল চিত্র।
বিধু বিনোদ চোপড়ার ছবি ‘টুয়েল্ভথ ফেল’-এ গ্রাম্য কিশোর তথা ভাবী আইপিএস অফিসারকে এক সৎ পুলিশ কর্তা শিখিয়েছিলেন ‘সিরফ চিটিং মত করনা হ্যায়’। সম্প্রতি সংসদে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরও একই বক্তব্য । তবে তিনি ‘চিটিং’ বা তঞ্চকতা রুখতে শুধু পরামর্শ দিয়ে থামেননি। আরও এক ধাপ এগিয়ে ‘চিটিংবাজ’দের জন্য শাস্তিও নিরূপণ করেছেন। এনেছেন ‘অ্যান্টি চিটিং বিল’ বা তঞ্চকতা বিরোধী বিল। যদিও এই বিল সর্বস্তরের প্রতারণা রুখতে তৈরি করা হয়নি। আপাতত সরকারি পরীক্ষার দুর্নীতি প্রতিরোধ করাই এই বিলের একমাত্র লক্ষ্য। যা শুক্রবার আইন হওয়ার সিঁড়ির শেষ ধাপে পৌঁছল। শুক্রবার রাজ্যসভাতেও ধ্বনি ভোটে পাশ হয়ে গেল সরকারি পরীক্ষার দুর্নীতি দমন বিল।
দেশে সরকারি নিয়োগের পরীক্ষায় দুর্নীতি নতুন ঘটনা নয়। বহুবার হয়েছে। ২০২৩ সালের জুনে এমসের নার্সিং অফিসার নিয়োগের পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। তার আগে ২০১৮ সালে স্টাফ সিলেকশন কমিশনে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। ২০১৩ সালে মধ্যপ্রদেশে হয়েছিল ব্যাপম দুর্নীতি। সেও ছিল সরকারি নিয়োগের পরীক্ষা। তারও আগে ১৯৯৭ সালে আইআইটি-র জয়েন্টের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। আর সম্প্রতি একের পর এক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে বাংলায়। মোদী সরকার সংসদে সরকারি চাকরির পরীক্ষা দুর্নীতি দমন বিল এনেছেন ঠিক তার পরেই এবং লোকসভা ভোটের মুখে।
মোদী বলেছেন, তিনি চান না দেশের ভবিষ্যৎ যে তরুণ-তরুণীরা তাঁদের ভবিষ্যৎ কিছু প্রতারক বা তঞ্চকের কুকর্মের জন্য নষ্ট হোক। বাজেট অধিবেশন চলাকালীন মঙ্গলবারই সেই বিল পাশ হয়েছিল সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায়। শুক্রবার রাজ্যসভাতেও এই বিল পাশ হল। ফলে এই বিলের আইন হওয়ার পথে আর একটিই ধাপ বাকি রইল। এর পরে রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলেই আইনে পরিণত হবে সরকারি চাকরির পরীক্ষার দুর্নীতি প্রতিরোধক বিল।
আইনে পরিণত হলে এই আইনে দোষী সাব্যস্তদের সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং এক কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। নরেন্দ্র মোদী সরকারের দাবি, এই বিল আইন হিসাবে এলে কেন্দ্রের সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস, টুকলির মতো অনিয়মগুলি আটকানো পুরোপুরি সম্ভব হবে।
মঙ্গলবারই লোকসভায় বিলটি পেশ করেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ। বিলটি পেশ করার সময় তিনি বলেন, দেশে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়ম মোকাবিলা করার জন্য এত দিন কোনও আইন ছিল না। এ বার তা রোধ করা সম্ভব হবে। বিলের অধীনে যে সব কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরির কথা বলা হয়েছে সেগুলি হল, ইউপিএসসি, স্টাফ সিলেকশন কমিশন, রেল, ব্যাঙ্ক, ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির মতো পরীক্ষা।
বিলে বলা হয়েছে, যে সমস্ত পরীক্ষার্থী কোনও রকম অসদুপায় অবলম্বন না করেই পরীক্ষা দেন তাঁদের চিন্তার কারণ নেই। যাঁরা প্রশ্নফাঁস, টুকলির মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকেন, তাঁরা কঠোর শাস্তির মুখে পড়বেন। সরকারি পরীক্ষা অনিয়ম প্রতিরোধ বিলে ১৫ রকমের অনিয়মের কথা বলা হয়েছে। তাতে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও তার ফাঁসের চক্রান্ত, প্রশ্নপত্র বা ওএমআর শিট জোগাড় করা, উত্তর ফাঁস, পরীক্ষার প্রক্রিয়ায় কারচুপি, জাল অ্যাডমিট কার্ড বিলি, পরীক্ষার্থীদের অনৈতিক সাহায্য-সহ একাধিক অপরাধ রয়েছে।
তবে এই বিলের অধীনে সমস্ত অপরাধ জামিন অযোগ্য নয়। এই অপরাধের ক্ষেত্রে পুলিশ নিজে থেকে ব্যবস্থা নিতে পারবে। পরোয়ানা ছাড়াও সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে জেরা এবং গ্রেফতার করার ক্ষমতা থাকবে পুলিশের হাতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy