ফাইল চিত্র।
পূর্ব নির্ধারিত সূচি মানলে আজ, অর্থাৎ শুক্রবার শেষ হওয়ার কথা ছিল সংসদের বাদল অধিবেশন। তৃণমূলের অভিযোগ, বিহারে নীতীশ কুমার বিজেপির সঙ্গত্যাগ করায় রাজ্যসভায় হঠাৎ ধাক্কা আসছে আঁচ করে বিজেপি সরকার সময়ের চার দিন আগে কার্যত জোর করেই সংসদ অনির্দিষ্ট কালের জন্য মুলতুবি করে দিল। তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেছেন, “কংগ্রেসের সঙ্গে সমন্বয় করে স্থির হয়েছিল কোনও একটি বিষয় বেছে নিয়ে রাজ্যসভায় প্রস্তাব এনে ভোটাভুটি করানো হবে। উদ্দেশ্য জেডি(ইউ)-র ধাক্কা সামলানোর আগেই কেন্দ্রকে বেকায়দায় ফেলা।” তাঁর কথায়, “যে সংখ্যা তখন সরকারের হাতে ছিল, আমরা হয়তো তাদের রাজ্যসভায় হারিয়ে দিতেও পারতাম। সেই ভয়েই বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে অধিবেশন মুলতুবি করে দিল কাপুরুষ বিজেপি।”
৮ অগস্টের পরে মহরম এবং রাখি পূর্ণিমার জন্য দু’দিন ছুটি ছিল। বিরোধী দলগুলির কাছে সরকার যুক্তি দেখায়, দু’টি বিল পাশ করিয়ে সংসদ মুলতুবি করে দিলে মাত্র এক দিনের জন্য সাংসদদের ফের কাউকে আসতে হয় না। ডেরেকের বক্তব্য, “অধিবেশনের সময় যখন স্থির হয়, তখনই দেশের এই দু’টি বড় উৎসবের তারিখ জানা ছিল। সেই অনুযায়ী তারিখ স্থির করা হয়েছিল। বোঝাই যাচ্ছে বিহারের ঘটনার আঁচ পেয়ে তারা তড়িঘড়ি অধিবেশন বন্ধ করে দিল।”
বিরোধীদের একাংশের মতে এখন রাজ্যসভায় নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার জন্য শীতকালীন অধিবেশনের আগে হাতে অনেকটা সময় পেয়ে যাবে শাসক দল। এখন রাজ্যসভায় ন’টি আসন খালি রয়েছে, যার মধ্যে তিনটি নির্দল। হিসাব অনুযায়ী, সবক’টিই পাবে বিজেপি। সূত্রের খবর, আর দেরি না করে বিজেপি শীতকালীন অধিবেশনের আগে দ্রুত এই আসনগুলি ভর্তি করবে।
তৃণমূলের বক্তব্য, আরও একটি কারণে সংসদের নির্ধারিত শেষ দিনে ধাক্কা দেওয়া যেত সরকারকে। আসনে থাকতেন আনকোরা নতুন চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়, যাঁর সংসদ চালানোর একদিনেরও অভিজ্ঞতা নেই। তা ছাড়া ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ, যিনি আদতে জেডি(ইউ)-র সাংসদ। যিনি নীতীশের সঙ্গে থাকবেন না রাজ্যসভার পদ ধরে রাখবেন, সেই সঙ্কট এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি।
বিরোধীদের বক্তব্য, নীতীশ চলতি মাসের ৯ তারিখ বিজেপি সঙ্গ ছাড়লেও ২ অগস্টই স্পষ্ট হয়ে যায়, বিহারে কী হতে চলেছে। সে দিন জেডি(ইউ) সাংসদ রামনাথ ঠাকুর মূল্যবৃদ্ধির প্রশ্নে কেন্দ্রকে তুলোধনা করেন। সম্মিলিত ভাবে টেবিল চাপড়ে তাঁকে সমর্থন করেন বিরোধী দলের সাংসদেরা। রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, পরে রামনাথের সঙ্গে কংগ্রেস এবং তৃণমূলের সাংসদেরা বিহারের সম্ভাব্য রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। এর পরই তাঁরা হিসাব কষতে থাকেন, কী ভাবে রাজ্যসভায় সংখ্যা কমে যাওয়া এনডিএ-কে বিপাকে ফেলা যায়। অবশ্য এটাও তাঁদের হিসাবে ছিল যে, বিজেডি এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেসের ন’জন করে মোট ১৮ জন সাংসদ এ ক্ষেত্রেও সরকারকে সাহায্য করত। কিন্তু হঠাৎ বিরোধীরা কৌশল করে রাজ্যসভায় প্রস্তাব নিয়ে এলে বিজেডির সবাই সংসদে উপস্থিত না-ও থাকতে পারতেন।
বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য বিরোধীদের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলছেন, সংসদ মুলতুবি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বিরোধী দলনেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে এবং তাঁদের সম্মতি নিয়েই। তা ছাড়া যখন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তখনও বিহারে কোনও পালাবদল ঘটেনি। ফলে এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy