করোনার ধাক্কায় দেশের আমজনতার সঙ্গেই কেঁপে গিয়েছে সংসদও। স্বাধীনতা দিবসের পরেই যাতে সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশন শুরু করা যায়, সে জন্য চেষ্টার অন্ত নেই। লোকসভার স্পিকার এবং রাজ্যসভার চেয়ারপার্সন দফায় দফায় বৈঠক করেছেন নিজেদের মধ্যে এবং সচিবালয়ের কর্তাদের সঙ্গে। সব রকম পথ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কিন্তু সংসদীয় কমিটির সদস্যদের মুখোমুখি বৈঠক ধীরে ধীরে শুরু করার যে পরিণতি দেখা যাচ্ছে, তাতে পুরো মাত্রায় অধিবেশন চালু করা এখনও গভীর জলে বলেই মনে করা হচ্ছে। ভয় পাচ্ছেন খোদ সাংসদরাই।
জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া দলবল সমেত বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে মধ্যপ্রদেশে বিজেপি সরকার গঠন করে ২১ মার্চ। তার ঠিক পরেই সংসদের অধিবেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়। সে দিন দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫০০ ছুঁইছুঁই। তার পর থেকে প্রতিদিন নতুন নতুন রেকর্ড গড়ছে দেশে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা। লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যু। এই অবস্থায় চলতি মাসে সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) বৈঠক হয়েছিল মূল ভবনের প্রশস্ত অ্যানেক্স ভবনের একটি কক্ষে। কিন্তু ওই এক বৈঠকের জেরেই প্রায় সবাই ঘরবন্দি। এই সপ্তাহে বিদেশ এবং শ্রম মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বেশির ভাগ সদস্যের অনুপস্থিতির জন্য বাতিল হয়ে গেল সেই বৈঠক। সূত্রের খবর, পিএসি-র বৈঠকে উপস্থিত এক সরকারি কর্তার কোভিড পজিটিভ ধরা পড়ার পরে উপস্থিত সংসদ সদস্যরা অনেকেই কোয়রান্টিনে চলে গিয়েছেন। ওই কমিটির চেয়ারম্যান, কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরী নিজে কোয়রান্টিনে, তাঁর দিল্লির বাড়িতে। অধীর নিজে এবং বিভিন্ন সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান শশী তারুর, আনন্দ শর্মা এবং জয়রাম রমেশ—এই চার কংগ্রেস সাংসদই চেয়েছিলেন, অনলাইনে এই বৈঠকগুলি হোক। কিন্তু ‘গোপনীয়তা বজায় রাখার স্বার্থে’ তা করা হয়নি।
ঘটনা হল, এই মুহূর্তে অনেক সাংসদই ভয় পাচ্ছেন সংসদীয় বৈঠকগুলিতে যোগ দিতে। সূত্রের মতে, অনেকেই অনেক রকম কারণ দেখাচ্ছেন। বিএসপি-র সাংসদ রীতেশ পাণ্ডে জানাচ্ছেন, এই সময় আলমোড়া থেকে সফর করে দিল্লিতে এসে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে যোগ দেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। কমিটির আর এক সদস্য আরএসপি-র এন কে প্রেমচন্দ্রন তিরুঅনন্তপুরমের নতুন দফার লকডাইনে ঘরবন্দি। বিজেপির পুনম মহাজন জানিয়েছেন, তাঁর ড্রাইভারের মায়ের মৃত্যু হয়েছে কোভিডে। ফলে তাঁদের পরিবার আতঙ্কিত। পরে অবশ্য ড্রাইভারের টেস্ট-এ কোভিড নেগেটিভ দেখা গিয়েছে। আরজেডি-র সাংসদ মিশা যাদব জানিয়েছেন, তাঁর বাড়িতে বাচ্চা রয়েছে। ফলে কোনও ঝুঁকি নিতে তিনি নারাজ।
রাজনৈতিক শিবিরে প্রশ্ন উঠেছে, কুড়ি পঁচিশ বা ত্রিশ জনের কমিটি বৈঠককে ঘিরেই যখন এত ত্রাস, দিনে কয়েক হাজার মানুষের সমাগম হওয়া পূর্ণ অধিবেশন তা হলে কী ভাবে এবং কবে সম্ভব হবে? উত্তর খুঁজছেন, স্পিকার এবং সংশ্লিষ্ট সচিবালয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy