—ফাইল চিত্র।
নেতৃত্বের সক্রিয়তা নিয়ে আগেই প্রশ্ন উঠেছিল। এ বার কংগ্রেসের অন্দরমহল থেকে দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠল।
বিহারের ভোটে কংগ্রেসের খারাপ ফলের জন্যই মহাজোটকে হারতে হয়েছে, এটা স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পরে কপিল সিব্বল অভিযোগ তুলেছিলেন, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সমস্যা নিয়েই মাথাই ঘামাচ্ছেন না। ২০১৪-র লোকসভা ভোটে হারের পরেও আত্মসমীক্ষা করা হয়নি। এ বার কংগ্রেসের আর এক প্রবীণ নেতা পি চিদম্বরম সংগঠনের বেহাল দশা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন। চিদম্বরম বলেছেন, ‘‘আমি গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটকের উপনির্বাচনের ফল নিয়ে বেশি চিন্তিত। এই সব রাজ্যের ফল দেখিয়ে দিয়েছে, হয় বাস্তবের জমিতে দলের কোনও সাংগঠনিক শক্তি নেই। না হলে তা যথেষ্ট দুর্বল হয়ে গিয়েছে।”
বিহারে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েও কেন হারতে হল, তারও ‘সার্বিক পর্যালোচনা’ প্রয়োজন বলে চিদম্বরমের মত। তাঁর কথায়, ‘‘আমার মনে হয়, কংগ্রেস বিহারে নিজের সংগঠনের শক্তির তুলনায় বেশি আসনে লড়েছে। কংগ্রেসকে এমন ২৫টি আসন দেওয়া হয়েছিল, যেগুলি বিজেপি ও তার শরিকরা ২০ বছর ধরে জিতছে। কংগ্রেসের উচিত ছিল, ৭০টির বদলে ওই সব আসনে না-লড়ে ৪৫টি আসনে লড়া।” চিদম্বরমের মতে, বিহারের ভোট দেখিয়ে দিয়েছে, তৃণমূল স্তরে সংগঠন শক্তিশালী হলে সিপিআই-এমএল, এমআইএম-এর মতো ছোট দলও সাফল্য পেতে পারে।
একের পর এক কংগ্রেস নেতা এ ভাবে প্রকাশ্যে মুখ খোলায় স্বাভাবিক ভাবেই গাঁধী পরিবার ও তাঁর আস্থাভাজন নেতারা প্রবল অস্বস্তিতে পড়েছেন। রাহুল গাঁধীর আস্থাভাজন দুই নেতা শক্তিসিন গোহিল ও রাজীব সতাভ অনেক দিন ধরেই বিহার ও গুজরাতের দায়িত্বে। প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা নিজে উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বে। দল পরিচালনা ও সংগঠনের কাজে তাঁকে সাহায্যের জন্য সনিয়া গাঁধীর তৈরি বিশেষ কমিটির সদস্য মুকুল ওয়াসনিক মধ্যপ্রদেশের দায়িত্বে। সেই কমিটির আর এক সদস্য, রাহুলের আস্থাভাজন রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বিহারের ভোট পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। প্রতিটি রাজ্যে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছে।
বিহারে ভোটের আগে সে রাজ্যের প্রাক্তন সাংসদরা শক্তিসিন গোহিলের বিরুদ্ধে টিকিট বণ্টনে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন। হারের পরে গোহিল বলেছেন, “আসন সমঝোতায় কংগ্রেসের ভাগ্যে কঠিন আসন মিলেছিল।” কংগ্রেস সূত্রের খবর, বিহার ভোট ও উপনির্বাচনে খারাপ ফলের পরে এআইসিসি-তে বিহার ও গুজরাতের ভারপ্রাপ্ত নেতা গোহিল ও সতাভ পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, শীর্ষ নেতৃত্ব পদত্যাগকে কোনও সমাধান হিসেবে দেখছেন না।
বিহারের ভোটের আগে কংগ্রেসের ২৩ জন বিক্ষুব্ধ নেতা সনিয়া গাঁধীকে চিঠি লিখে সক্রিয় নেতৃত্ব ও সাংগঠনিক নির্বাচনের দাবি তুলেছিলেন। সভাপতি পদে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হলেও এখনও এআইসিসি অধিবেশনের দিনক্ষণ স্থির হয়নি। এই ২৩ জনের অন্যতম সিব্বল সম্প্রতি মুখ খুলেছেন। কংগ্রেসের অন্দরমহলে ইঙ্গিত মিলছে, ওই ২৩ জন ফের সক্রিয় হয়ে উঠতে পারেন। সিব্বলকে নিশানা করে লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীর মন্তব্য, ‘‘কেউ যদি মনে করেন, কংগ্রেস তাঁর জন্য ঠিক দল নয়, তিনি নতুন দল গড়তে পারেন বা অন্য পার্টিতে যোগ দিতে পারেন।” চিদম্বরম ওই ২৩ জনের বিক্ষুব্ধের দলে ছিলেন না। ফলে তাঁর সমালোচনা নেতৃত্বের অস্বস্তি বাড়িয়ে তুলল অনেকটাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy