Advertisement
E-Paper

হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট: তদন্তের জন্য চাপ বাড়ছে

বিরোধীদের সঙ্গে নিয়ে কংগ্রেস কেন্দ্রের উপরে চাপ বাড়াল। কংগ্রেসের প্রশ্ন, মোদী সরকারের সেবি-র কর্ণধারের ভূমিকা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিতে সমস্যা কোথায়?

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২৪ ০৭:৫৮
Share
Save

এক দিকে মোদী সরকারের কাছে যৌথ সংসদীয় কমিটির তদন্তের দাবি, অন্য দিকে সুপ্রিম কোর্টের কাছে সিবিআই বা বিশেষ তদন্তকারী দলের নেতৃত্বে তদন্তের দাবি।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত গৌতম আদানির শিল্পগোষ্ঠীর ‘শেয়ার দর কেলেঙ্কারি’তে মোদী সরকারেরই নিযুক্ত সেবি-র কর্ণধার জড়িত বলে অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরে আজ বাকি বিরোধীদের সঙ্গে নিয়ে কংগ্রেস কেন্দ্রের উপরে চাপ বাড়াল। কংগ্রেসের প্রশ্ন, মোদী সরকারের সেবি-র কর্ণধারের ভূমিকা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিতে সমস্যা কোথায়?

মোদী সরকার অবশ্য কার্যত স্পষ্ট করে দিয়েছে, যৌথ সংসদীয় কমিটি বা জেপিসি-র দাবি মানা হবে না। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু কংগ্রেসের বিরুদ্ধেই দেশবিরোধী শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করার অভিযোগ তুলেছেন। বিজেপির সদর দফতর থেকে দলের নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ অভিযোগ তুলেছেন, কংগ্রেস দেশে ‘অর্থনৈতিক নৈরাজ্য’ ও ‘অর্থনীতিতে অস্থিরতা’ তৈরির ষড়যন্ত্র করছে। রবিশঙ্করের দাবি, আমেরিকার সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শেয়ার দরে কারচুপির সঙ্গে শেয়ার বাজারেরই নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি-র কর্ণধারের জড়িত থাকার যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, তা পুরোটাই কাল্পনিক। আমেরিকার ধনকুবের জর্জ সোরোস এই হিন্ডেনবার্গে অন্যতম লগ্নিকারী। তিনি ভারতের বিরুদ্ধে নিয়মিত প্রচার চালান। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের হুঁশিয়ারি, হিন্ডেনবার্গের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।

কংগ্রেসের সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল আজ জানিয়েছেন, মোদী সরকার জেপিসি-র দাবি না মানলে দেশ জুড়ে আন্দোলন হবে। কংগ্রেসের দাবি, জেপিসি তদন্ত হলেই সমস্ত তথ্য প্রকাশ্যে আসবে। কারণ প্রথমে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শেয়ার দরে কারচুপির অভিযোগ উঠেছিল। সেবি সে ক্ষেত্রে তদন্তই করতে চায়নি। আদানিদের বিরুদ্ধে রাজস্ব-গোয়েন্দা বাহিনীর তদন্তও ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে। এখন হিন্ডেনবার্গের দাবি, আদানির শেয়ার দরে কারচুপির সঙ্গে সেবি-র কর্ণধার মাধবী পুরী বুচেরই আর্থিক স্বার্থ জড়িত। আরজেডি সাংসদ মনোজ কুমার ঝা-র যুক্তি, ‘‘এই অভিযোগ ওঠার পরে সরকারেরই তো উচিত ছিল সেবির কর্ণধারকে ইস্তফা দিতে বলে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া। শেয়ার বাজারে লগ্নিকারীদের আস্থা বজায় রাখতে এখনই জেপিসি-র ঘোষণা করা উচিত।’’

লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী রবিবারই প্রশ্ন তুলেছিলেন, শেয়ার বাজারে ধস নামলে এবং তাতে লগ্নিকারীদের টাকা মার গেলে তার দায় কি প্রধানমন্ত্রী বা সেবি-র কর্ণধার নেবেন? আজ শেয়ারবাজারে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার দর পড়েছে। পরে কিছুটা ঘুরেওদাঁড়িয়েছে। বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালবীয়ের প্রশ্ন, রাহুল গান্ধীর যদি শেয়ার বাজারের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই এতই প্রশ্ন থাকে, তা হলে তিনি নিজে শেয়ার বাজারে লগ্নি করেছেন কেন? রাহুলের ঘোষিত সম্পত্তির ৪৩ শতাংশই শেয়ার বাজারে রয়েছে। চলতি বছরের ১৫ মার্চ পর্যন্ত হিসেব অনুযায়ী, শেয়ারে রাহুলের ৪.৩ কোটি টাকার লগ্নি রয়েছে।মিউচুয়াল ফান্ডে ৩.৮ কোটি টাকার লগ্নি রয়েছে। ১৫ লক্ষ টাকা তিনি গোল্ড বন্ডে লগ্নি করেছেন।

আজ অবশ্য অর্থ মন্ত্রকেরই প্রাক্তন আমলা ই এ এস শর্মা অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে চিঠি লিখে বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, সেবি-র কর্ণধার মাধবী বুচের বিরুদ্ধে অভিযোগ সঠিক হলে গত কয়েক বছরে সেবি-র যাবতীয় তদন্ত আবার নতুন করে করতে হবে। তাঁর দাবি, মোদী সরকার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে অনুরোধ জানাক, তিনি যেন একজন বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্ত কমিশন গঠন করেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Hindenburg Research JPC Gautam Adani Sebi

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}