Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Glacial lake

হিমবাহ হ্রদের কারণে উত্তরাখণ্ডের এক-তৃতীয়াংশ বিপজ্জনক, ফের বিপর্যয়ের আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের

বিজ্ঞানীদের দাবি, হিমালয় অঞ্চলে ৫ হাজার হিমবাহ সৃষ্ট হ্রদ রয়েছে। তার মধ্যে ৫০০-র বেশি হ্রদ উত্তরাখণ্ডেই।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৪:৫১
Share: Save:

এক সপ্তাহ আগে ঘটে যাওয়া বিপর্যয়ই শেষ নয়, এর থেকেও ভয়াবহ বিপর্যের মুখে পড়তে পারে উত্তরাখণ্ডের এক-তৃতীয়াংশ অঞ্চল। আর সে ক্ষেত্রে দায়ী হবে হিমবাহ থেকে সৃষ্ট বন্যা। আশঙ্কা প্রকাশ করে এমনই দাবি করলেন এক দল বিজ্ঞানী।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি নন্দাদেবী পাহাড় থেকে তুষারধস নেমে এসে হড়পা বানের সৃষ্টি করে ধৌলিগঙ্গা এবং ঋষিগঙ্গায়। যার জেরে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চামোলি জেলার জোশীমঠ, তপোবন এবং বিষ্ণুপ্রয়াগ। শনিবার পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে ৩৮ জনের দেহ। এখনও নিখোঁজ দেড় শতাধিক মানুষ।

বিজ্ঞানীদের দাবি, ভারতীয় ভূখণ্ডের হিমালয় অঞ্চলে ৫ হাজার হিমবাহ সৃষ্ট হ্রদ রয়েছে। তার মধ্যে ৫০০-র বেশি হ্রদ রয়েছে শুধুমাত্র উত্তরাখণ্ডেই। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, উত্তরাখণ্ডের ৭৮টি তহশিলের মধ্যে ২৬টি হিমবাহ সৃষ্ট হ্রদের কারণে ভয়াবহ বন্যার মুখে পড়তে পারে। যাকে ভূগোলের পরিভাষায় ‘গ্লেসিয়াল লেক আউটবার্স্ট ফ্লাড’ বলা হয়। বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা নেচার-এর রিপোর্ট বলছে, ১৯৯০-২০১৮ সালের মধ্যে এ ধরনের হ্রদের সংখ্যা ৪৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এক সংবাদমাধ্যমকে পরিবেশ বিজ্ঞানের এক অধ্যাপক এ পি ডিমরি জানিয়েছেন, উত্তরাখণ্ডে যে ভাবে হড়পা বানের সৃষ্টি হয়েছে, আগামী দিনে আরও বেশি মাত্রায় এমন বানের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠছে। তাতে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে ভাতওয়াড়ি, জোশীমঠ এবং দারচুলার মতো এলাকাগুলোর।

সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, উত্তরাখণ্ডে যে সব হিমবাহ সৃষ্ট হ্রদ তৈরি হয়েছে তার মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ হ্রদের বাঁধন খুবই আলগা। যেগুলো অতি সহজে ভেঙে গিয়ে হড়পা বানের সৃষ্টি করতে পারে। পর্বতশিখরে জমে থাকা তুষার উষ্ণায়ণের কারণে দ্রুত গলছে। হিমবাহগুলো গলে যাওয়ার কারণে পাহাড়ের কোলে থাকা হ্রদগুলোর জলস্তর বাড়ছে। হ্রদের আশপাশে জমে থাকা তুষার, পাথর এবং কাদার বাঁধন কোনও কারণে আলগা হয়ে গেলেই হ্রদের জলের চাপ ধরে রাখতে পারে না। ফলে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে হুড়মুড়িয়ে নেমে আসে।

এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পাহাড় কেটে সুড়ঙ্গ তৈরি, বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ প্রকল্প, গাছ কাটা এবং লাগামহীন পর্যটকদের আনাগোনার মতো বিষয়গুলো। আমেরিকার এক সংবাদ সংস্থা সিএনএনএন এক রিপোর্টে বলেছে গত শতকের সাতের দশকে ‘চিপকো’ আন্দোলনের ধাত্রীভূমি বলে পরিচিত উত্তরাখণ্ডের অলকানন্দা উপত্যকার ওই গ্রামের লোকজন আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, যথেচ্ছ গাছ কাটা, যেখানে-সেখানে সেতু তৈরি, বাঁধ দেওয়া অথবা পর্যটকদের আনাগোনায় রাশ টানা না হলে বড়সড় বিপর্যয়ের মুখে পড়বে উত্তরাখণ্ড। সে সময় এই গ্রামের বাসিন্দাদের আন্দোলেনর চাপেই মূলত ১৯৮০ সালে বনআইন পাশ হয় সংসদে। তার পর থেকে এই গ্রামের বাসিন্দারা লাগাতার প্রকৃতি ধ্বংস করার বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন। কিন্তু, তাঁদের কথায় কোনও হেলদোল হয়নি। উত্তরাখণ্ডের সাম্প্রতিক বিপর্যের পর ফের এক বার ওই সতর্কবার্তার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন অনেকেই।

অন্য বিষয়গুলি:

Uttarakhand Glacial lake
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy