সমুদ্র উত্তাল মুম্বইয়ে। ছবি: পিটিআই।
মহারাষ্ট্র ও গুজরাত উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘নিসর্গ’। ক্রমশ তার শক্তিও বাড়ছে। আরব সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ইতিমধ্যেই প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে (সাইক্লোনিক স্টর্ম) পরিণত হয়েছে। সেটি ঘণ্টায় ১১ কিলোমিটার বেগে উত্তর অভিমুখ বরাবর এগোচ্ছে।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, আগামী ছ’ঘণ্টার মধ্যেই প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে (সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম) পরিণত হবে। সেটি প্রথমে উত্তর অভিমুখে এবং পরে বাঁক নিয়ে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব অভিমুখ বরাবর এগোবে। আগামিকাল অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ‘নিসর্গ’ আছড়ে পড়বে উত্তর মহারাষ্ট্রের হরিহরেশ্বর এবং দক্ষিণ গুজরাত উপকূলের দমনের মাঝে। আছড়ে পড়ার সময় ঝড়ের ঘূর্ণনের গতিবেগ থাকবে ঘন্টায় ১০০-১১০ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ গতি হবে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার।
সকাল সাড়ে ১১টায় মৌসম ভবনের বুলেটিন অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টি অবস্থান করছে পানজিম থেকে ২৮০ কিলোমিটার পশ্চিমে, মুম্বই থেকে ৪৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং সুরাত থেকে ৬৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিমে।
ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্র এবং গুজরাতের উপকূলীয় এলাকায় চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মৌসম ভবনের অধিকর্তা মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলেন, “আমাদের পূর্বাভাস অনুযায়ী সবচেয়ে প্রভাবিত হবে মহারাষ্ট্রের উপকূলীয় জেলাগুলো। তার মধ্যে রয়েছে, সিন্ধুদূর্গ, রত্নাগিরি, ঠাণে, রায়গড়, মুম্বই ও পালঘর।”
আরও পড়ুন: ‘ভারত সীমান্তে চিন আগ্রাসী হয়ে উঠছে’, সমালোচনা আমেরিকার
আরও পড়ুন: দেশে করোনা আক্রান্ত দু’লক্ষের কাছাকাছি, মহারাষ্ট্রেই ৭০ হাজার
পরিস্থিতির মোকাবিলায় মহারাষ্ট্র ও গুজরাতে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)-র ৩১টি দল মোতায়েন করা হয়েছে। এনডিআরএফ-এর ডিরেক্টর জেনারেল এস এন প্রধান বলেন, “প্রত্যকটি দলে ৪৫ জন করে সদস্য রয়েছেন। আমরা আশঙ্কা করছি, ৯০-১০০ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণঝড়টি। আমরা সতর্ক রয়েছি। দুই রাজ্যেই আমাদের বাহিনী প্রস্তুত।” সোমবারই রাজ্যে ঝড়ের প্রস্তুতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে কথা বলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে কোঙ্কণ ও গোয়ায়। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে কর্নাটকের উপকূলায় এলাকায়, মধ্য মহারাষ্ট্র এবং মারাঠাওয়াড়ায়। ভারী বৃষ্টি হবে মুম্বই, পালঘর, ঠাণে এবং রায়গড় জেলায়। অন্য দিকে, দক্ষিণ গুজরাতে ভালসার, নভসারি, ডাং, দমন, দাদরা, নগর হাভেলি এবং সুরাতেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
রবিবার থেকেই সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠেছে। মৌসম ভবন জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেল থেকে সমুদ্র আরও উত্তাল হবে। মহারাষ্ট্রের নীচু এলাকাগুলোতে সমুদ্রের জল ঢুকে যাওয়ার সম্ভবানা রয়েছে। সমুদ্রের ঢেউয়ের উচ্চতা দেড় মিটার পর্যন্ত হতে পারে মুম্বইয়ে। ঠাণে, রায়গড় জেলায় এক মিটার পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। মৎস্যজীবীদের ৩ জুন পর্যন্ত সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
করোনার সঙ্গে যখন মরিয়া হয়ে লড়াই চালাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ, ঠিক সেই সময়েই অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আমপান (প্রকৃত উচ্চারণ উম পুন) মরার উপর খাঁড়ার ঘা-এর মতো আছড়ে পড়েছিল। লন্ডভন্ড করে দিয়ে গিয়েছে ঘরবাড়ি গাছপালা। এ রাজ্যের মতো মহারাষ্ট্রও করোনায় নাজেহাল। দেশের মধ্যে শীর্ষে সংক্রমণের নিরিখে। এই অবস্থায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের ধাক্কা সামলাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে উদ্ধব ঠাকরের সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy