নেতাজির মৃত্যু রহস্য বাড়াল ফরাসি ঐতিহাসিকের দাবি।— ফাইল চিত্র।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যু রহস্যের এখনও কোনও সমাধান হয়নি। এ বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য ভারত সরকার তিন তিনটে কমিশন গঠন করেছে। ১৯৫৬-র শাহনওয়াজ কমিশন, ১৯৭০-র খোসলা কমিশন এবং ১৯৯৯-তে মুখার্জী কমিশন। এর মধ্যে শাহনওয়াজ এবং খোসলা কমিশন বলেছিল, ১৯৪৫-র ১৮ অগাস্টে জাপানের তাইপেই-র তাইহোকু বিমানবন্দরে বিমান দুর্ঘটনাতে নেতাজির মৃত্যু হয়েছে। পরবর্তী কালে মুখার্জী কমিশন ওই তত্ত্ব খারিজ করে দেয়। তবে, সরকার অবশ্য মুখার্জী কমিশনের রিপোর্ট মানেনি। এবং এত কিছুর পরও নেতাজির মৃত্যুরহস্য নিয়ে গবেষকদের কৌতুহলের নিরসন হয়নি।
এ বার সেই কৌতুহলে নয়া মাত্রা যোগ করলেন এক ফরাসি ঐতিহাসিক। সম্প্রতি ঐতিহাসিক জে বি পি মোর গোপন ফরাসি নথির ভিত্তিতে দাবি করেছেন, বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়নি। এমনকী তিনি ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত জীবিতও ছিলেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
প্যারিসের এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক মোর সম্প্রতি ১৯৪৭-এর ১১ ডিসেম্বরের ফরাসি গোয়েন্দা রিপোর্ট খতিয়ে দেখেছেন। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে তিনি বলেছেন, ফরাসি গোয়েন্দা নথিতে কোথাও বলা নেই যে, তাইওয়ানের বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়েছে। বরং নথি থেকে স্পষ্ট, ১৯৪৭-এর ডিসেম্বরেও জীবিত ছিলেন নেতাজি।
আরও পড়ুন: কুলভূষণের প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ পাকিস্তানের সেনা আদালতে
‘সুভাষ চন্দ্র বসু সংক্রান্ত আর্কাইভাল তথ্য’ নামক ওই গোপন রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে তাঁর আরও দাবি, জীবিত অবস্থাতেই পালিয়ে গিয়েছিলেন নেতাজী। তবে কীভাবে চলে যান, তা উল্লেখ করা হয়নি রিপোর্টে। গোয়েন্দা নথি অনুসারে, ১৯৪৭-র ডিসেম্বরেও তাঁর হদিশ পাওয়া যায়নি। মোর বলেছেন, ওই রিপোর্টে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সুভাষ চন্দ্র ছিলেন ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লিগের প্রাক্তন প্রধান ও জাপানি সংগঠন হিকারি কিকানের সদস্য।
সায়গন থেকে টোকিও যাওয়ার পথে নেতাজির মৃত্যু হয়েছিল বলে জাপান ও ব্রিটিশরাও ঘোষণা করেছিল। তবে ফরাসি সরকার এ বিষয়ে নীরবতাই বজায় রেখেছে। যদিও চারের দশকে ভিয়েতনাম অথবা ইন্দোচিন ছিল ফরাসি উপনিবেশ। এই বিষয়টি উল্লেখ করে মোর দাবি করেছেন, জাপানের বিপর্যয় এবং ১৯৪৫-এর ১৫ অগস্ট জাপানের আত্মসমর্পণের পরই ফরাসিরা ব্রিটিশ বাহিনী সহ সায়গনে আসে এবং এখানকার নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে তুলে নেয়। কিন্তু ফ্রান্স কখনই নেতাজির মৃত্যু সংক্রান্ত ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেনি। এমনকী, বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যুকে সমর্থনও জানায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy