নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
বর্তমান নেপাল সরকার ক্রমশ চিনের হাতের মুঠোয় চলে যাচ্ছে। এই অবস্থায় দ্রুত কাঠমান্ডুর সঙ্গে দিল্লির সনাতন ‘রোটি-বেটি কা রিস্তা’ ফিরিয়ে আনতে মরিয়া নরেন্দ্র মোদী সরকার। সূত্রের খবর, এ জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকগুলিকে জরুরি নির্দেশও পাঠিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
আগামিকাল তিন দিনের ভারত সফরে আসছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী খড়্গ প্রসাদ ওলি। দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে এটি তাঁর প্রথম বিদেশ সফর। চিন-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ওলির এই সফরে নেপালকে কূটনৈতিক উপঢৌকন দেওয়ার প্রশ্নে কার্পণ্য করতে চাইছে না নয়াদিল্লি।
ওলি-র আগের দফার (২০১৫-র অক্টোবর থেকে ২০১৬-র অগস্ট পর্যন্ত) প্রধানমন্ত্রিত্বের সময় ভারত-নেপাল সম্পর্ক অভূতপূর্ব তলানিতে এসে ঠেকেছিল। সে সময় মদেশিয় বিক্ষোভের সময় নেপালে ভারত-বিরোধী মনোভাব চরমে ওঠে। যার জের এখনও চলছে বলেই মনে করা হচ্ছে। বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, সে সময় অবরোধের কারণে ভারতের তরফ থেকে নেপালে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য রফতানি বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু ওলি সরকার নেপালবাসীর কাছে বিষয়টিকে তুলে ধরে ভারত-বিরোধিতার মোড়কে।
ভারতীয় কূটনীতিবিদদের একাংশ মনে করেন, নেপালে দীর্ঘদিনের অনুন্নয়ন, বেকারি, বেহাল পরিকাঠামোর ফলে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, তার মুখ সুকৌশলে এক দিকে ঘোরানোর প্রয়োজন ছিল। দু’বছর মদেশিয়দের বিক্ষোভ সেই জমে থাকা বারুদে আগুন জ্বেলে দেয়। তখনই আসরে নামে চিন। নিত্যপ্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে চিনের উপর নেপালের নির্ভরশীলতা শুরু হয় ওলির আমলেই।
কূটনৈতিক মহলের একাংশের বক্তব্য, নেপালে মাওবাদী এবং কমিউনিস্টদের এক মঞ্চে এনে সরকার গড়ার যে নকশা, তার পিছনে বেজিংয়ের যথেষ্ট অবদান রয়েছে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৈরি করতে ২১০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেওয়া থেকে শুরু করে পরিকাঠামোয় বড় বড় চিনা প্রকল্প নেপালে রমরম করে চলছে। চিন-নেপাল সামরিক মহড়াও হয়েছে এই প্রথম।
বিদেশ মন্ত্রকের তরফে ঘরোয়া ভাবে বলা হচ্ছে, ‘চিন নেপালে যা করছে, তা নিছক মানবিক কারণে— এমনটা কেউই বলবে না’। এই অবস্থায় চিনা প্রভাবের সঙ্গে টক্কর দিতে বেশ কিছু প্রস্তাবিত প্রকল্পের দ্রুত বাস্তবায়নে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ হচ্ছে। এই প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে ৫৬০০ ওয়াটের পঞ্চেশ্বর বিদ্যুৎ প্রকল্প। জোগবানি থেকে বিরাটনগর রেললাইন, বীরগঞ্জ এবং বিরাটনগরে সুসংহত চেকপোস্ট, তরাই সড়ক প্রকল্প, পশুপতিনাথ মন্দির সংলগ্ন এলাকায় পান্থশালা নির্মাণের কাজ যাতে দ্রুত শেষ হয়, সে জন্য বাড়তি সক্রিয় হবে নয়াদিল্লি। নতুন কয়েকটি চুক্তিও সই হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy