অঙ্কিতার খুনের ঘটনার জেরে বিতর্ক দানা বেঁধেছে ঝাড়খণ্ড জুড়ে। ছবি: সংগৃহীত।
দুমকার তরুণী অঙ্কিতা সিংহের খুনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করল জাতীয় মহিলা কমিশন। এ বিষয়ে ঝাড়খণ্ড পুলিশের ডিজির রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। দুমকায় নিহত দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার পরে মহিলা কমিশনের সদস্যা শালিনী সিংহ বলেন, ‘‘আমরা ডিজিপির কাছে রিপোর্ট চেয়েছি। আমরা এখানে ঘটনার প্রাথমিক প্রতিবেদন সংগ্রহ করতে এসেছি।’’
প্রসঙ্গত, অঙ্কিতা হত্যাকাণ্ডে ইতিমধ্যেই ঝাড়খণ্ডের স্বরাষ্ট্র সচিব এবং পুলিশের ডিজিকে তলব করেছে ঝাড়খণ্ড হাই কোর্ট। জাতীয় শিশু অধিকার কমিশনের একটি দলও দুমকায় গিয়ে অঙ্কিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছে। অঙ্কিতা খুনে ধৃত দু’জনের বিরুদ্ধে পকসো আইন প্রয়োগের বিষয়েও সক্রিয় হয়েছে ঝাড়খণ্ড পুলিশ।
প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় গত মঙ্গলবার (২৩ অগস্ট) ভোররাতে দুমকার দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী অঙ্কিতার গায়ে পেট্রল ঢেলে শাহরুখ নামে এক যুবক আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া ওই তরুণীকে ভর্তি করানো হয়েছিল দুমকা মেডিক্যাল কলেজে। পরে তাঁকে রাঁচীর রাজেন্দ্র ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই রবিবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।
ঘটনার পরেই শাহরুখকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সোমবার তার সহযোগী নইম খান ওরফে ছোটুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে কিছু দিন আগেই অঙ্কিতার পরিবার শাহরুখের বিরুদ্ধে হুমকির অভিযোগ তুলে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের অভিযোগকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। দুমকার ডিএসপি নূর মুস্তাফা এফআইআর দায়ের না করে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। এই অভিযোগ সামনে আসার পরেই হেমন্ত সোরেন সরকার মুস্তাফাকে সাসপেন্ড করেছে।
এরই মধ্যে অঙ্কিতা খুনের ঘটনায় ধৃত শাহরুখ এবং নইমের বিরুদ্ধে কট্টরপন্থী গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগের কিছু তথ্য মিলেছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
অঙ্কিতার চিকিৎসাতেও গাফিলতি হয়েছিল বলে অভিযোগ তুলেছে সে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। সম্প্রতি, নূপূর শর্মার মন্তব্যের পর রাঁচীতে বিক্ষোভের সময় পুলিশের গুলিতে আহত বিক্ষোভকারীদের এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে দিল্লি পাঠানো হয়েছিল বলে দাবি করে বিরোধী দলনেতা বাবুলাল মরান্ডীর প্রশ্ন, অঙ্কিতার চিকিৎসার ক্ষেত্রে কেন সেই ‘তৎপরতা’ দেখায়নি হেমন্ত সরকার?
মুখ্যমন্ত্রী হেমন্তের বিরুদ্ধে লাভজনক পদের অভিযোগ এবং একাধিক বিধায়কের শিবির-বদলের জল্পনায় চাপে রয়েছে ঝাড়খণ্ডের শাসকজোট। ভাঙনের ভয়ে বিধায়কদের পাঠানো হয়েছে পাশের রাজ্য ছত্তীসগঢ়ে। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় মহিলা কমিশন এবং শিশু অধিকার কমিশনের হস্তক্ষেপ হেমন্ত সরকারের বিড়ম্বনা বাড়াল বলেই মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy