Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Narendra Modi

বঙ্গ-ভোটেও কি টিকার ‘টোপ’, সমস্যা বিস্তর 

একটি মাত্র রাজ্যে নির্বাচন হওয়ায় বিহারবাসীর জন্য করোনার টিকা বিনামূল্যে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে অসুবিধে হয়নি প্রধানমন্ত্রীর।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:৪৩
Share: Save:

বিহার নির্বাচনের আগে রাজ্যবাসীর জন্য বিনামূল্যে করোনার টিকা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জেতার পরে প্রধানমন্ত্রীর সেই প্রতিশ্রুতি পালন করার আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। এ দিকে বছর ঘুরলেই পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি বঙ্গবাসীও নির্বাচনের সুবাদে কোভিডের টিকা সওগাত পেতে চলেছেন? বিজেপি শিবির বলছে, বিষয়টি দলের মাথায় রয়েছে। বঙ্গের ভোটারদের আস্থা অর্জনে বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করতেই পারে দল।

যদিও সমস্যা অন্যত্র। করোনা অতিমারির আবহে প্রথম যে রাজ্যে নির্বাচন হয়েছিল, তা ছিল বিহার। একটি মাত্র রাজ্যে নির্বাচন হওয়ায় বিহারবাসীর জন্য করোনার টিকা বিনামূল্যে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে অসুবিধে হয়নি প্রধানমন্ত্রীর। কিন্তু আগামী এপ্রিল-মে মাসে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গেই ভোট হতে চলেছে অসম, কেরল, পুদুচেরি, তামিলনাড়ুর মতো একাধিক রাজ্যে। ফলে পশ্চিমবঙ্গের জন্য বিনামূ্ল্যে করোনার টিকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে প্রশ্ন উঠবে ভোটমুখী অন্য রাজ্যগুলিতে।

বিজেপির এক নেতার কথায়, “নিরপেক্ষতা বজায় রেখে ভোটমুখী পাঁচটি রাজ্যেই বিনামূল্যে করোনার টিকা দেওয়ার ঘোষণা করলেও মুশকিল। সে ক্ষেত্রে যে রাজ্যগুলিতে নির্বাচন নেই, তারা সুর চড়াবে। ফলে বিহারের কৌশল আগামী দিনে খাটবে কি না তা ভেবে দেখা প্রয়োজন।”

আরও পড়ুন: ফিউচারকে নিয়ন্ত্রণে অ্যামাজনের প্রচেষ্টা আইন ভাঙার শামিল: আদালত

আরও পড়ুন: ফের কমল সংক্রমণের হার, আশঙ্কা জাগাচ্ছে কলকাতায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা

সমস্যা হল, আগামী মাস থেকে গণটিকাকরণ শুরুর পরিকল্পনা নিলেও এ নিয়ে বিস্তর ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে। প্রথম দফায় যে তিরিশ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া হবে, তাদের মধ্যে এক কোটি স্বাস্থ্য কর্মী ও দুই কোটি পুলিশ-আধা সামরিক কর্মীদের বাদ দিলে বাকি ২৭ কোটিকে কী ভাবে চিহ্নিত করা হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। প্রশ্ন রয়েছে ওই ২৭ কোটি মানুষ বিনামূল্যে টিকা পাবেন, না কি তাঁদের তা কিনতে হবে।

বিভ্রান্ত রাজ্যগুলিও। কেননা গোড়া থেকেই মোদী সরকার জানিয়ে রেখেছে টিকা বণ্টন করবে কেন্দ্র। কোনও রাজ্যের আলাদা করে নিজস্ব টিকা ক্রয় করার প্রয়োজন নেই। এর পিছনে কেন্দ্র কাজের সুবিধার যুক্তি দিলেও বিরোধী রাজ্যগুলির অভিযোগ, রাজ্যগুলিকে কোণঠাসা করে নাম কিনতে চাইছে কেন্দ্র। আপাতত স্বাস্থ্য মন্ত্রকের চিন্তার বিষয় হল, গণটিকাকরণে প্রতিষেধকের দাম একটি বড় ব্যাপার। মোদী সরকার তিরিশ কোটি মানুষকে প্রথম পর্যায়ে টিকাকরণের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে সরকারকে এমন একটি টিকা বেছে নিতে হবে, যা বর্তমান হিমঘর পরিকাঠামোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম। যাতে ওই টিকার সংরক্ষণের জন্য সরকারকে পরিকাঠামো খাতে বাড়তি অর্থ খরচ করতে না হয়। এবং সর্বোপরি যে টিকার দাম তুলনামূলক ভাবে কম।

বর্তমানে টিকার দৌড়ে এগিয়ে তিনটি সংস্থা। ফাইজ়ার, কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন। ফাইজ়ারের টিকার জন্য প্রয়োজন মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার হিমঘর, যা ভারতে নেই। উপরন্তু আমেরিকায় ওই টিকার দাম পড়ছে ১৯.৫০ ডলারের কাছাকাছি। ভারতে ওই টিকা বিদেশ থেকে আমদানি করে ছাড়তে হলে দাম আরও বাড়বে। কোভিশিল্ডের দাম ভারতীয় বাজারে ২০০-২৫০ টাকার কাছাকাছি থাকতে চলেছে। ভারত বায়োটেক এখনও তাদের কোভ্যাক্সিনের দাম সরকারি ভাবে না জানালেও, সংস্থা সূত্রের মতে, তাদের টিকার দাম ১০০ টাকার কাছাকাছি থাকবে। জরুরি ব্যবহারের জন্য ছাড়পত্র পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে কোভিশিল্ড। সে কারণে সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গেই প্রথম দফায় চুক্তির পথে হাঁটার কথা ভাবছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। আগামী জানুয়ারির মধ্যে অন্তত দশ কোটি কোভিশিল্ড টিকা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সিরাম। সূত্রের মতে তার মধ্যে অন্তত ছয় কোটি এ দেশের টিকাকারণে ব্যবহার করার জন্য সিরামের সঙ্গে চূড়ান্ত পর্যায়ের কথাবার্তা শুরু করেছে কেন্দ্র।

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi BJP Free Vaccine to all
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy