দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের শ্রমিকদের ‘বিশ্বকর্মা’ অ্যাখ্যা দিয়ে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছেন মোদী। ফাইল চিত্র।
আজ, ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ৭০ তম জন্মদিন। সকাল থেকেই শুভেচ্ছার বন্যা। অমিত শাহ, রাজনাথ সিংহের মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সহকর্মীরা তো বটেই, বিরোধীপক্ষের রাহুল গাঁধী, অরবিন্দ কেজরীবালের মতো নেতারাও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মোদীকে। ভক্তদের তরফেও শুভেচ্ছা অবিরল। জন্মদিনের সকালে মহালয়ার পাশাপাশি দেশবাসীকে বিশ্বকর্মা পুজোরও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। নিজের টুইটার হ্যান্ডল থেকে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন তিনি। তাতে দেখা যাচ্ছে, দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের শ্রমিকদের ‘বিশ্বকর্মা’ অ্যাখ্যা দিয়ে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছেন মোদী।
বৃহস্পতিবার সকালের সেই পোস্টে মোদী লিখেছেন, ‘‘বিশ্বকর্মা জয়ন্তীতে সকল দেশবাসীকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আজকের দিনটি তাঁদের প্রতি সমর্পিত, যাঁদের কাছে কাজই পুজো। যাঁদের সৃষ্টি মানবতাকে সমৃদ্ধ করে চলেছে।’’ সেই ভিডিয়োতে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন ক্ষেত্রের কর্মীদের বিশ্বকর্মা বলেছেন। ব্রিজ তৈরি, ইঞ্জিনিয়ারিং, রাজমিস্ত্রী, ছুতোর, কুমোর, ইলেকট্রিক কর্মী থেকে রাস্তা তৈরির কাজে যুক্ত মানুষ— সকল পেশার শ্রমিকদেরই দেশগঠনে ভূমিকার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
পোস্ট করার দু’ঘণ্টা পেরনোর আগেই ভিডিয়োটির দু’লক্ষ ‘ভিউ’ হয়েছে। কিন্তু ওই ভিডিয়োয় প্রধানমন্ত্রীর এদিনের বক্তব্যের সঙ্গে বিগত কয়েক মাসে তাঁর সরকারের ভূমিকার মিল পাচ্ছেন না অনেকেই। প্রশ্ন উঠছে, মোদীর নজরে পরিযায়ী শ্রমিকরাও কি ‘বিশ্বকর্মা’? তাঁদের নিয়ে তো তিনি কোনও শব্দ খরচ করলেন না!
विश्वकर्मा जयंती की सभी देशवासियों को बहुत-बहुत शुभकामनाएं। आज का दिन उन लोगों को समर्पित है, जिनके लिए कर्म ही पूजा है, जो अपने सृजन से संपूर्ण मानवता को समृद्ध करते हैं। pic.twitter.com/wO8bQJqRhh
— Narendra Modi (@narendramodi) September 17, 2020
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে লকডাউন জারি হওয়ার পর থেকেই দেশ জুড়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশার চিত্র বারবার ফুটে উঠেছে। ভিন রাজ্যে কাজ এবং রোজগার হারিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের হাজার হাজার কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেঁটে বাড়ি ফেরার ছবি এবং ভিডিয়োয় একটা সময় ভরে গিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়া। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরাতেও তা বন্দি হয়েছিল। হেঁটে বাড়ি ফিরতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পরিযায়ী শ্রমিকদের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় সরব হয়েছিল গোটা দেশ। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদী তা নিয়ে বিশেষ উচ্চবাচ্য করেননি। পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতি সামগ্রিক ভাবে মোদী সরকারের ‘উদাসীনতা’ নিয়ে সে সময় প্রবল সমালোচনা হয়েছিল বিভিন্ন মহলে। এমনকি যখন ‘শ্রমিক স্পেশাল’ ট্রেন চালিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল, তখন সেই ট্রেনের ভাড়া দেওয়া নিয়ে সংশ্লিষ্ট রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে শুরু হয়েছিল চাপানউতোর। বহু পরিযায়ী শ্রমিককে নিজেদের পকেটের টাকা খরচ করে কাটতে হয়েছিল সেই বিশেষ ট্রেনের টিকিট।
আরও পড়ুন: রেলের ঘরেই তো তথ্য শ্রমিক মৃত্যুর, তা হলে?
লকডাউনে পায়ে হেঁটে ঘরে ফিরতে গিয়ে সড়ক বা ট্রেন দুর্ঘটনায় যে সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল, তাঁদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যাপারেও উদাসীনতা দেখিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বস্তুত, গত সোমবারই সংসদে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, লকডাউনে কাজ খুইয়ে বাড়ি ফেরার পথে মোট কত জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে, সে বিষয়ে কোনও তথ্যই তাদের কাছে নেই। অর্থাৎ, রাস্তাঘাটে বেঘোরে নিহত ‘বিশ্বকর্মাদের’ পরিবারের দায় নিজেদের কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলেছে মোদী সরকার। এমনকি লকডাউনে চাষিদের রোজগার মার খাওয়ার পরিসংখ্যানও তাদের কাছে নেই বলে মঙ্গলবার স্বীকার করেছে সরকার।
ফলে টুইটারে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ‘বিশ্বকর্মা’ ভিডিয়োর আন্তরিকতা নিয়েই দেশ জুড়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজপথ সাজাতে ২০ হাজার কোটি! এত খরচ কেন, প্রশ্নের মুখে কেন্দ্র
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy