এআইএমপিএলবি-এর প্রধান মওলানা খালিদ সইফুল্লাহ। — ফাইল চিত্র।
যে কোনও মূল্যে ওয়াকফ বিল বন্ধ করবই! জানিয়ে দিলেন অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড (এআইএমপিএলবি)-এর প্রধান মওলানা খালিদ সইফুল্লাহ। শনিবার কানপুরের এক সভায় এ কথা বলেছেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, মুসলিম ল বোর্ডের সদস্যেরা ওয়াকফ বিল রুখতে নিজের জীবন দিতেও প্রস্তুত।
সইফুল্লাহ বলেন, ‘‘এটা আমাদের কাছে জীবন-মরণের বিষয়। যে কোনও মূল্যে ওয়াকফ বিল আমরা বন্ধ করবই। যদি প্রয়োজন হয়, নিজের জীবন দিতেও দ্বিধা করব না।’’ তাঁর আরও যু্ক্তি, সরকারের একমাত্র লক্ষ্য মুসলিমদের কাছ থেকে ওয়াকফ জমি কেড়ে নেওয়া। ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতা অমুসলিমদের হাতে চলে গেলে মুসলিমদের অধীনে থাকা ওয়াকফ সম্পত্তিও কেড়ে নেওয়া হবে, এমনটাই মনে করছেন সইফুল্লাহেরা। সভায় সইফুল্লাহ বলেন, ‘‘শুধু তামিলনাড়ুতেই ৪,৭৮,০০০ একর মন্দিরের জমি রয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশে বিভিন্ন মন্দিরের মালিকানায় রয়েছে ৪,৬৮,০০০ একর জমি। তা হলে যদি মুসলিমদের কাছে সারা দেশে মাত্র ছয় লাখ একর ওয়াকফ জমি থাকে, তা হলে সমস্যা কোথায়?’’
বিরোধীদের প্রবল আপত্তির মধ্যেই গত ৮ অগস্ট লোকসভায় ওয়াকফ সংশোধনী বিল পেশ করেছিলেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। বিলটি ‘অসংবিধানিক এবং মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপকারী’ বলে অভিযোগ তুলে বিরোধীরা একযোগে তা নিয়ে আপত্তি জানান। দীর্ঘ বিতর্কের শেষে ঐকমত্যের লক্ষ্যে বিলটি যৌথ সংসদীয় কমিটির (জেপিসি)-র কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। তবে কংগ্রেস, তৃণমূল, ডিএমকে, এসপি, আপ, মিম-সহ প্রায় সব ক’টি বিরোধী দলেরই যুক্তি ছিল, ওই বিল সংবিধান-বিরোধী। ওই বিল এক দিকে যেমন মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতা কেড়ে নেবে, তেমনই যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতেও আঘাত করবে। বিলটিতে বলা হয়েছে, আগামী দিনে কোনও সম্পত্তি ওয়াকফ হিসাবে ঘোষণা করার একচ্ছত্র অধিকার আর ওয়াকফ বোর্ডের হাতে থাকবে না। বরং ওই ক্ষমতা তুলে দেওয়া হবে জেলাশাসকদের হাতে। অভিযোগ, ফলে ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যানের থেকেও শক্তিশালী হয়ে উঠবেন জেলাশাসক। যাবতীয় গুরুত্ব হারাবে ওয়াকফ বোর্ড।
সম্প্রতি ওয়াকফ বিল নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি)-র বৈঠকেও চলেছে তুমুল অশান্তি। শুধু বাগ্বিতণ্ডায় সীমাবদ্ধ থাকেনি বৈঠক। বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাদানুবাদের সময় উত্তেজনার চোটে কাচের বোতল ভেঙে জখম হয়েছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি, বৈঠকে অসংসদীয় ভাষা প্রয়োগের জন্য কল্যাণকে এক দিনের জন্য সাসপেন্ডও করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy