উন্নাও ধর্ষণ কাণ্ডে নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করলেন রাহুল গাঁধী। সেই সঙ্গে দলের অন্দরেই ক্ষোভের মুখে পড়লেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।
ধর্ষণে অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গারকে বিজেপি আড়াল করছে, এই কথা কংগ্রেস আগেই বলেছিল। এ বার রাহুল টুইটারে সরাসরি বললেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে
মেয়ের জন্য বিচার চেয়ে সরব হওয়া বাবার উপরে অত্যাচার মানবজাতির পক্ষে লজ্জার বিষয়। আশা করি বিজেপি জমানায় মেয়েদের উপরে অত্যাচার ও আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার বিরুদ্ধে শীঘ্রই অনশনে বসবেন প্রধানমন্ত্রী।’’ বিরোধীদের বাধায় সংসদ না চলার বিরুদ্ধে অনশনে বসার কথা মোদীর। উন্নাও নিয়ে খোঁচায় সেই প্রসঙ্গ জুড়ে বিজেপির অস্বস্তি বাড়াতে চেয়েছেন রাহুল। সেই সঙ্গে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার বক্তব্য, ‘‘যোগী আদিত্যনাথের সরকার রাবণের সরকার। মেয়েদের রক্ষা করতে ব্যর্থ। ওঁর মুখ্যমন্ত্রী থাকার কোনও অধিকার নেই। প্রধানমন্ত্রীর বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও অভিযানের নাম বদলে রাখা উচিত বিজেপি সে বেটি বাঁচাও।’’ উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেতারা চাইছেন, রাহুল উন্নাওয়ে আসুন। তাঁদের দাবি, যোগী আদিত্যনাথ আসলে রাজপুত। তাই রাজপুত কুলদীপ সিংহ সেঙ্গারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। নির্যাতিতার পরিবার দলিত শ্রেণির। এ ক্ষেত্রেও দলিত-বিরোধীর তকমা গায়ে লাগার সম্ভাবনা রয়েছে বিজেপির।
তবে কেবল কংগ্রেসের আক্রমণ নয়, দলের মধ্যেই তোপের মুখে পড়েছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। আজ লখনউয়ে গিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনায় বসেন অমিত শাহ। সেখানে বিজেপির মহিলা শাখার নেত্রীরা জানান, ধর্ষণে অভিযুক্ত বিধায়কের পাশে দল দাঁড়ালে গোটা রাজ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হবে।
এরই মধ্যে আজ স্বামীর নার্কো পরীক্ষার দাবি করেছেন অভিযুক্ত বিধায়কের স্ত্রী সঙ্গীতা সেঙ্গার। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, নির্যাতিতারও একই পরীক্ষা করা হোক। উন্নাও ধর্ষণ কাণ্ডের সত্যিটা তা হলেই জানা যাবে। সঙ্গীতার দাবি, তাঁর স্বামী ও দেওর নির্দোষ। তাঁদের ফাঁসানো হয়েছে। আর নির্যাতিতা ১৮ বছরের মেয়েটির অভিযোগ, তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে উন্নাওয়ের একটি হোটেলে বন্দি করে রেখেছে জেলা প্রশাসন। তেষ্টা মেটানোর জলটুকুও সেখানে নেই।
একটি দাবি অবশ্য অভিযুক্তের স্ত্রী এবং নির্যাতিতা, দু’জনেরই। সেটি সিবিআই তদন্তের। এ দিন রাতে উত্তরপ্রদেশের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি (তথ্য) জানান, ধর্ষণ ও ধর্ষিতার বাবার মৃত্যুর তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়া হবে। গত ২৪ ঘণ্টায় নির্যাতিতা ও তাঁর বাবার দু’টি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে। ক্যামেরার সামনে নির্যাতিতা বলেছেন, ‘‘হোটেল থেকে বেরোতে দেওয়া হচ্ছে না। মোবাইলটা পর্যন্ত চার্জ দিতে পারছি না। অথচ হোটেলে ফোন নেই, টিভি নেই। এমনকী জলও নেই। কোণে কোণে রক্ষী। সেই রক্ষীরা বলছেন, আমাদের সাহায্য করাটা তাঁদের কাজ নয়!’’ গত সোমবার পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয় নির্যাতিতার বাবার। তার আগে এক কাকাও মারা যান। নির্যাতিতার দাবি, তাঁকে খুন করেছিল কুলদীপের ভাই অতুল ও তার দলবল। তিনি বলেন, ‘‘আমাকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে কেন? আমার যে কাকা বেঁচে, ওরা কি তাঁকেও মারতে চায়?’’
আরও পড়ুন: মুরগি-মাজনে রোজগার! পথ বললেন মোদী
কাল একটি নির্যাতিতার বাবারও একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে। বিভিন্ন চ্যানেল জানাচ্ছে, সেটি তোলা হয়েছিল ৩ এপ্রিল। একটি হাসপাতালে রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় মেয়েটির বাবা জানিয়েছিলেন, অতুল নিজের দলবল নিয়ে পিটিয়ে তাঁর এই অবস্থা করেছে। পরিবারের অভিযোগ, মারধরের ঘটনাতেও অতুলের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু উল্টে নির্যাতিতার বাবাকেই গ্রেফতার করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy