নরেন্দ্র মোদী।
হিংসার রেশ এখনও কাটেনি। সংসদ উত্তাল, আলোড়ন আন্তর্জাতিক মহলেও। তার মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়া নিয়ে ষোলো ঘণ্টা ধরে হেঁয়ালি করলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
কাল রাতে আচমকাই লিখলেন, ‘‘রবিবার ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছি।’’ রাত থেকেই নড়েচড়ে বসল নেটের দেওয়াল। এক পক্ষ আর্জি তুলল, ‘নো স্যার’। আর এক পক্ষের যুক্তি, ঠিক করেছেন। বড় বিষাক্ত এ মাধ্যম। তার মধ্যেই রাহুল গাঁধীর খোঁচা মোদীকে: ‘‘সোশ্যাল মিডিয়া নয়, ঘৃণা ছাড়ুন।’’ মানুষ কী ভাবছেন তাঁকে নিয়ে? এই এক বার্তায় অবশ্য মেপে নিয়েছেন মোদী। বুঝতে পেরেছেন, দিল্লির হিংসা নিয়ে তাঁর নীরবতা ঘিরেই যত বিতর্ক। সকালে অধীর চৌধুরী বলেই দিলেন, ‘‘এত দুঃখ হলে পদটিই ছেড়ে দিন না!’’ রাহুল সকালে স্থির করেন, করোনা নিয়ে মোদীর নজর কাড়বেন।
পরিস্থিতি বুঝে সকালে বিজেপি সাংসদদের বৈঠকে মোদীর মুখে এল ‘শান্তি, ঐক্য, সম্প্রীতি’ এবং ‘সবকা সাথ, সবকা বিশ্বাস’, ‘উন্নয়নই একমাত্র মন্ত্র’ জাতীয় নানা কথা। তার পরে করোনা-বৈঠক। অভয়বাণীও শোনালেন। আর তার ফাঁকেই গত ষোলো ঘণ্টার রহস্য উন্মোচন করলেন।
টুইটে লিখলেন, ‘‘নারী দিবসে আমার সোশ্যাল অ্যাকাউন্টগুলি সেই মহিলাদের হাতে তুলে দেব, যাঁদের জীবন এবং কাজ অনুপ্রাণিত করে।’’ প্রশ্ন তুললেন, ‘‘আপনিও কি সে রকম এক মহিলা? কিংবা কাউকে জানেন? তাঁদের লড়াইয়ের কাহিনি জানান।’’ প্রচার শুরু করলেন ‘#শিইন্সপায়ার্সআস’ নামে।
রবিবার, ৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস। মোদী সরকার ১ মার্চ থেকেই নানা কর্মসূচি শুরু করেছে। সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, কোন মহিলাদের নিজের অ্যাকাউন্ট ‘ছেড়ে’ দেবেন মোদী, সে বাছাইও চূড়ান্ত। ‘ওয়াকিবহাল’ এক মন্ত্রীর কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী যখন ‘রবিবার’ বললেন, বোঝা উচিত ছিল মহিলা সংক্রান্ত কিছু ভাবছেন। চারটি অ্যাকাউন্ট মিলে তাঁর ‘ফলোয়ার’ প্রায় ১৪ কোটি। কী করে সব ছেড়ে দেবেন?’’ বিজেপিরই এক নেতা জানাচ্ছেন, চিনের মতো একটি ‘দেশি’ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম তৈরি। অপেক্ষা প্রধানমন্ত্রীর ইশারার।
বিরোধীরা কিন্তু কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না। করোনা-প্রসঙ্গ টেনে রাহুল ফের বললেন, ‘‘দেশে জরুরি অবস্থা, সে সময় সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে ছেলেখেলা বন্ধ করুন।’’ এনসিপির নবাব মালিক বলেই দিলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভক্তরাও সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়লে দেশে শান্তি হত।’’ অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, এ ভাবে একদিনের জন্য নিজের সোশ্যাল অ্যাকাউন্ট ছাড়লে মহিলাদের ক্ষমতায়ন হয় বুঝি? শাহিন বাগের মহিলাদের প্রশ্ন, ‘‘অ্যাকাউন্ট আমাদের দেবেন কি মোদী?’’
তবে আবেদনে সাড়া দিয়ে অনেক মহিলার কাহিনিও পোস্ট হচ্ছে। সে তালিকায় কেউ প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী যশোদাবেনের নামে খোঁচা দিয়ে লিখেছেন: ‘‘স্বামী অনৈতিক ভাবে ছেড়ে গিয়েছেন। তবু কোনও আইনি পদক্ষেপ করেননি। সমাজ অনেক রসিকতা করেছে, তবু নিজের জীবনপথ বেছে নিয়েছেন। এই মহিলাও অনুপ্রেরণা দেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy