Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

বাইকে চড়ে দেশ চক্করে চরণকমল

পথটা দীর্ঘ। শুরু কাশ্মীরের শ্রীনগর থেকে। তার পর জম্মু, চণ্ডীগড়, হরিয়ানা, রাজস্থান, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, গোয়া, কর্নাটক, কেরল, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওডিশা। এত রাস্তা পেরিয়ে শেষমেশ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তমলুক শহরে পৌঁছলেন পঞ্জাবের চরণকমল সিংহ।

চরণকমল সিংহ

চরণকমল সিংহ

আনন্দ মণ্ডল
তমলুক শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৩৬
Share: Save:

পথটা দীর্ঘ। শুরু কাশ্মীরের শ্রীনগর থেকে। তার পর জম্মু, চণ্ডীগড়, হরিয়ানা, রাজস্থান, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, গোয়া, কর্নাটক, কেরল, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওডিশা। এত রাস্তা পেরিয়ে শেষমেশ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তমলুক শহরে পৌঁছলেন পঞ্জাবের চরণকমল সিংহ।

চলতি বছরের ৭ নভেম্বর বাইক নিয়ে ভারতভ্রমণে বেরিয়েছেন বছর পঁয়তাল্লিশের চরণকমল। উদ্দেশ্য, পরিচ্ছন্ন ও সবুজ ভারত তৈরির জন্য সচেতনতার প্রচার। এই বার্তা ছড়িয়ে দিতেই কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী ঘুরছেন তিনি। ইতিমধ্যেই পেরিয়েছেন প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কিলোমিটার পথ।

মঙ্গলবার তমলুক পৌঁছনোর পর তাঁকে সংবর্ধনা দেয় তমলুক পুরসভা, থানা এবং একটি বেসরকারি গাড়ি সংস্থা। রাতটা শহরে কাটানোর পরেই ফের যাত্রা শুরু বুধবার সকালে। এ বার গন্তব্য কলকাতা।

জম্ম অ্যান্ড কাশ্মীর হর্টিকালচার প্ল্যানিং অ্যান্ড মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টের কর্মরত চরণকমল বর্তমানে চণ্ডীগড়ে থাকেন। তাঁর স্ত্রী মনজিৎ কউর জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশে কাজ করেন। এক সময়ে কর্মসূত্রে কলকাতায় দু’বছর কাটিয়েছেন চরণকমল। গাড়ি চালানো তাঁর শখ। ভালবাসেন নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতেও। সেই শখ পূরণের পাশাপাশি দেশ জুড়ে পরিচ্ছনতা ও সবুজায়নের লক্ষ্যে হাতিয়ার করেছেন নিজের বাইকটিকে। দেশের বিভিন্ন শহরে গিয়ে মানুষকে বোঝাচ্ছেন সে কথা। তাঁর কথায়, “বাইক নিয়ে ভারত ঘোরার ইচ্ছে ছিল। সেই লক্ষ্যে দেশের নানা জায়গায় যাচ্ছি। আর মানুষকে বলছি নিজের শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখুন। সবুজের জন্য গাছ লাগাও। এ ভাবেই পরিচ্ছন্ন ও দূষণমুক্ত ভারত গড়ে তোলা যাবে। ভাল সাড়া পেয়েছি।”

এই দীর্ঘ যাত্রাপথটি কেমন? চরণকমল বলেন, “কন্যাকুমারীর কাছে পাশের রাস্তা থেকে আচমকা একটি গাড়ি এসে পড়েছিল। তাকে বাঁচাতে গিয়ে বাইক সমেত পড়ে গিয়ে পায়ে চোট পেয়েছিলাম। এখনও পর্যন্ত আর কোনও বিপদ হয়নি। বরং সব জায়গাতেই মানুষ ভালবাসায় ভরিয়ে দিয়েছে।” রাজ্যের অতিথি হিসেবে চরণকমলকে সম্মান দিয়েছেন পুদুচেরির লেফটন্যান্ট গভর্নর কিরণ বেদী। এ ছাড়া কলকাতার মানুষের ভালবাসাতেও অভিভূত বলে জানান তিনি।

চরণকমলের ১২ হাজার কিলোমিটার যাত্রাপথের অনেকটা বাকি এখনও। তমলুক থেকে কলকাতা হয়ে বিহার, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি ও হিমাচলপ্রদেশ পেরিয়ে ১৩ ডিসেম্বর জম্মুতে পৌঁছবে তাঁর বাইক। বুধবার তমলুক থেকে রওনা হওয়ার আগে চরণকমলকে শুভেচ্ছা জানাতে এসেছিলেন রাষ্ট্রপতি পুরষ্কারপ্রাপ্ত শিল্পী গৌরাঙ্গ কুইল্যা, চিকিৎসক সরোজরঞ্জন জানা, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক গোপাল বন্দোপাধ্যায়, ‘তমলুক বাইকার্স’ সংগঠনের সদস্য অরিজিৎ পাল-সহ শহরের আরও অনেকে।

চরণকমলের এই দীর্ঘ যাত্রা পৃথিবীকে একটু সুন্দর করে তুলতে পারে কি না, সেটাই এখন দেখার।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE