বৃহস্পতিবার ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের সঙ্গে বৈঠক করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি সংগৃহীত।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে ‘গভীর রাজনৈতিক’ কোনও আলোচনা হয়নি বলেই জানালেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। জাতীয় রাজনীতির অলিন্দে ‘তৃতীয় ফ্রন্ট’ নিয়ে চর্চা চলছে। এই আবহে দুই পড়শি রাজ্যের বিজেপি-বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক নিয়ে কৌতূহল ছিল। নবীনের বক্তব্য অনুযায়ী, ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ আলোচনা হয়নি। মমতাও জানিয়েছেন, এটা ‘সৌজন্যের সাক্ষাৎ’। তবে দুই রাজনীতিক, বিশেষত তাঁরা যদি দেশের এমন দু’টি অঙ্গরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন, যেখানে অ-বিজেপি সরকার রয়েছে, বৈঠকে বসলে রাজনীতির আলোচনা হওয়াই স্বাভাবিক। তৃতীয় ফ্রন্ট নিয়ে কিছু কথা হয়েছে কি না, তা জানতে চাওয়ায় প্রকাশ্যে কেউই কিছু বলেননি।
গত মঙ্গলবার ৩ দিনের সফরে ওড়িশা গিয়েছেন মমতা। বুধবার জগন্নাথ মন্দিরে পুজো দেন তিনি। বৃহস্পতিবার নবীনের সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিল তাঁর। সেই মতো ভুবনেশ্বরে বিজেডি প্রধানের বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন তৃণমূলনেত্রী। মমতার ওড়িশা সফরে সঙ্গী হয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও। তিনিও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে নবীনের বাড়িতে গিয়েছিলেন।
বৈঠক শেষে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো অটুট থাকা দরকার। বিজেডি প্রধানের এই বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন মমতাও। তবে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃতীয় ফ্রন্ট নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। বরং দুই রাজ্যের সুসম্পর্কের দিকটিই তুলে ধরেছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের দুই রাজ্যের মধ্যে খুব ভাল সম্পর্ক।’’ একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘দেশের সুরক্ষা, গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে কথা হয়েছে।’’
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মোদী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে অতীতে বিরোধী ঐক্য গড়তে সক্রিয় হতে দেখা গিয়েছিল মমতাকে। বিজেপি বিরোধী দলগুলির মধ্যে মতানৈক্য থাকায় সেই চেষ্টা সফল হয়নি। পরে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্কেরও অবনতি ঘটেছে। সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘিতে উপনির্বাচনে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থীর জয়ের পর তৃণমূলনেত্রী বলেছিলেন, ‘‘তৃণমূল আর মানুষের জোট হবে। আমরা ওদের (বাম এবং কংগ্রেস) কারও সঙ্গে যাব না। একা লড়ব মানুষের সমর্থন নিয়ে।’’ গত শুক্রবার মমতার সঙ্গে দেখা করেছেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব। মুলায়ম-পুত্র জানিয়েছেন, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে আঞ্চলিক শক্তিগুলিকে নিয়ে তাঁরা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে চান। মমতা ওড়িশা থেকে ফেরার পর শুক্রবার কলকাতায় এসে মমতার সঙ্গে দেখা করবেন জেডিএস নেতা এইচ ডি কুমারস্বামী। চলতি মাসের শেষে আম আদমি পার্টির প্রধান তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের সঙ্গেও দেখা করার কথা মমতার। এই আবহে মমতা-নবীন বৈঠক ঘিরে তাই বাড়তি কৌতূহল তৈরি হয়েছিল রাজনীতির ময়দানে। তবে লোকসভা ভোটে রাজনৈতিক সমীকরণ নিয়ে এখনই স্পষ্ট করে কিছু বলেননি দুই মুখ্যমন্ত্রী। উল্টে নবীন বলেছেন, ‘গভীর রাজনৈতিক’ কোনও আলোচনা হয়নি।
বৃহস্পতিবার বৈঠকের শেষে নবীনের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের সুসম্পর্কের কথা তুলে ধরেছেন মমতা। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘নবীন’জির প্রতি কৃতজ্ঞ। উনি উচ্চমানের নেতা। ওঁর আতিথেয়তায় মুগ্ধ। এই বাড়িতে ২-৩ বার এসেছি। ওঁর গোল্ডেন লিডারশিপ।’’ বাংলার দিঘায় জগন্নাথ মন্দির তৈরি করছে রাজ্য সরকার, সে কথাও নবীনকে জানিয়েছেন মমতা। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীনকে বাংলায় আসার আমন্ত্রণও জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy