কানহাইয়া অবাস্যা। কলেজে তোয়ালে গায়ে জড়িয়ে।
পোশাক পরতে তিনি ভালবাসেন না। জোর করে পোশাক পরাতে পারেননি অভিভাবকরাও। ছোটবেলায় যখনই পোশাক পরাতেন তখনই খুলে ফেলে দিতেন, না হয় ছিঁড়ে ফেলতেন। শুধু তাই নয়, তাঁর কাছে কেউ পোশাকের কথা তুললে, তাঁর সঙ্গে ২-৩ দিন কথা বলাই বন্ধ করে দিতেন। গায়ে তোয়ালে জড়িয়েই স্কুলজীবন কাটিয়েছেন। আর সেই পোশাকেই এখন কলেজ যাচ্ছেন ‘কলিযুগের মোগলি’।
আসল নাম কানাইয়া অবাস্যা। থাকেন মধ্যপ্রদেশের বারওয়ানিতে। ছোট থেকেই পোশাকের প্রতি ‘অ্যালার্জি’ তাঁর। আর সেটাই মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছিল কানাইয়ার পরিবারের। দৈনিক ভাস্কর-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কানাইয়ার মা বলেন, “ওর যখন পাঁচ বছর বয়স, তখন পোশাক পরালেও খুলে ফেলত। কখনও কখনও পোশাকও ছিঁড়ে ফেলত। অগত্যা হার মানতে হয় ছেলের জেদের কাছে।” কিন্তু সমস্যা তৈরি হয় কানাইয়াকে স্কুলে ভর্তি করানোর সময়। স্কুলে তো পোশাক পরে যেতেই হবে। কারণ ‘ড্রেস কোড’ রয়েছে। কিন্তু সেই নিয়মও ভেঙেছেন কানাইয়া। এ বিষয়ে এক শিক্ষক অ্যালেক্স থমাস এগিয়ে আসেন। তিনি কানহাইয়াকে স্কুলে পাঠাতে বলেন। আশ্বাস দেন, পোশাক না পরার জন্য কানহাইয়াকে কেউ কিছু বলবে না। কোনও কটূক্তিও করবে না।
প্রাথমিক স্কুলে পোশাক না পরেই জড়িয়ে দিয়েছিলেন কানহাইয়া। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি হতে গিয়েও একই সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় কানহাইয়ার অভিভাবকদের। স্কুল কর্তৃপক্ষ কানহাইয়ার সম্পর্কে জানার পর ভর্তি নিতে অস্বীকার করেন। এই স্কুলে কানহাইয়াকে ভর্তি করতেও ত্রাতার ভূমিকায় এগিয়ে আসেন অ্যালেক্স স্যর। যে হেতু ছেলে এবং মেয়ে একই স্কুলে পড়াশোনা করে, তাই কানহাইয়াকে পোশাক ছাড়া আসতে অনুমতি দিতে চাননি কর্তৃপক্ষ।
কানহাইয়া দৈনিক ভাস্কর-কে জানান, এখানেও সহযোগিতা করেছেন অ্যালেক্স স্যর। তিনি স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করেন। পড়াশোনায় বরাবরই ভাল কানহাইয়া। প্রাথমিক হোক বা উচ্চমাধ্যমিক, প্রতি ক্লাসে পরীক্ষায় ভাল ফল করার সুবাদে শিক্ষকদের মন জয় করেছেন কানহাইয়া। তবে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর থেকে গায়ে পোশাকের বদলে তুলে নিয়েছিলেন তোয়ালে। আর সেই ‘ড্রেস কোডেই’ স্কুলজীবন কাটিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের ‘মোগলি’।
ভাল নম্বর নিয়ে দ্বাদশ পাশ করার পর কলেজে ভর্তি হওয়ার পালা আসতেই সমস্যা আরও বাড়ে। স্কুলজীবন তো তোয়ালে পরেই কাটিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু কলেজ? না, এখানেও নিজের জেদের কাছে অটল থেকেছেন কানহাইয়া। এখানেও সেই ত্রাতার ভূমিকায় এগিয়ে আসেন অ্যালেক্স স্যর। কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাঁকে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করেন। আর তোয়ালে জড়িয়েই পড়ুয়াদের সঙ্গে কলেজে যান কলিযুগের এই ‘মোগলি’।
দৈনিক ভাস্কর-কে কানহাইয়ার মা বলেন, “ছেলে কোনও সব্জি খায় না। শুধু দুধ আর রুটি খায়। আজ পর্যন্ত দাঁত মাজার জন্য টুথপেস্ট বা ব্রাশ ব্যবহার করেনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy