মহকুমাশাসক নিশা নাপিত শর্মা (বাঁ দিকে)। তাঁকে খুনে অভিযুক্ত স্বামী মণীশ শর্মা গ্রেফতার। ছবি: সংগৃহীত। ছবি: সংগৃহীত।
মহকুমাশাসকের খুনি কে? তাঁর খুন হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁকে ধরে ফেলল পুলিশ। আর তা সম্ভব হয়েছে একটি ওয়াশিং মেশিনের জন্য। মহকুমাশাসকের বাড়িতে যে ওয়াশিং মেশিনটি রয়েছে, সেখান থেকেই এই খুনের সূত্র খুঁজে পান তদন্তকারীরা। তার পর দেখা যায়, এই খুনে অভিযুক্ত বাড়িরই এক সদস্য। তিনি মহকুমাশাসকেরই স্বামী!
রবিবার খুন হয়েছেন মধ্যপ্রদেশের ডিন্ডৌরি জেলার শাহপুরার মহকুমাশাসক নিশা নাপিত শর্মা। এই ঘটনায় অভিযুক্ত নিশার স্বামী মণীশ শর্মাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিন্তু কেন মহকুমাশাসককে খুন হতে হল? তদন্তকারী এক আধিকারিক জানিয়েছেন, শাহপুরায় কাজে যোগ দেওয়ার পর নিজের সার্ভিস বুকে নমিনি রাখেননি মণীশকে। শুধু তাই-ই নয়, বিমা, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেও তাঁকে নমিনি রাখেননি নিশা। মণীশকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন যে, এই বিষয়টি নিয়ে বিচলিত ছিলেন তিনি।
কিন্তু শুধুমাত্র নমিনি না করার জন্যই নিশাকে খুন করা হল, না কি এর নেপথ্যে আরও গভীর কোনও রহস্য রয়েছে? আপাতত সেই রহস্যভেদ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে, নিশাকে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। নিশার নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়ে এসেছিল। বালিশ এবং চাদরেও সেই রক্ত লেগে গিয়েছিল। কিন্তু খুনকে সাধারণ মৃত্যু হিসাবে প্রমাণ করতে চেষ্টার কোনও কসুর করেননি মণীশ। রক্তমাখা বালিশের ঢাকা এবং চাদর এবং পোশাক ওয়াশিং মেশিনে ধুয়ে ফেলেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই ওয়াশিং মেশিনই এই হত্যার রহস্য ফাঁস করতে সাহায্য করেছে পুলিশকে। মহকুমাশাসক খুন হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁর স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, খুনের পর নিশাকে রবিবার বিকেল ৪টের সময় হাসপাতালে নিয়ে যান মণীশ। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মহকুমাশাসকের মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে পোঁছয় পুলিশও। মণীশের কাছে মহকুমাশাসকের মৃত্যুর কারণ জানতে চায় পুলিশ। তখন তিনি দাবি করেন, কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন নিশা। শনিবার উপবাসও করেছিলেন। রাতে বমি করায় তাঁকে ওষুধও দেন। মণীশের কথায়, “রবিবার সকাল সকাল উঠে পড়েছিলাম। কিন্তু নিশা তখনও ঘুমোচ্ছিল। আমি হাঁটতে বেরিয়েছিলাম। সকাল ১০টায় পরিচারিকা আসে। দুপুর ২টোর সময় বাড়ি ফিরে দেখি তখনও ঘুমোচ্ছে। জাগানোর চেষ্টা করি। কিন্তু তার পরেও নড়াচড়া করছিল না। সিপিআর দিই। তার পর চিকিৎসককে ডাকি। তিনি পরামর্শ দেন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য।”
কিন্তু নিশার বোন নীলিমার অভিযোগ, তাঁর দিদিকে খুন করা হয়েছে। মণীশ কোনও চাকরি করতেন না। বেকার। টাকার জন্য দিদির উপর অত্যাচার চালাতেন। মারধর করতেন। তাঁর কথায়, “দিদির কোনও অসুখ ছিল না। ওকে খুন করেছে জামাইবাবু।” তদন্তকারী এক আধিকারিক জানিয়েছেন, নিশার ময়নাতদন্তের রিপোর্টে খুনের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। তার পরই গ্রেফতার করা হয় মণীশকে। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২, ৩০৪বি এবং ২০১ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy