জরুরি অবস্থার সময়ে ১৯ মাস জেল খেটেছিলেন তিনি। বরাবর তীব্র আক্রমণ করেছেন ১৯৭৫-কে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেই জরুরি অবস্থার প্রসঙ্গ তুলেই ঘরে-বাইরে তীব্র বিতর্ক তৈরি করেছিলেন। কিন্তু আজ তাঁর দল যখন ঘটা করে জরুরি অবস্থার ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘কালো দিবস’ উদ্যাপন করছে, তখন সেই অনুষ্ঠানে ডাকই পেলেন না লালকৃষ্ণ আডবাণী।
সঙ্ঘের সমর্থনপ্রাপ্ত এক সংগঠনের উদ্যোগে আজ দিল্লিতে ওই অনুষ্ঠানে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ ছিলেন প্রধান অতিথি। দত্তাত্রেয় হোসাবোলের মতো সঙ্ঘের শীর্ষ নেতাও ছিলেন। কেন সেই অনুষ্ঠানে ডাক পেলেন না দেশের প্রাক্তন উপপ্রধানমন্ত্রী?
অনেকেই মনে করছেন, ‘দেশে জরুরি অবস্থা ফিরতে পারে’ বলে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করারই মাসুল দিলেন আডবাণী। তখনই জল্পনা তৈরি হয়েছিল, আডবাণীর এই মন্তব্যের লক্ষ্য হলেন তাঁর একদা ভাবশিষ্য— প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ঠিক পরের দিন বিতর্কে জল ঢালতে আডবাণী বলেন, কংগ্রেসকে উদ্দেশ করেই ওই কথা বলেছিলেন তিনি। কিন্তু একই সঙ্গে বলে বসেন, তিনি ‘ওয়ান ম্যান শো’-এর বিরোধী। আডবাণী ফের দলে মোদীর কর্তৃত্বকে কটাক্ষ করলেন বলে তখন আর এক প্রস্ত জল্পনা হয়। অনেকেই বলছেন, মোদী-অমিত শাহরা যে লৌহপুরুষের এই সব মন্তব্যকে ভাল চোখে দেখেননি, আজকের অনুষ্ঠানই তার প্রমাণ।
বিজেপি সভাপতি অবশ্য বসুন্ধরা রাজে-সুষমা স্বরাজকে নিয়ে বিতর্কের আবহেই আজকের মঞ্চকে বেছে নেন কংগ্রেসকে আক্রমণের জন্য। কংগ্রেসের ‘তানাশাহি’ (একনায়কসুলভ) মনোভাবের জন্যই যে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল, তা বলে দর্শক-শ্রোতাদের হাততালিও কুড়িয়েছেন তিনি। অমিত দাবি করেন, বিজেপিই সম্ভবত একমাত্র দল, যে দলে গণতন্ত্র রয়েছে। বিজয় গয়াল থেকে শ্যাম জাজুর মতো জরুরি অবস্থায় ‘অত্যাচারের শিকার’ বিজেপির ছোট-মাঝারি নেতাদের সংবর্ধনাও দেওয়া হয় ওই অনুষ্ঠানে।
কিন্তু বাদ রয়ে গেলেন আডবাণী। গত কালই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা প্রবীণ বিজেপি নেতা যশবন্ত সিন্হা মোদী-শাহ জুটিকেই পরোক্ষে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর ৭৫ বছরের বেশি বয়সি নেতাদের যেন ‘মৃত-মস্তিষ্ক’ ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে। আজকের পর বিরোধীরাও বলতে শুরু করেছে, যশবন্তের কথা অক্ষরে অক্ষরে মিলল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy