লীমা ধর।
‘ম্যহফিল কো হাঁসি দেখকার/ হামভি চলেথে খুঁশিয়া সমেটনে...”
না, কোনও হিন্দি সিনেমার লাইন নয়, এক বাঙালি কবির কলম থেকে যখন এই কবিতা বেরোয় তখন তার বয়স তেরো! প্রথম কাব্য সংগ্রহ ‘কুছ লফজ নকাব মেঁ’ লিখে সে হিন্দি সাহিত্য জগতে হইচই ফেলে দিয়েছিল।
২৩ বছর বয়সে পৌঁছে এই প্রবাসী বঙ্গললনা এর মধ্যে সাতটা বই লিখে ফেলেছেন লীমা ধর। হিন্দির সঙ্গে ইংরেজিতেও আছে কবিতার বই। শুধু তাই নয়, ধীরে ধীরে কবি থেকে ঔপন্যাসিক হয়ে উঠছেন লীমা।
উত্তরপ্রদেশের ইলাহাবাদ নিবাসী লীমার এ হেন সাহিত্য প্রতিভা বিকাশের কারণ হয়তো তাঁর বাবা, নব্বুইয়ের দশকের পরিচিত সাহিত্যিক সমীর ধর। ১৯৮৬ সালে কর্মসূত্রে ইলাহাবাদ পাড়ি দেওয়া সমীর ধরের লেখা একসময় ‘দেশ’-সহ অন্যান্য পত্রিকায় নিয়মিত বেরত। ইলাহাবাদের এক প্রখ্যাত প্রকাশন সংস্থার দু’টি জনপ্রিয় মাসিক পত্রিকার কার্যনির্বাহী সম্পাদক ছিলেন তিনি। সমীরবাবুর এক নিজস্ব প্রকাশনা সংস্থাও আছে। মা মৌসুমী শিক্ষিকা।
লীমা ইলাহাবাদের সেন্ট মেরিজ কনভেন্ট থেকে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ট্রান্স দিয়েছিলেন ২০১১-তে। সফলও হয়েছিলেন। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারিং নয়, পড়াশোনা করেন সাইকোলজি নিয়ে।
লীনা জানাচ্ছেন, একটি সর্বভারতীয় হিন্দি সংবাদপত্রে কবিতা পাঠানোর পর সেই সংবাদপত্র প্রথমে বিশ্বাস করেনি যে সেই কবিতার লেখিকা তখন টিন এজার।
আরও পড়ুন:
যে ১০ বোরিং উপদেশ সব ভারতীয় মেয়েদেরই শুনতে হয়
শুধু হিন্দিই নয়, ইংরেজি কবিতা লেখার ক্ষেত্রেও লীমার লেখনী সমান সাবলীল। একাদশ শ্রেণিতে পড়াকালীন তাঁর প্রথম ইংরেজি কবিতার বই ‘ফর দ্য হান্ড্রেড টুমোরোজ’(২০১০)। পরের বছরেই প্রথম উপন্যাস ‘টিল উই মিট এগেন’। বই প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই সেই বই পনেরো দিনের মধ্যে হয়ে উঠল ন্যাশনাল বেস্ট সেলার। অথচ এই বই প্রকাশ হওয়ার আগে ষোলো বার প্রকাশকদের কাছে বাতিল হয়েছিল। সন্ত্রাসবাদের পটভূমিকায় তিনি লেখেন ‘মম অ্যান্ড আই লাভ আ টেররিস্ট’ গ্রন্থটি। এর পর একের পর এক ‘দ্য গার্ল হু কিস্ড দ্য স্নেক’ এবং ‘ইউ টাচ মাই হার্ট’— প্রত্যেকটারই বিষয় বিভিন্ন। ‘ইউ টাচ মাই হার্ট’ উপন্যাসটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে ই-বুকে বেস্ট সেলার হয়। এ বছর ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশ পেয়েছে লীমার পঞ্চম উপন্যাস ‘দ্য কমিটেড সিন’। বিষয় বৈচিত্র আছে এতেও।
বাংলার বাইরে থাকলেও সাহিত্যে নিজস্ব ছাপ রেখে যেতে চান লীনা। তাঁর কথায়: “জন্মসূত্রে না-হলেও ‘জিন-সূত্রে’ তো একশো ভাগ বাঙালি! তাই দেখি, কলকাতার বাইরে থেকেও সাহিত্যে অন্তত একটা কালির দাগ রেখে যেতে পারি কি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy