বাঁ দিকে শি জিনপিং, ডান দিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পরে সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানাল চিন। প্রাথমিক ভাবে বুধবার চিনা বিদেশ দফতরের একটি বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘আমেরিকার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতি মেনে চলবে চিন।’’ সেই সঙ্গে সরাসরি ট্রাম্পের নাম না করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘সুযোগ নষ্ট না করা হলে এই ফলাফল বেজিং-ওয়াশিংটন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন যুগের সূচনা করতে পারে।’’
বুধবার গভীর রাতে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের জন্য ট্রাম্পকে ফোন করেন বলে একদলীয় চিনের শাসক কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্রে জানানো হয়েছে। কূটনীতিকদের একাংশের মতে, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পরে ভূ-রাজনৈতিক খেলার প্রথম রাউন্ডে পরিস্থিতি ভারতের পক্ষে বেশ অনুকূল। যদিও লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি)-তে সংঘাতের ইতি টানতে ভারত-চিন সমঝোতা আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট কী ভাবে দেখবেন, তা নিয়ে কিছুটা সংশয় রয়েছে সাউথ ব্লকে।
ট্রাম্পের বিদেশনীতি দক্ষিণ এশিয়ার সমীকরণ কতটা বদলে দেবে তা নিয়ে বুধবার থেকেই হিসেব শুরু হয়েছে। গোটা নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্প একাধিক বার খোঁচা দিয়েছেন চিনকে। ট্রাম্প শিবির বার বার দাবি করেছে, দীর্ঘ দিন ধরে আমেরিকাকে ‘পুঁজি করে’ বেজিং নিজেদের ভাঁড়ার ভর্তি করেছে। তাদের বক্তব্য, আমেরিকায় উৎপাদন শিল্প ক্রমশ সঙ্কুচিত হয়েছে, তখন এই ক্ষেত্রে নিজেদের সমৃদ্ধ করে গিয়েছে চিন। বস্তুত, হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের প্রথম ইনিংসেও আমেরিকার বাজারে চিনা পণ্যের দাপাদাপি রুখতে ‘অতিরিক্ত শুল্ক’ (অ্যান্টি ডাম্পিং) ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ হয়েছিল।
তা ছাড়া বাইডেনের জমানায় তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে আমেরিকা-চিনের সংঘাত ট্রাম্পের আমলে নতুন মাত্রা পেতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ২০২২ সালের অগস্টে চিনের আপত্তি খারিজ করে আমেরিকার কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজ়েনটেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পরেই নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়। সে সময় ধারাবাহিক ভাবে তাইওয়ানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করতে শুরু করে চিনা যুদ্ধবিমান। চিন-তাইওয়ান সঙ্কটের আবহে সে সময় আমেরিকার সপ্তম নৌবহরের অন্তর্ভুক্ত কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ তাইওয়ান প্রণালীতে ঢুকেছিল।
এর পর সাময়িক ভাবে উত্তেজনা প্রশমনের উদ্দেশ্যে দু’পক্ষ কিছুটা নমনীয় হলেও চলতি বছর তাইওয়ানের সাধারণ নির্বাচনে কট্টর চিন-বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি (ডিপিপি)-র জয়ের পর নতুন করে সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছে। চিনের দাবি, তাইওয়ান তাদেরই দেশের ‘বিদ্রোহী ভূখণ্ড’। প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করেও তারা তাইওয়ানকে চিনের মূল ভূখণ্ডে যোগ করতে বদ্ধপরিকর। উল্টো দিকে, তাইওয়ানের বর্তমান সরকার তাদের অবস্থানে অনড়। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প যদি তাইওয়ানকে ধারাবাহিক সামরিক সাহায্য করেন, তবে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy