রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।
এক দশক পর লোকসভায় ফিরেছে বিরোধী দলনেতার পদ। বাজেট অধিবেশন চলাকালীন সোমবার লোকসভায় কেন্দ্রকে এক হাত নিলেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। দুপুর ২টোয় বক্ত়়ৃতা শুরু। চলল প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা। উঠে এল মহাভারতের প্রসঙ্গ। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের প্রসঙ্গ। চক্রব্যূহের প্রসঙ্গ। চক্রব্যূহের সামরিক গঠন অনেকটা পদ্ম ফুলের মতো, যে কারণে চক্রব্যূহকে ‘পদ্মব্যূহ’-ও বলা হয়ে থাকে। সেই কথা উল্লেখ করেই কেন্দ্রের বিজেপি-শাসিত সরকারকে তুলোধনা রাহুলের। তিনি বলেন, “হাজার হাজার বছর আগে কুরুক্ষেত্রে ছ’জন মিলে অভিমন্যুকে চক্রব্যূহে ফাঁসিয়ে হত্যা করেছিলেন। আমিও একটু পড়াশোনা করে দেখেছি, চক্রব্যূহকে পদ্মব্যূহও বলা হয়। পদ্মের মতো সামরিক গঠনের জন্য।”
এর পরই কেন্দ্রকে বিঁধে লোকসভার বিরোধী দলনেতা বলেন, “একবিংশ শতাব্দীতে এক নতুন চক্রব্যূহ তৈরি হয়েছে। তাও আবার পদ্ম ফুলের আকারে। যার প্রতীক প্রধানমন্ত্রী বুকে পরে থাকেন। অভিমন্যুর সঙ্গে যা করা হয়েছিল, যে ভাবে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছিল চক্রব্যূহে, সেটাই দেশের সঙ্গে, দেশের যুব সমাজ, কৃষক, মহিলা এবং ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পের সঙ্গে করা হচ্ছে।” রাহুলের যুক্তি, মহাভারতের চক্রব্যূহের রাশ ছিল ছ’জনের হাতে- দ্রোণাচার্য, কর্ণ, কৃপাচার্য, কৃতবর্মা, অশ্বত্থামা ও শকুনি। বর্তমান সময়ের যে চক্রব্যূহের কথা রাহুল বলছেন, সেখানেও ছ’জনের হাতে রাশ রয়েছে বলে দাবি বিরোধী দলনেতার। রাহুলের মতে সেই ছ’জন হলেন- নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, মোহন ভাগবত, অজিত ডোভাল, অম্বানী ও আদানি।
লোকসভায় রাহুল এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই আপত্তি জানান স্পিকার ওম বিড়লা। বিজেপি শিবির থেকেও হট্টগোল শুরু হয়ে যায়। স্পিকার রাহুলকে জানান, যাঁরা লোকসভার সদস্য নন, তাঁদের নাম ব্যবহার করা যাবে না। সাংবিধানিক পদে থেকে রাহুল যাতে সংসদীয় রীতি-রেওয়াজ মেনে চলেন, সেই বার্তা দেন স্পিকার। এর পর অবশ্য অম্বানী, আদানি ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের নাম প্রত্যাহার করে নেন। তবে বাকি তিনটি নামের ক্ষেত্রে নিজের বক্তব্যে অবিচল থাকেন রাহুল।
লোকসভার বিরোধী দলনেতার মতে, বর্তমান কালের এই চক্রব্যূহের নেপথ্য তিনটি শক্তি কাজ করছে। রাহুলের কথায় প্রথম শক্তি হল, “পুঁজির উপর একচেটিয়া অধিকারের ভাবনা, যেখানে গোটা দেশের সম্পত্তির উপর দু’জনের অধিকার থাকে।” সরাসরি কারও নাম না করলেও রাহুলের খোঁচা যে দুই শিল্পগোষ্ঠীর দিকেই ছিল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ ছাড়া রাহুলের যুক্তিতে, দ্বিতীয় শক্তি হল সিবিআই, ইডি, আয়কর দফতরের মতো বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থা এবং তৃতীয় শক্তি হল রাজনৈতিক নেতারা। এই তিন শক্তিই চক্রব্যূহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বলে আক্রমণ শানান লোকসভার বিরোধী দলনেতা।
এই ‘চক্রব্যূহের’ কারণে দেশবাসীর কী সমস্যা হয়েছে, সে কথাও তুলে ধরেন রাহুল। বিরোধী দলনেতার দাবি, যাঁরা ছোট ছোট ব্যবসা করেন, তাঁদের উপর এই চক্রব্যূহের প্রথম কোপ পড়েছে। নোট বাতিল থেকে শুরু করে পণ্য ও পরিষেবা কর এবং ‘কর-সন্ত্রাস’-এর কথা উঠে আসে রাহুলের সোমবারের বক্তৃতায়। তিনি বলেন, “দেশে যাঁরা ছোট ছোট ব্যবসা করেন, রাতে তাঁদের কাছে আয়কর দফতর, পণ্য ও পরিষেবা কর দফতর থেকে ফোন যায়। তাঁরা কর-সন্ত্রাসের শিকার হন। এই কর-সন্ত্রাস বন্ধ করার জন্য বাজেটে কোনও উল্লেখ নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy