নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আসামে।—ছবি পিটিআই।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলকে বরাবর স্বাগত জানিয়ে এসেছে উত্তর-পূর্বের বাঙালি সংগঠনগুলি। এমনকি প্রদেশ কংগ্রেস বিলের বিপক্ষে থাকলেও বরাকের বাঙালি কংগ্রেস নেতারা বিলের পক্ষে সওয়াল করেছেন। বিজেপির বাঙালি নেতা-বিধায়কেরা এনআরসিছুট বাঙালিদের বার বার বিলের কথা বলেই অভয় দিয়েছেন। কিন্তু প্রস্তাবিত নতুন খসড়া থেকে উত্তর-পূর্বের ইনার লাইন পারমিট থাকা তিন রাজ্য—অরুণাচল, নাগাল্যান্ড ও মিজোরাম এবং ষষ্ঠ তফসিল ভুক্ত এলাকাগুলিকে ‘ছাড়’ দেওয়ায় এক বিশাল সংখ্যক বাঙালিই বিলের আওতা থেকে বাদ পড়তে চলেছেন। বাদ পড়া এলাকায় বাঙালিদের ভাগ্য নিয়ে বাঙালি সংগঠনের নেতারা তো বটেই, খোদ বিজেপির বাঙালি বিধায়করাও নিশ্চিত নন। বিলের আওতা থেকে বাদ পড়েছে অসমের বড়ো স্বশাসিত পরিষদের কোকরাঝাড়, চিরাং, বাক্সা ও উদালগুড়ি জেলা। আবার মেঘালয়েও অনেক বাঙালি। বাঙালির সংখ্যা কম নয় নাগাল্যান্ডের ডিমাপুর, অরুণাচলের ইটানগর-নাহারলাগুনেও। বিজেপি বিধায়ক শিলাদিত্য দেব বলেন, ‘‘যতদূর জানি, বড়ো এলাকার বাঙালিরা এখন যেমন ২০০৩ সালের বড়ো চুক্তির অধীনে সেখানে থাকছেন সেই নিয়মই বহাল থাকবে। বড়ো এলাকা বা অরুণাচল-নাগাল্যান্ড-মিজোরামে বাঙালি তো বটেই অসমিয়ারাও সম্পত্তির অধিকার পান না। আর নাগরিকত্বের ক্ষেত্রে ২০০৩ সালে বড়ো চুক্তি হওয়ার আগে থেকে যে বাঙালিরা সেখানে আছেন তাঁদের সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’’
কিন্তু অন্য ষষ্ঠ তফসিলভুক্ত এলাকায় থাকা বাঙালিদের কী হবে, তাঁরা কোথায় এসে নাগরিকত্বের আবেদন জানাবেন, তা নিয়ে দ্বন্দ্ব আছে। শিলাদিত্যের বক্তব্য, ‘‘বিল পেশ হলেই বিশদে তা জানতে পারব। অবশ্য যাঁরা বর্তমান নাগরিকত্ব আইনে ইতিমধ্যেই স্বীকৃত নাগরিক, তাঁদের সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’’ বিজেপি সভাপতি রঞ্জিৎ দাস জানান, ষষ্ঠ তফশিল এলাকায় থাকা শরণার্থীদের ওই এলাকার বাইরে এসে আবেদন জানাতে হবে।
বাঙালি পরিষদের নেতা কমল চৌধুরী বলেন, ‘‘বিলকে আমরা স্বাগতই জানাচ্ছি। দিল্লি থেকে জানতে পেরেছি, বড়ো এলাকায় বড়ো চুক্তির আগে থেকে বাস করা বাঙালিরা সমস্যায় পড়বেন না।’’ সারা অসম বাঙালি যুব ছাত্র পরিষদের সভাপতি দীপক দে বলেন, ‘‘এখনও বিষয়টি আমাদের কাছে পরিষ্কার নয়। আলোচনা চলছে।’’ বিজেপির তরফে বলা হয়, অরুণাচল-নাগাল্যান্ড-মিজোরামে এখনও কোনও বাঙালি বা বহিরাগত জমির অধিকার বা স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার অধিকার পান না। তাঁদের সকলেরই স্থায়ী ঠিকানা অসমে। সেই ঠিকানা থেকেই আবেদন করতে পারবেন। কংগ্রেস মুখপাত্র অভিজিৎ মজুমদার বলেন, ‘‘বড়োভূমিতে ৪০ শতাংশই বাঙালি। তাঁদের কী হবে?’’ তাঁর কথায়, অসম চুক্তির ষষ্ঠ দফা রূপায়ণ হলে বাঙালিদের চাকরি ও রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্বের সুযোগও কমবে। তাঁরা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে যাবে। আদতে এই বিল কোনও বাঙালিরই উপকারে আসবে না বলে কংগ্রেস নেতার ধারণা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy