মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্দেকে কটাক্ষ করায় গ্রেফতারির আশঙ্কা করছেন কৌতুকশিল্পী কুণাল কামরা। তাঁকে মুম্বই পুলিশ ডেকে পাঠিয়েছে। সেখানে হাজিরার আগে মাদ্রাস হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন কুণাল। আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছেন। কুণাল তামিলনাড়ুর ভিল্লুপুরমের স্থায়ী বাসিন্দা। তাই রক্ষাকবচ চেয়ে মাদ্রাস হাই কোর্টেই গিয়েছেন তিনি। ইনস্টাগ্রাম পোস্ট অনুযায়ী, কুণাল বর্তমানে আছেন পুদুচেরিতে। তাঁর তরফে বুধবার মাদ্রাস হাই কোর্টে আবেদন জানান তাঁর আইনজীবী।
মুম্বইয়ের খার এলাকায় একটি কৌতুকানুষ্ঠানে শিন্দেকে কটাক্ষ করেছিলেন কুণাল। জনপ্রিয় হিন্দি গানের সুর নকল করে তাতে নিজের মতো কথা বসিয়ে গেয়েছিলেন তিনি। সেখানে শিন্দেকে ‘গদ্দার’ বলার পাশাপাশি কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এবং মহারাষ্ট্রে ক্ষমতাসীন সরকারকেও কটাক্ষ করা হয়। নাম নেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসের। অনুষ্ঠানের শেষে হাতে ভারতের সংবিধান নিয়ে কুণাল বলেছিলেন, ‘‘আমি যা করছি, এই সংবিধান আমাকে সেটা করার অনুমতি দিয়েছে।’’ কুণালের এই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পরেই খারের ওই হোটেলে বিক্ষোভ দেখায় শিবসেনা (শিন্দে)। ভাঙচুর করা হয় হোটেলের চেয়ার, টেবিল। পুলিশ এই ঘটনায় একাধিক শিবসেনা সমর্থককে গ্রেফতার করেছিল। পরে তাঁরা জামিন পেয়ে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন:
শিন্দেকে নিয়ে কৌতুকের পর মহারাষ্ট্রের এক বিধায়ক কুণালের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে মুম্বই পুলিশ এফআইআর করেছে। কুণালের বিরুদ্ধে মানহানি-সহ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। কুণালকে সমন পাঠিয়েছিল মুম্বই পুলিশ। তিনি কিছুটা সময় চেয়ে নেন। আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে মুম্বই পুলিশের কাছে হাজিরা দিতে হবে কৌতুকশিল্পীকে। অভিযোগ, ভিডিয়ো প্রকাশের পর থেকে খুনের হুমকি পাচ্ছেন কুণাল। প্রাণ সংশয় রয়েছে— এই কারণ দেখিয়ে মুম্বই পুলিশের কাছে আরও কিছুটা সময় চেয়েছিলেন তিনি। তাঁর আবেদন নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে, ৩১ মার্চের মধ্যেই তাঁকে হাজিরা দিতে হবে। এর পরের দিনই আদালতের দ্বারস্থ হলেন কুণাল।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী ফডণবীস জানিয়েছেন, অবিলম্বে ক্ষমা চাওয়া উচিত কুণালের। কিন্তু কুণালও নিজের অবস্থানে অনড়। তিনি জানিয়েছেন, তিনি কোনও অবস্থাতেই ক্ষমা চাইবেন না। কারণ, তিনি ভুল কিছু বলেননি। উল্টে বিতর্কের মাঝে আরও ভিডিয়ো তিনি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করেছেন।