কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বাংলোর অদূরে বিক্ষোভ দেখাল মণিপুরের কুকি সংগঠন। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
মণিপুরে হিংসা ঠেকাতে ব্যর্থতার জন্য এ বার নরেন্দ্র মোদী সরকারের দিকে অভিযোগের আঙুল তুললেন তফসিলি জনজাতিদের একাংশ। বুধবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দিল্লির বাসভবনের সামনে এ নিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন জনজাতি কুকিদের কয়েকটি সংগঠনের সদস্যেরা। তাঁদের হাতে ছিল, ‘সেভ কুকি লাইভস’ (কুকিদের জীবন বাঁচান) লেখা পোস্টার।
গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয়েছিল উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ওই রাজ্যে। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে।
আদি বাসিন্দা মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের সংঘর্ষ ঠেকাতে গত ৬ মে বিজেপি শাসিত মণিপুরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিল মোদী সরকার। নামানো হয় সেনা এবং অসম রাইফেলস বাহিনীকে। সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারকের ভার দেওয়া হয় সিআরপিএফের প্রাক্তন প্রধান কুলদীপ সিংহকে। তাঁর অধীনে এডিজিপি (ইন্টেলিজেন্স) আশুতোষ সিংহকে সমগ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার অপারেশনাল কমান্ডার-এর দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু ১ মাস কেটে গেলেও হিংসা থামেনি।
মণিপুরে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহতের সংখ্যা প্রায় ৫০০। গোষ্ঠীহিংসার জেরে ঘরছাড়া হয়েছেন ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ! মায়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে এসে কুকি জঙ্গিরা মেইতেইদের উপর হামলা চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। পাল্টা মেইতেই নিয়ন্ত্রিত সরকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্টতার অভিযোগ তুলেছে কুকিরা। সেই সঙ্গে তাঁদের অভিযোগ, মেইতেইরা তফসিলি জনজাতির তকমা পেলে পাহাড়ি এলাকার জমি তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে।
মণিপুরের প্রায় নব্বই শতাংশ পাহাড়ি জমিতেই কুকি, নাগা-সহ বিভিন্ন জনজাতি গোষ্ঠীর বাস। বাকি অংশ অর্থাৎ ইম্ফল উপত্যকায় মূলত রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইরা থাকেন। অভিযোগ উঠেছে, মায়ানমার থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের অরণ্যে নতুন জনবসতি গড়ে তুলছেন জনজাতি কুকিরা। এর ফলে আগামী দিনে তাঁদের জমি বেদখল হওয়ার আশঙ্কা করছেন মেইতেইরা। শুধু তা-ই নয়, এই অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে মায়ানমারের মাদক চক্রগুলিকে কাঁচামাল জোগানেরও অভিযোগ রয়েছে। ফলে, বিবিধ জনজাতির মধ্যে জনসংখ্যাগত ভারসাম্য বদল এবং সম্পদ বণ্টনের জেরে অগ্নিগর্ভ হয়ে রয়েছে মণিপুর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy