Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

জীবাণুর সঙ্গে যুদ্ধে দেশের প্রথম শিবির কলকাতাতেই

অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহারে যে-ভাবে স্বাস্থ্যসঙ্কট ঘনিয়ে আসছে, তা ভারত-সহ সারা বিশ্বেরই মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:১০
Share: Save:

পরাক্রমী ব্যাক্টিরিয়া-ভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ে কলকাতা থেকে জয়ের দিশা দেখাবেন গবেষকেরা। বেলেঘাটার আইডি হাসপাতালে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এন্টেরিক ডিজ়িজ়েস (নাইসেড) চত্বরে তৈরি হয়েছে ‘অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল হাব’। তিনটি লক্ষ্য সামনে রেখে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ বা আইসিএমআরের অধীন সেই হাবের উদ্বোধন হল সোমবার। তিন লক্ষ্য হল গবেষণা, নীতি নির্ধারণ এবং সম্ভাব্য ওষুধের দিশা।

সল্টলেকের জেএ ব্লকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন আইসিএমআরের ডিরেক্টর জেনারেল, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য গবেষণা মন্ত্রকের সচিব ও চিকিৎসক বলরাম ভার্গব, ভারতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেনেথ আই জাস্টার এবং স্বাস্থ্য গবেষণার সঙ্গে যুক্ত বিশিষ্ট বিজ্ঞানীরা।

অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহারে যে-ভাবে স্বাস্থ্যসঙ্কট ঘনিয়ে আসছে, তা ভারত-সহ সারা বিশ্বেরই মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বাস্থ্য গবেষণায় যুক্ত বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, শরীর বিগড়োলে ডাক্তারের কাছে অ্যান্টিবায়োটিক চান রোগী। চিকিৎসকদের একাংশও শুরুতেই কড়া অ্যান্টিবায়োটিক দেন। অযথা অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের জেরে এক সময় কড়া ডোজেও আর কাবু হয় না ব্যাক্টিরিয়া-ভাইরাস। অনেকে আবার কোর্স শেষ না-করে মাঝপথে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া বন্ধ করে দেন। তাতেও বিপদ। নাইসেডের ডিরেক্টর শান্তা দত্ত জানান, কেউ সংক্রমণের শিকার হলে তার জন্য ব্যাক্টিরিয়া দায়ী, নাকি ভাইরাস— সেটা দেখা উচিত। ভাইরাল হলে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার প্রয়োজনই নেই। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের এখানে এ-সব মানা হয় না। এখন পরিস্থিতি এমন যে, হাতে কোনও অস্ত্র নেই, যা দিয়ে রোগের মোকাবিলা করা যাবে।’’

আইসিএমআরের ডিরেক্টর জেনারেল ভার্গব জানান, অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে হাসপাতালেও। গবেষকদের মতে, হাসপাতালের পরিবেশে ‘সুপারবাগ’ (যে-ব্যাক্টিরিয়া বিভিন্ন ধরনের রেজিস্ট্যান্স বা প্রতিরোধ তৈরি করেছে) পর্যন্ত পাওয়া যেতে পারে। ভার্গব বলেন, ‘‘কলকাতায় যে-হাব তৈরি হচ্ছে, তা দেশের মধ্যে প্রথম।’’ এ দেশে যত ধরনের বেয়াড়া (ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স) ব্যাক্টিরিয়া ও ভাইরাস রয়েছে, সেগুলি রাখার জন্য নাইসেডে তৈরি হচ্ছে ‘রিপজিটরি’। বলরাম বলেন, ‘‘রিপজিটরিতে শক্তিশালী ব্যাক্টিরিয়া নিয়ে কাজ হবে। মারাত্মক ব্যাক্টিরিয়া, ভাইরাসের জন্য যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপরেও জোর দিয়েছি।’’ আগামী দিনে কোন পথে এই সমস্যার মোকাবিলা সম্ভব, সেই বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রককে রিপোর্ট দেবে নতুন হাব। একই সঙ্গে কোনও ওষুধ তৈরি করা যায় কি না, তা নিয়েও কাজ হবে।

আগামী দিনে বেশ কয়েকটি কাজ হবে বলে জানান শীর্ষ স্বাস্থ্য গবেষণা কেন্দ্রের ডিরেক্টর জেনারেল। তার মধ্যে ‘নন কমিউনিকেবল ডিজ়িজ়’ রোধে তামাক ও শর্করাজাত সামগ্রীর উপরে কর বৃদ্ধির কথা ভাবছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। নাগপুরে প্রাণীর দেহ থেকে ভাইরাস (জ়ুনোটিক ডিজ়িজ়) কী ভাবে ছড়াচ্ছে, তা নিয়ে গবেষণাকেন্দ্র তৈরি হচ্ছে। নিপা, সোয়াইন ফ্লু-র মতো ভাইরাস কী ভাবে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে, তা নিয়ে এই ধরনের গবেষণা কেন্দ্র এশিয়ার মধ্যে এই প্রথম। ডেঙ্গির ভ্যাকসিন নিয়ে জাপানের একটি সংস্থার সঙ্গে তাঁদের আলোচনা চলছে বলে জানান আইসিএমআরের কর্তা ভার্গব। তিনি জানান, এ ক্ষেত্রে ১৫টি রাজ্য নিয়ে একটি সমীক্ষা করা হয়েছে। সেই সব রাজ্যের মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গও।

অন্য বিষয়গুলি:

Antimicrobial Hub Salt Lake
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy