স্থানীয়দের সঙ্গে কথা পুলিশের। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
বদায়ূঁ গণধর্ষণকাণ্ডে ৪ দিন পর গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত সেই মন্দিরের পুরোহিত। নির্যাতিতার উপর ৩ জন নৃশংশ অত্যাচার চালিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। দু’জনকে আগেই গ্রেফতার করেছে যোগী রাজ্যের পুলিশ। কিন্তু মূল অভিযুক্ত পুরোহিত সত্যনারায়ণের হদিশ পাওয়া যাচ্ছিল না। শেষমেশ শুক্রবার সকালে তাঁকে গ্রেফতার করা হল। পাশের গ্রামে এক শিষ্যের বাড়িতে তিনি গা ঢাকা দিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
গত রবিবার গত রবিবার নির্ভয়া-কাণ্ডের স্মৃতি উস্কে উত্তরপ্রদেশের বদায়ূঁ জেলার উঘৈতি থানা এলাকায় ওই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে। মন্দিরে পুজো দিতে যাওয়া ৫০ বছরের এক মহিলাকে গাড়িতে তুলে নৃশংস অত্যাচার চালান অভিযুক্তরা। ধর্ষণের পর তাঁর যৌনাঙ্গে লোহার রড ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করে ভেঙে দেওয়া হয় পাঁজরের হার। ভেঙে দেওয়া হয় তাঁর পা-ও। তার পর রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ির সামনের রাস্তায় মহিলার দেহ ফেলে চলে যান অভিযুক্তরা।
তড়িঘড়ি নির্যাতিতাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি তাঁকে। অভিযোগ পাওয়া সত্ত্বেও পুলিশ সময় থাকতে পদক্ষেপ করেনি বলেও অভিযোগ নির্যাতিতার পরিবারের। ময়নাতদন্ত ঘিরেও গড়িমসির অভিযোগ সামনে এসেছে। মৃত্যুর পর হাসপাতাল থেকে মহিলার দেহটি বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন তাঁর পরিবারের লোকজন। সোমবার দুপুর পর্যন্ত বাড়ির উঠোনে খাটিয়াতেই রাখা ছিল তাঁর দেহ। যে হলুদ চাদরে দেহটি ঢাকা ছিল, রক্তে ভিজে গিয়েছিল সেটিও।
আরও পড়ুন: রাজ্যে ৭ দফায় বিধানসভা ভোট, এপ্রিলে শুরুর কথা ভাবছে কমিশন
সেই অবস্থায় গ্রামের লোক ওই নির্যাতিতাকে দেখতে ভিড় করলেও পুলিশের টিকি দেখা যায়নি বলে অভিযোগ করে নির্যাতিতার পরিবার। বিষয়টি চাউর হতে বিকেলের দিকে বাড়ি থেকে দেহটি নিয়ে গিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় তারা। কর্তব্যে অবহেলার জন্য ইতিমধ্যেই উঘৈতি থানার এসএইচও-কে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
বদায়ূঁতে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর বৃহস্পতিবার জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য চন্দ্রমুখী দেবী মন্তব্য করেন, ‘‘সন্ধ্যাবেলা একা ওই মহিলা না বেরোলে এমন ঘটনা ঘটত না।’’ যাকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তুঙ্গে। চন্দ্রমুখী দেবী বৃহস্পতিবার বদায়ূঁ যান নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে। চন্দ্রমুখী আরও বলেছিলেন, ‘‘উনি যদি ওই সময় না বেরোতেন, তা হলে এমন ঘটনা ঘটত না। উনি চাপে ছিলেন। কিন্তু একজন মহিলার সব সময় বিবেচনা করে দেখা উচিত, কখন তিনি বেরোবেন। সন্ধ্যাবেলা উনি যদি না বেরোতেন কিংবা বেরোলেও পরিবারের কোনও সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে যেতেন, তা হলে হয়তো ওঁকে বাঁচানো যেত।’’
আরও পড়ুন: রাস্তার কাছেই জ্বলছেন মহিলা, টের পেলেন না কেউ
জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যের মুখে এই মন্তব্য শোনার পর বিতর্ক তৈরি হয় দেশ জুড়ে। যা সামলাতে তড়ঘড়ি ময়দানে নামতে হয় কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মাকে। তিনি টুইট করেন, ‘আমি জানি না কেন এবং কী ভাবে কমিশনের ওই সদস্য এমন মন্তব্য করলেন। একজন মেয়ের নিজের ইচ্ছামতো যেখানে খুশি, যখন খুশি যাওয়ার স্বাধীনতা রয়েছে। আমরা একটা সমাজে বাস করি। মেয়েদের নিরাপত্তা দেওয়া রাষ্ট্রের কাজ’।
তবে জাতীয় মহিলা কমিশনের রিপোর্টেও কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে যোগীরাজ্যের পুলিশকে। নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ দায়ের থেকে ময়নাতদন্ত—সর্বত্রই পুলিশি গাফিলতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। যার সঙ্গে অনেকেই মিল পাচ্ছেন হাথরস-কাণ্ডের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy